বরিশাল জেলা প্রতিনিধি :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, সরকার এবারও একতরফা, পাতানো নির্বাচন আয়োজন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এবারও এ ধরনের নির্বাচন আয়োজিত হলে আমরা কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে যাব না। আপনারাও যাবেন না।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালের চরমোনাই দরবার শরিফের শততম বার্ষিক মাহফিল উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম এ কথা বলেন। চরমোনাই দরবারে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক এই মাহফিল শুরু হয় বুধবার। আগামী শনিবার সকালে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই আয়োজন।
মুফতি রেজাউল করিম বলেন, আমরা আগেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনে যাবে না। ২০১৪, ২০১৮ সালে আমরা দেখেছি, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি, যা হয়েছে তামাশা ও ধোঁকাবাজির নির্বাচন। তাই এই নির্বাচনও দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হবে না। আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাতে চাই, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আপনারা কেউ ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। আমরাও যাব না, আপনারা কেউ যাবেন না।
রেজাউল করীম বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’ উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারাই অন্যদের ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলা নিয়ে সমালোচনা করছে। যা খুবই হাস্যকর। আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে সব সময়ই সোচ্চার ছিলাম।
এছাড়া অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানি, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ঢাকা মহানগর (উত্তর) সভাপতি হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সভাপতি মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলমসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা-মহানগর নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। অর্থনৈতিক সংকট প্রতিটি ঘরে ঘরে। আওয়ামী লীগের সীমাহীন ক্ষমতালিপ্সার কারণে দেশে আজ চরম সংকট। এই অবৈধ সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং প্রত্যেকটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের প্রথম কাজ হলো অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোর আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা।
নির্বাচন প্রশ্নে বক্তারা বলেন, ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনমুখী দল। আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতিও রাখতে হবে। যদি নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয় নির্বাচনে ঝাপিয়ে পরে হাতপাখাকে বিজয়ী করবো।
তিন দিনের মাহফিলে বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর মূল বয়ানের তৃতীয় বয়ান উত্থাপন করেন নায়েবে আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় মাহফিল স্টেজে সারাদেশ থেকে আসা ছাত্রদের নিয়ে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
চরমোনাই মাহফিল মিডিয়া কমিটির সদস্য এইচ এম সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, মাহফিলে অংশগ্রহণকারী মুসল্লীদের মধ্যে ফতুল্লা-নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা কারামত আলী (৭৫) বুধবার সন্ধ্যা ৭.৪৫ মিনিটে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন। মরহুমের নামাজে জানাজা শেষে মরদেহ স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।