আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী আয়োজিত জনাকীর্ণ মোটরস্পোর্ট আয়োজনে রবিবার একটি রেসের গাড়ি দর্শকদের আঘাত করে। এতে কমপক্ষে সাতজন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছে।
রোববার (২১ এপ্রিল) দিয়াতালাওয়া শহরে ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানায় বিবিসি। সেখানে ‘দ্য ফক্স হিল সুপারক্রস রেস’ চলছিল।
নিহতদের মধ্য চারজন রেস কর্মকর্তা এবং বাকি তিনজন দর্শক।। একটি আট বছরের বালিকাও নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী।
গাড়িটির চালক সম্পর্ক সামান্য তথ্যই দেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা কেমন আছে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হবে কিনা সেটাও জানানো হয়নি।
দিয়াতালাওয়াতে যে ট্র্যাকে রেস হচ্ছিল সেটা সেনবাহিনীর। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ট্র্যাক মার্শালরা একটি গাড়ি উল্টে যাওয়ার পর অন্য গাড়িগুলোর গতি কমানোর জন্য হলুদ পতাকা নাড়ছেন। এর আগে চালকদের ধুলোর মধ্যে দ্রুতগতিতে চলতে দেখা যায়, যতক্ষণ না একটি লাল গাড়ি ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর লোকজনের চিৎকার শোনা যায়।
পুলিশের মুখপাত্র নিহাল টালডুওয়া বিবিসিকে বলেন, ওই গাড়িটি লাফিয়ে রানিং লেন থেকে বের হয়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্র্যাকে অন্য একটি গাড়ি উল্টে যাওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ওই গাড়িটি ছিটকে ট্র্যাক থেকে বের হয়ে দর্শকদের দিকে ছুটে যায়। সে সময় রেস কর্মকর্তারা গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করেছিলেন।
কর্মকর্তারা জানান, ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা যান। বাকি দুইজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। আহত কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
ট্র্যাকের পাশে কেনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল না তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহু মানুষ প্রশ্ন তুলেছে।
অন্যদিকে দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগে দেশটির সেনাপ্রধান ভিকুম লিয়ানাগে ঘোষণা করেছিলেন, মোটরস্পোর্টের প্রচারের জন্য বিনা মূল্যে এটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। করোনা মহামারি এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
লিয়ানাগে বলেন, আজ একটি খুব বিশেষ দিন…আমরা যে কাউকে বিনা মূল্যে আসার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কলম্বো থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিতে ফক্স হিল ট্র্যাকে এদিন প্রায় এক লাখ দর্শক ছিল।
১৯৯৩ সাল থেকে শ্রীলঙ্কা অটোমোবাইল স্পর্টস অ্যাসোসিয়েশন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে যাচ্ছে। কিন্তু করোনা মহামারী এবং তার পরবর্তী সময়ে দেশে চরম অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ায় গত পাঁচ বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়নি।
এবারের আয়োজনে দর্শকদের বিনামূল্যে মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। প্রায় এক লাখ দর্শক সেদিন উপস্থিত ছিলেন।