Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানদের হারিয়ে সিরিজ পাকিস্তানের

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩
  • ২০৬ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন শতাধিক রানের টার্গেট তাড়ায় লড়াই করে জয় পেল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে এক বল হাতে রেখে এক উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডেতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে বাবর আজমরা।

গত বছরের এশিয়া কাপ। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ১১ রান। ফজল হক ফারুকির দুই বলে দুই ছয় মেরে পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়েছিলেন নাসিম শাহ। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুই দলের ওয়ানডে ম্যাচেও সমীকরণ ছিল ৬ বলে ১১। এবারেও ফারুকির ওভারে সেই নাসিমই এনে দিয়েছেন জয়। এক উইকেটের এই জয়ে সিরিজটাও নিশ্চিত করেছে বাবর আজমের দল।

শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে ব্যাটে রান আসেনি কারোরই। আফগানিস্তান তো আউট হয়েছে মাত্র ৫৯ রানেই। এদিন অবশ্য হাই স্কোরিং ম্যাচই দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। আফগানিস্তান করেছে বরাবর ৩০০ রান। ক্রিকেটের বর্তমানে এই স্কোর মানসিকভাবে এগিয়ে রাখে যেকোন দলকেই। আফগানদেরও রেখেছিল। কিন্তু নাসিম শাহর সেই শেষ ওভারের ব্যাটিংটাই কাল হয়ে গেল তাদের জন্য।

আগের দিন যাচ্ছেতাই ব্যাটিং পারফর্মের পর এদিন আফগান ওপেনাররা করেছেন মন্থর শুরু। ওভারপ্রতি ৫ এর নিচে রান করেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। দুজনের ইনিংস এতই মন্থর, প্রথম ১০ ওভারে এসেছে মোটে ৪৮ রান। আর ২১ ওভারে করেছেন ৯১। এরপরেই যেন ঘুম ভাঙলো তাদের।

গুরবাজ আর ইব্রাহিম খেললেন চিরচেনা মারকুটে ইনিংস। শ্রীলঙ্কার মাঠে বা টিভিপর্দায় দর্শকদের মোহিত করে রেখেছেন। দুজন খেলেছেন আরও ২০ ওভার। এইসময় রান এসেছে ওভারপ্রতি ৭ এর কাছাকাছি। ৩৯.৫ ওভারে যখন ইব্রাহিম আউট হয়েছেন তখন দলীয় স্কোর ২২৭। ব্যক্তিগত স্কোর ৮০। খেলেছেন ১০১ বল।

তবে অন্যপাশে গুরবাজ তখনও টিকে ছিলেন। মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে করেছেন ২৯ রানের জুটি। দলীয় ২৫৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ততক্ষণে তার নিজের স্কোর ১৫১। আফগানিস্তানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর এটি। প্রথমটাও অবশ্য তারই করা (১৬২)।

ইব্রাহিম ও গুরবাজের পর আর কেউ খুব বড় কোনো ইনিংস খেলতে না পারলেও ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০০ রানের সাইকোলজিক্যাল মার্কে পৌঁছে যায় আফগানরা। ওয়ানডেতে এ নিয়ে সপ্তমবার ৩০০ বা তার বেশি রানের স্কোর গড়ল দেশটি।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান পেয়েছে ভালো শুরু। ইমাম-উল-হক খেলেছেন স্ট্রাইক রোটেট করে, অন্যপ্রান্তে ফখর জামান ছিলেন আগ্রাসী। দুজন মিলে পাওয়ারপ্লে প্রায় শেষই করেছিলেন। নবম ওভারে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন ৫২ রানের জুটি গড়ে। ৩৪ বলে ৩০ করে আউট হন ফখর।

এরপর আফগান বোলারদের শাসন করেছেন বাবর আজম আর ইমাম। দুজনের ব্যাট থেকে এসেছে ১১৮ রানের জুটি। দুজনেই পঞ্চাশের কোটা পেরিয়েছেন। বাবর অবশ্য ফিরেছেন ফিফটির পরেই। ৬৬ বলে ৫৩ রানের কার্যকরী ইনিংস থেমেছে ফারুকির বলে।

ম্যাচের পরের দৃশ্যে শুধুই আফগান বোলাররা। ৪১ রানের মাথায় আউট হয়েছেন ৫ জন ব্যাটার। পাকিস্তানের কাছে জয় তখন দূরের বাতিঘর। ম্যান ইন গ্রিনরা এরপর ম্যাচে ফিরেছে অলরাউন্ডার শাদাব খানের কল্যাণে। তার ৩৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংসটা দলকে নিয়ে যায় শেষ ওভার পর্যন্ত।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ১১ রান। ফাজল হক ফারুকী শুরুতেই রান আউট করে দেন শাদাবকে। বল ছাড়ার আগেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান নন স্ট্রাইকে থাকা শাদাব খান। সেট ব্যাটারকে ফিরতে হয় সাজঘরে। উইকেটে এসে প্রথম বলে চার মারেন নাসিম। পরের দুই বল থেকে নিতে পারেন ১ রান। ৩ বলে দরকার তখন ছয় রানের। চতুর্থ বলে আফগান ফিল্ডারের তালগোল পাকানো ফিল্ডিংয়ে হারিস রউফের ব্যাট থেকে আসে ৩ রান। পঞ্চম বল ঠিকমতো ব্যাটে না লাগলেও থার্ডম্যান দিয়ে হয়ে যায় চার। ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। আফগানিস্তানের হয়ে এই ম্যাচে পেসার ফারুকি তিন উইকেট নিয়েছেন। মোহাম্মদ নবী নিয়েছেন দুই উইকেট।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে আফগানদের হারিয়ে সিরিজ পাকিস্তানের

