Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার না আগে নির্বাচন প্রশ্নে কোনো চাপ নেই : আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার আগে না নির্বাচন এই প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কোনো চাপ অনুভব করছে না। কমিশন তার নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এর আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে মতামত জমা দেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কোনো চাপে নেই জানিয়ে আলী রিয়াজ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে স্মরণ করিয়ে দেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হলেন-প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সে ক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের ওপর চাপের প্রশ্নই আসে না। রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই তাদের অবস্থান বলবে। কিন্তু কমিশন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো তুলে ধরা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটা জায়গায় যেতে চাই। সুতরাং আমরা চাপে নেই।’

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা শেষে রাজনৈতিক কোনো চাপে রয়েছে কিনা কমিশন? জানতে চাইলে কমিশন সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূস। সুতরাং চাপের কোনো প্রশ্ন আসে না বা দেখতে পাই না। রাজনৈতিক দলগুলো বলবে, তাদের দায়িত্ব সুপারিশ তুলে ধরা। সেটার প্রক্রিয়াই চলছে। আমরা তাদের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটা জায়গায় যেতে চাই। সুতরাং আমরা চাপে নেই।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা জাতীয় সংস্কারে মতামত চেয়েছিলাম। আমরা এরইমধ্যে অধিকাংশ দলের কাছ থেকে মতামত পেতে শুরু করেছি, কিছু পেয়েছিও। তার ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। আগামী কয়েকদিন অর্থাৎ বেশ কয়েকদিন ছুটি আছে সামনে। তার আগেই আমরা অন্তত চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করবো। ছুটিতেও যোগাযোগ থাকবে। তবে ঈদের পর আলোচনা আবার শুরু হবে।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যেসব মতামত আসছে, বক্তব্য শুনেছি সেসব পর্যালোচনা করছি। আমরা আশা করছি যে, বিভিন্ন বিষয়ে আমরা একমতের বিষয়ে আসতে পারবো। যেসব মতামত আসছে ও জনসম্মুখে তারা যা বলেছে তাতে আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের ব্যাপারে কোনো ধরনের সংশয়-দ্বিধা নেই। রাজনৈতিক দলগুলো চায় যে, এখনকার যে পরিস্থিতি তা থেকে বেরিয়ে আসার পথ সংস্কার।

দ্বিতীয়ত, যে রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চায় তারা সহযোগিতা করেছে, করছে, অব্যাহত রেখেছে। আমরা মনে করি সংস্কারের ব্যাপারে আমরা অগ্রসর হবো। কতোটা সময় লাগবে তা নির্ভর করছে যে, আলোচনাটা কীভাবে অগ্রসর করছি। আমাদের লক্ষ্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সময়সীমা পনোরো জুলাই। আমরা এর মধ্যেই কাজ শেষ করতে চাই। আমরা আশা করছি এর আগে শেষ হবে। আমরা স্বচ্ছতা অবলম্বন করছি, জানবেন কীভাবে অগ্রসর হচ্ছি। তবে প্রতিদিন আমরা ব্রিফ করবো না। যখন একটা পরিস্থিতিতে যাবো তখন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা জানাবো। আপনাদের মাধ্যমে জাতি জানতে পারবে। রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সুচিন্তিত সুনামের সঙ্গে মতামতগুলো জানাচ্ছে, বলেন তিনি।

বিএনপির পক্ষ থেকে কি মতামত দেওয়া হয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এখনো মতামত দেয়নি বিএনপি। আগামী দু-একদিনের মধ্যে আশা করি বিএনপি মতামত দেবে। আর আগামী দুই বা তিন দিনের মধ্যে ছাত্রদের সংগঠন এনসিপির পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হচ্ছে না। তাদের মতামত পাওয়া গেলে ঈদের পর থেকে অন্যান্য দলের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলোচনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে আগামী দুই-তিন দিনে বৈঠক হচ্ছে না। তাদের মতামত পাওয়া গেলে ঈদের পর থেকে যেসব দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব, তার মধ্যে এনসিপিও থাকবে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

