বিনোদন ডেস্ক :
টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য মিমি চক্রবর্তী। অভিনয় ও সংসদ সদস্য হিসেবেও বেশ প্রশংসিত তিনি। এর মধ্যে সামাজিকমাধ্যমে প্রায়ই নিজের ক্যারিয়ারের বাইরে ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ের কথা শেয়ার করতে দেখা যায় এ অভিনেত্রীকে।
টালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে ঠোঁটকাটা স্বভাবের যে ক’জন অভিনয়শিল্পী আছেন তাদের মধ্যে তার নামটা প্রথম দিকেই। ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে কাজ দিয়ে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করলেও ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য জীবনে বহুবার সমস্যায় পড়েছেন এই অভিনেত্রী। ইদানীং নাকি সেই সমস্যা আরও বেড়ে গেছে। সত্যিটা বলার কারণে নাকি ইন্ডাস্ট্রিতে তার বন্ধুর সংখ্যাও এখন তলানিতে।
তিনি খুবই সাদামাটা জীবন কাটান, সেটি তার বক্তব্যে স্পষ্ট। কখনো কোনো মিথ্যার আশ্রয় নেন না। আর সত্য বলে বিভিন্ন সময় অনেক কিছু হারিয়েছেন। একই সঙ্গে অনেকের শত্রু হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মিমি।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি তো সত্যিটাই বলতে চাই সব সময়। সেই কারণে এত লোকের চক্ষুশূল হয়ে যাই যে, বেশির ভাগ সময়ে সেটাই বিপদ হয়ে যায়। আমায় তো লোকে বলে, তুই এবার একটু সত্যি কথা বলা বন্ধ কর। সবদিক বাঁচিয়ে বুঝে শুনে কথা বলতে শেখ। আর সেটাই আমি পারি না। ছোটবেলা থেকে আমাদের শেখানো হয় সত্যি বলতে। কিন্তু সব সময় বলা যায় না।
সত্যি কথা বলার কারণে অনেকবার বিপদে পড়েছেন মিমি। সেই সঙ্গে হারিয়েছেন বন্ধু। মিমির কথায়, আমি সত্যি কথা বলে জীবনে কত বন্ধু হারিয়েছি, তার কোনও হিসাব নেই। আসলে তারা সকলেই তেল মারায় অভ্যস্ত। তাই সত্যি বলায় তাদের শত্রু হয়ে গিয়েছিলাম।
মিমি বলেন, সত্যি কথা বললে যারা চলে যায়, তারা তো কখনোই বন্ধু ছিল না। যারা থেকে গেছে, তারা সারা জীবন থাকবে। অনেকেই মুখে বলবে, আমায় কিন্তু সব সত্যি বলবি। কিন্তু যেই বললাম, তখন তারা আর নিতে পারে না। তাদের আমার প্রয়োজন নেই। বন্ধুরা তো সাফল্যে খুশি হবে, বাহবা দেবে। যদি ঈর্ষা করে তাহলে আর কিসের বন্ধু! আমার জীবনে খুব কম মানুষ রয়েছে, যারা আমায় নিয়ে গর্বিত। কিন্তু এই বন্ধুরা আছে বলে আমিও খুব গর্বিত।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বরাবরই নিজের কাজ দিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি। নিজের ইচ্ছেতেই কম সিনেমায় কাজ করি। আর বাংলা ছবির টাকায় তো আমার সংসার চলে না। আমার তো ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো গডফাদার নেই যে খরচ চালাবে। আমাকে মা-বাবাকে দেখতে হয়, আমার পোষা প্রাণীদের দেখতে হয়, পাঁচটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালাতে হয়, নিজের খেয়াল রাখতে হয়। তাই পরিকল্পনা করেই কাজ করতে হয়।’
মিমি বলেন, ‘দুটি জিনিস আমার জন্য খুব জরুরি। এক, ভালো গল্প। দুই, টাকা। যদি গল্প ভালো হয় তাহলে টাকায় আপস করতে রাজি আছি, আর যদি গল্প খারাপ হয় আবার পারিশ্রমিকও কম হয়, তাহলে কেন সেই কাজ করব? এক্ষেত্রে আমি অনেক কাজে ‘না’ বলি। যেটা অনেকেই পছন্দ করেন না। আসলে স্পষ্টবাদীয় মেয়েদের অনেকের অপছন্দের পাত্রী হতে হয়। সবাই ধরে নেয়, একটা গল্পের প্রস্তাব এলেই সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যেতে হবে। আমি আবার সকলের সঙ্গে কাজ করতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। আমি শুধু তাদের সঙ্গেই কাজ করি, যারা আমার কাজ এবং শৃঙ্খলার মূল্য বোঝেন।
এদিকে কাজের ক্ষেত্রে সম্প্রতি ওটিটি কনটেন্টে নাম লিখিয়েছেন মিমি চক্রবর্তী। তার প্রথম ওয়েব সিরিজ ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ মুক্তি পাচ্ছে ৫ জানুয়ারি। এতে তিনি একজন আইনজীবীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সঙ্গে আছেন টোটা রায় চৌধুরী। চন্দ্রাশিস রায় নির্মিত সত্য ঘটনা অবলম্বনের সিরিজটি দেখা যাবে হইচই-তে।