Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

গ্রামীণ সড়কের মাঝে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কংক্রিটের ব্রিজ। দুই প্রান্তে ঝোপ জঙ্গল। কেবল সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজ নির্মাণের সুফল পাচ্ছে না গ্রামীণ সড়কে চলাচলকারী সাত গ্রামের কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ।

ব্রিজটির অবস্থান কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ও যাদুরচর ইউনিয়েনের মধ্যবর্তী কর্তীমারি বাজার থেকে দুবলাবাড়ি বাজার সড়কের পুরাতন যাদুরচর নামক এলাকায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপজেলার পুরাতন যাদুরচর এলাকার ময়নাল মেম্বরের বাড়ির পাশে ভেঙে যাওয়া সড়কে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজ নির্মাণে সরকারের ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা ব্যয় হয়।

৯ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক। এতে দুর্ভোগে রয়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারী হাজারও মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি এ অবস্থায় পড়ে থাকায় কার্যত বিফলে যাচ্ছে সরকারি কোষাগারের মোটা অঙ্কের টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে ব্রিজের দুই পাশে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় মানুষ এর সুফল পাচ্ছে না। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে উপজেলার দুবলাবাড়ি, পুরাতন যাদুরচর, ঝাউবাড়ি,বকবান্ধা, খেওয়ারচর, কাশিয়াবাড়ি ও বাওয়াইরগ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মূল সড়ক থেকে ব্রিজটি প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে। সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ব্রিজের দুই পাশে ঝোপ জঙ্গলে ভরা। তার মাঝ দিয়ে পথিকের হাঁটার ছাপে সরু পথ তৈরি হয়েছে।

দুবলাবাড়ি বাজার এলাকার বাসিন্দা সহিদ মাসউদ আহমেদ, কৃষক জয়েন উদ্দিন, রুহুল আমিনসহ ওই সড়কে চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুবলাবাড়ি বাজার থেকে কর্তিমারী বাজারে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। ব্রিজে সংযোগ সড়ক না থাকায় যানবাহন নিয়ে চলাচল করা যায় না। প্রতিদিন পায়ে হেঁটে তিন কিলোমিটার পথ যাতায়াত করতে হয়। এর কোনও বিকল্প নেই। ব্রিজটিতে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সড়কটি পাকা করার দাবি জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, আগে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার হাজারও মানুষ সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান নিয়ে চলাচল করতো। ব্রিজ নির্মাণের পর এর দুই পাশে মাটি দিয়ে ভরাট না করায় ওই সময় থেকে রাস্তাটি যানাবহন নিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। দুর্ভোগ কমাতে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো হয়েছে।

রৌমারী উপজেলা পিআইও সামসুদ্দিন বলেন, কাজটি আমার সময়ের নয়। সেতুটি যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় তাহলে আমরা সেটি যানচলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, সংযোগ সড়ক নেই বিষয়টা এমন নয়। বৃষ্টির কারণে মাটি সরে গেছে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি এটি ঠিক করে দেবো।

তবে পূর্বে সংযোগ সড়ক থাকা নিয়ে ইউএনও’র দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সড়কে চলাচলকারী গ্রামবাসী। তাদের দাবি ব্রিজ নির্মাণের পর থেকে কোনও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

প্রকাশের সময় : ০৪:২৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : 

গ্রামীণ সড়কের মাঝে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কংক্রিটের ব্রিজ। দুই প্রান্তে ঝোপ জঙ্গল। কেবল সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজ নির্মাণের সুফল পাচ্ছে না গ্রামীণ সড়কে চলাচলকারী সাত গ্রামের কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ।

ব্রিজটির অবস্থান কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ও যাদুরচর ইউনিয়েনের মধ্যবর্তী কর্তীমারি বাজার থেকে দুবলাবাড়ি বাজার সড়কের পুরাতন যাদুরচর নামক এলাকায়।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপজেলার পুরাতন যাদুরচর এলাকার ময়নাল মেম্বরের বাড়ির পাশে ভেঙে যাওয়া সড়কে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজ নির্মাণে সরকারের ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা ব্যয় হয়।

৯ বছর আগে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক। এতে দুর্ভোগে রয়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারী হাজারও মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি এ অবস্থায় পড়ে থাকায় কার্যত বিফলে যাচ্ছে সরকারি কোষাগারের মোটা অঙ্কের টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে ব্রিজের দুই পাশে মাটি ভরাট করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় মানুষ এর সুফল পাচ্ছে না। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে উপজেলার দুবলাবাড়ি, পুরাতন যাদুরচর, ঝাউবাড়ি,বকবান্ধা, খেওয়ারচর, কাশিয়াবাড়ি ও বাওয়াইরগ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মূল সড়ক থেকে ব্রিজটি প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে। সংযোগ সড়ক না থাকায় কোনও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ব্রিজের দুই পাশে ঝোপ জঙ্গলে ভরা। তার মাঝ দিয়ে পথিকের হাঁটার ছাপে সরু পথ তৈরি হয়েছে।

দুবলাবাড়ি বাজার এলাকার বাসিন্দা সহিদ মাসউদ আহমেদ, কৃষক জয়েন উদ্দিন, রুহুল আমিনসহ ওই সড়কে চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুবলাবাড়ি বাজার থেকে কর্তিমারী বাজারে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। ব্রিজে সংযোগ সড়ক না থাকায় যানবাহন নিয়ে চলাচল করা যায় না। প্রতিদিন পায়ে হেঁটে তিন কিলোমিটার পথ যাতায়াত করতে হয়। এর কোনও বিকল্প নেই। ব্রিজটিতে দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সড়কটি পাকা করার দাবি জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, আগে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার হাজারও মানুষ সাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান নিয়ে চলাচল করতো। ব্রিজ নির্মাণের পর এর দুই পাশে মাটি দিয়ে ভরাট না করায় ওই সময় থেকে রাস্তাটি যানাবহন নিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। দুর্ভোগ কমাতে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো হয়েছে।

রৌমারী উপজেলা পিআইও সামসুদ্দিন বলেন, কাজটি আমার সময়ের নয়। সেতুটি যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় তাহলে আমরা সেটি যানচলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, সংযোগ সড়ক নেই বিষয়টা এমন নয়। বৃষ্টির কারণে মাটি সরে গেছে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি এটি ঠিক করে দেবো।

তবে পূর্বে সংযোগ সড়ক থাকা নিয়ে ইউএনও’র দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি ওই সড়কে চলাচলকারী গ্রামবাসী। তাদের দাবি ব্রিজ নির্মাণের পর থেকে কোনও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।