নিজস্ব প্রতিবেদক :
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন শ্রম আদালত।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও অ্যাডভোকেট এসএম মিজানুর রহমান।
অন্যদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বরত চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।
শুনানিতে আসামিদের খালাসের আর্জি জানিয়েছেন ইউনূসের আইনজীবী। অন্যদিকে ড. ইউনূসসহ বাকি আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আর্জি জানিয়েছেন কলকারখানা অধিদপ্তরের আইনজীবী।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে আসামিদের বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন কলকারখানা অধিদপ্তরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও হায়দার আলী।
এর আগে বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার আইনজীবীসহ আদালতে হাজির হন। ১১টা ৩৩ মিনিটে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। দুই দফায় বিরতি দিয়ে মাগরিবের পরও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলে।
গত ২১ ডিসেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে মামলার আইনগত বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।
ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলার আইনগত বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। এদিন যুক্তি উপস্থাপন অসমাপ্ত অবস্থায় পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
এদিন যুক্তি উপস্থপনের শুনানির বিষয়ে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ মামলার সাক্ষীদের বর্ণনায় ড. ইউনূসসহ অন্যরা সংশ্লিষ্ট আছেন এমন কোনো বর্ণনা নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ডকুমেন্ট নেই। তিনি আরও বলেন, মামলার আর্জিতে কোথাও আসামিরা অপরাধী এমন কোনো অভিযোগ উল্লেখ নেই।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানি আইন অনুযায়ী অপরাধ কোম্পানির হবে। কিন্তু এখানে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ কারণে এ মামলা চলতে পারে না।
গত ৬ ডিসেম্বর এ মামলায় গতকাল পর্যন্ত (২৩ ডিসেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শ্রম আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। ওইদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সপ্তম বারের মতো শ্রম আদালতে হাজির হন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে বিবাদী করা হয়েছে।