সংস্কার না আগে নির্বাচন প্রশ্নে কোনো চাপ নেই : আলী রীয়াজ

প্রকাশের সময় : ০১:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার আগে না নির্বাচন এই প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কোনো চাপ অনুভব করছে না। কমিশন তার নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এর আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে মতামত জমা দেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কোনো চাপে নেই জানিয়ে আলী রিয়াজ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে স্মরণ করিয়ে দেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হলেন-প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সে ক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের ওপর চাপের প্রশ্নই আসে না। রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই তাদের অবস্থান বলবে। কিন্তু কমিশন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো তুলে ধরা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটা জায়গায় যেতে চাই। সুতরাং আমরা চাপে নেই।’

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা শেষে রাজনৈতিক কোনো চাপে রয়েছে কিনা কমিশন? জানতে চাইলে কমিশন সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনূস। সুতরাং চাপের কোনো প্রশ্ন আসে না বা দেখতে পাই না। রাজনৈতিক দলগুলো বলবে, তাদের দায়িত্ব সুপারিশ তুলে ধরা। সেটার প্রক্রিয়াই চলছে। আমরা তাদের দেওয়া সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য একটা জায়গায় যেতে চাই। সুতরাং আমরা চাপে নেই।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমরা জাতীয় সংস্কারে মতামত চেয়েছিলাম। আমরা এরইমধ্যে অধিকাংশ দলের কাছ থেকে মতামত পেতে শুরু করেছি, কিছু পেয়েছিও। তার ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। আগামী কয়েকদিন অর্থাৎ বেশ কয়েকদিন ছুটি আছে সামনে। তার আগেই আমরা অন্তত চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করবো। ছুটিতেও যোগাযোগ থাকবে। তবে ঈদের পর আলোচনা আবার শুরু হবে।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যেসব মতামত আসছে, বক্তব্য শুনেছি সেসব পর্যালোচনা করছি। আমরা আশা করছি যে, বিভিন্ন বিষয়ে আমরা একমতের বিষয়ে আসতে পারবো। যেসব মতামত আসছে ও জনসম্মুখে তারা যা বলেছে তাতে আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের ব্যাপারে কোনো ধরনের সংশয়-দ্বিধা নেই। রাজনৈতিক দলগুলো চায় যে, এখনকার যে পরিস্থিতি তা থেকে বেরিয়ে আসার পথ সংস্কার।

দ্বিতীয়ত, যে রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চায় তারা সহযোগিতা করেছে, করছে, অব্যাহত রেখেছে। আমরা মনে করি সংস্কারের ব্যাপারে আমরা অগ্রসর হবো। কতোটা সময় লাগবে তা নির্ভর করছে যে, আলোচনাটা কীভাবে অগ্রসর করছি। আমাদের লক্ষ্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সময়সীমা পনোরো জুলাই। আমরা এর মধ্যেই কাজ শেষ করতে চাই। আমরা আশা করছি এর আগে শেষ হবে। আমরা স্বচ্ছতা অবলম্বন করছি, জানবেন কীভাবে অগ্রসর হচ্ছি। তবে প্রতিদিন আমরা ব্রিফ করবো না। যখন একটা পরিস্থিতিতে যাবো তখন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা জানাবো। আপনাদের মাধ্যমে জাতি জানতে পারবে। রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সুচিন্তিত সুনামের সঙ্গে মতামতগুলো জানাচ্ছে, বলেন তিনি।

বিএনপির পক্ষ থেকে কি মতামত দেওয়া হয়েছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এখনো মতামত দেয়নি বিএনপি। আগামী দু-একদিনের মধ্যে আশা করি বিএনপি মতামত দেবে। আর আগামী দুই বা তিন দিনের মধ্যে ছাত্রদের সংগঠন এনসিপির পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হচ্ছে না। তাদের মতামত পাওয়া গেলে ঈদের পর থেকে অন্যান্য দলের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলোচনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে আগামী দুই-তিন দিনে বৈঠক হচ্ছে না। তাদের মতামত পাওয়া গেলে ঈদের পর থেকে যেসব দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব, তার মধ্যে এনসিপিও থাকবে।’