নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না। পার্লামেন্ট ভাঙবে না। তত্ত্বাবধায়কও হবে না।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর রমনায় আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার আগে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বিএনপি মার্কা তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না। বিএনপি মার্কা নির্বাচনকালীন সরকার আমরা মানি না। সংবিধানে যা আছে, সে অনুযায়ী সব করবো। এর বাইরে আমরা একচুলও নড়বো না। মারামারি হুমকিতেও কাজ হবে না। আওয়ামী লীগ কারো কাছে মাথানত করবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল কি বলেছে? পদযাত্রা জয়যাত্রা, বিজয়যাত্রা। তাদের এ পদযাত্রা পরাজয়ের যাত্রা, তাদের পতনযাত্রা শুরু হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিনিধি দলের কাছে বিএনপি কি পেয়েছে এমন প্রশ্নের রেখে কাদের বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আপনাদের (বিএনপি) কি দিয়ে গেছে? তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে গেছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ দিয়ে গেছে? তাদের কাছে দাবি করেছেন, কি দিয়ে গেছে? কি পেয়েছেন? হাঁসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম পেয়েছেন। তারপরে আমেরিকার প্রতিনিধি দল এসেছে তাদের দিবে। কি দিবে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। দিয়ে গেছে ঘোরার ডিম। সংসদ বিলুপ্তি হবে না, শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই উঠে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবেন।

যতই লাফালাফি করেন কোনো লাভ হবে না জানিয়ে বিএনপিকে কাদের বলেন, যতই লাফালাফি করেন কোনো লাভ হবে না। আমরা আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি, আমরা নির্বাচনের আগে ও পরে শান্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না, চায় বিএনপি।

তিনি বলেন, বিএনপি মনে করছে ২০০১ আর ২০০৬ সালের মত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, তাদেরকে দলীয় সরকার তাদের ক্ষমতায় দিয়ে যাবে। তাদের আশা ঘুরেবালি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা বিলুপ্ত করিনি, উচ্চ আদালত বাতিল করেছে। তারা আদালত মানে না, তারা আইন মানে না। নিজেদের মত হলে সব মানে। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা মানি না। আমাদের কথা একটাই বাংলাদেশের সংবিধানে যা লেখা আছে, আমরা সেটাই করবো। নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুসরণ করবে, বাস্তবায়ন করবে। এর বাইরে যত কিছুই করুক এক চুলও নড়বো না।

বিএনপি সকল শয়তানের দলের আসল ঠিকানা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের শয়তানের দল বিএনপি। বাংলাদেশের আরও ৩৬টা শয়তানের দলের মিল হয়েছে। যতই মারামারির চেষ্টা করেন কোন লাভ হবে না। এই দেশে আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। আমরা কারো কাছে মাথানত করবো না। তারা না কি রাষ্ট্র মেরামতে নেমেছে। মেরামত তো শেখ হাসিনা করেছেন। আপনার তো চুরি করেছেন, খাম্বা দিয়েছেন। আর শেখ হাসিনা দিয়েছেন শতভাগ বিদ্যুৎ।

বিএনপিকে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের কথার কোন ঠিক নাই, একবার বলে এক দফা আবার বলে ৩২ দফা। মেরামত আপনাদের করতে হবে না। বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছেন। মেরামত করেছেন খাম্বা। আপনাদের দেখানোর মত কি আছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গায়ে পড়ে কারো সঙ্গে গোলমাল করবেন না, আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। আমরা বিজয়ী হবো, পরিবেশ শান্ত রাখতে হবে। আশপাশ দিয়ে কে গেলো দেখার দরকার নেই, তারা গায়ে পড়ে ঝগড়া করবে সতর্ক থাকতে হবে। কাউকে কিছু বলবেন না। কেউ কিছু করলে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী দেখবে। আমাদের উপর আক্রমণ করলে পরিস্থিতি বলে দেবে কি করবো। নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। দেশের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ অনুরোধ করছি।

এসময় অন্যান্য দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপির ওপর ভর করে লাভ নেই। তারা ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। বিএনপি ভুয়া। ওদের জোট ভুয়া। তাদের পরাজয় অনিবার্য। তাদের পদযাত্রা বিফলে যাবে।

ঢাকা জেলা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন বক্তব্য দেন।