প্রকাশের সময় : ১১:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন শতাধিক রানের টার্গেট তাড়ায় লড়াই করে জয় পেল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে এক বল হাতে রেখে এক উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডেতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে বাবর আজমরা।

গত বছরের এশিয়া কাপ। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ১১ রান। ফজল হক ফারুকির দুই বলে দুই ছয় মেরে পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়েছিলেন নাসিম শাহ। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুই দলের ওয়ানডে ম্যাচেও সমীকরণ ছিল ৬ বলে ১১। এবারেও ফারুকির ওভারে সেই নাসিমই এনে দিয়েছেন জয়। এক উইকেটের এই জয়ে সিরিজটাও নিশ্চিত করেছে বাবর আজমের দল।

শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে ব্যাটে রান আসেনি কারোরই। আফগানিস্তান তো আউট হয়েছে মাত্র ৫৯ রানেই। এদিন অবশ্য হাই স্কোরিং ম্যাচই দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। আফগানিস্তান করেছে বরাবর ৩০০ রান। ক্রিকেটের বর্তমানে এই স্কোর মানসিকভাবে এগিয়ে রাখে যেকোন দলকেই। আফগানদেরও রেখেছিল। কিন্তু নাসিম শাহর সেই শেষ ওভারের ব্যাটিংটাই কাল হয়ে গেল তাদের জন্য।

আগের দিন যাচ্ছেতাই ব্যাটিং পারফর্মের পর এদিন আফগান ওপেনাররা করেছেন মন্থর শুরু। ওভারপ্রতি ৫ এর নিচে রান করেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। দুজনের ইনিংস এতই মন্থর, প্রথম ১০ ওভারে এসেছে মোটে ৪৮ রান। আর ২১ ওভারে করেছেন ৯১। এরপরেই যেন ঘুম ভাঙলো তাদের।

গুরবাজ আর ইব্রাহিম খেললেন চিরচেনা মারকুটে ইনিংস। শ্রীলঙ্কার মাঠে বা টিভিপর্দায় দর্শকদের মোহিত করে রেখেছেন। দুজন খেলেছেন আরও ২০ ওভার। এইসময় রান এসেছে ওভারপ্রতি ৭ এর কাছাকাছি। ৩৯.৫ ওভারে যখন ইব্রাহিম আউট হয়েছেন তখন দলীয় স্কোর ২২৭। ব্যক্তিগত স্কোর ৮০। খেলেছেন ১০১ বল।

তবে অন্যপাশে গুরবাজ তখনও টিকে ছিলেন। মোহাম্মদ নবীর সঙ্গে করেছেন ২৯ রানের জুটি। দলীয় ২৫৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ততক্ষণে তার নিজের স্কোর ১৫১। আফগানিস্তানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর এটি। প্রথমটাও অবশ্য তারই করা (১৬২)।

ইব্রাহিম ও গুরবাজের পর আর কেউ খুব বড় কোনো ইনিংস খেলতে না পারলেও ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০০ রানের সাইকোলজিক্যাল মার্কে পৌঁছে যায় আফগানরা। ওয়ানডেতে এ নিয়ে সপ্তমবার ৩০০ বা তার বেশি রানের স্কোর গড়ল দেশটি।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান পেয়েছে ভালো শুরু। ইমাম-উল-হক খেলেছেন স্ট্রাইক রোটেট করে, অন্যপ্রান্তে ফখর জামান ছিলেন আগ্রাসী। দুজন মিলে পাওয়ারপ্লে প্রায় শেষই করেছিলেন। নবম ওভারে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন ৫২ রানের জুটি গড়ে। ৩৪ বলে ৩০ করে আউট হন ফখর।

এরপর আফগান বোলারদের শাসন করেছেন বাবর আজম আর ইমাম। দুজনের ব্যাট থেকে এসেছে ১১৮ রানের জুটি। দুজনেই পঞ্চাশের কোটা পেরিয়েছেন। বাবর অবশ্য ফিরেছেন ফিফটির পরেই। ৬৬ বলে ৫৩ রানের কার্যকরী ইনিংস থেমেছে ফারুকির বলে।

ম্যাচের পরের দৃশ্যে শুধুই আফগান বোলাররা। ৪১ রানের মাথায় আউট হয়েছেন ৫ জন ব্যাটার। পাকিস্তানের কাছে জয় তখন দূরের বাতিঘর। ম্যান ইন গ্রিনরা এরপর ম্যাচে ফিরেছে অলরাউন্ডার শাদাব খানের কল্যাণে। তার ৩৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংসটা দলকে নিয়ে যায় শেষ ওভার পর্যন্ত।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ১১ রান। ফাজল হক ফারুকী শুরুতেই রান আউট করে দেন শাদাবকে। বল ছাড়ার আগেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান নন স্ট্রাইকে থাকা শাদাব খান। সেট ব্যাটারকে ফিরতে হয় সাজঘরে। উইকেটে এসে প্রথম বলে চার মারেন নাসিম। পরের দুই বল থেকে নিতে পারেন ১ রান। ৩ বলে দরকার তখন ছয় রানের। চতুর্থ বলে আফগান ফিল্ডারের তালগোল পাকানো ফিল্ডিংয়ে হারিস রউফের ব্যাট থেকে আসে ৩ রান। পঞ্চম বল ঠিকমতো ব্যাটে না লাগলেও থার্ডম্যান দিয়ে হয়ে যায় চার। ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। আফগানিস্তানের হয়ে এই ম্যাচে পেসার ফারুকি তিন উইকেট নিয়েছেন। মোহাম্মদ নবী নিয়েছেন দুই উইকেট।