আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আমার বিশ্বাস- শেখ হাসিনার পতন না দেখিয়ে ভগবান আমাকে চিতায় তুলবেন না। এই বিশ্বাস নিয়েই আমার পথ চলছে- বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করে দলটি। ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে জেলা ও মহানগের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর ধোলাইখালে অবস্থান কর্মসূচি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সেদিন আমি রাজপথে ছিলাম। আমাকে ছেড়ে কোনো নেতাকর্মী যায়নি। তারা যদি আমাকে ছেড়ে যেত হয়ত আমার লাশ পোস্তগোলা শ্মশানে থাকত। বিধাতার অশেষ কৃপায় সেদিন আমার তেমন কিছু হয়নি। তাই বিধাতার কাছে প্রার্থনা, শেখ হাসিনার পতন না দেখিয়ে ভগবান আমাকে চিতায় তুলবেন না। এই বিশ্বাস নিয়ে পথ চলছি। জনগণ শেখ হাসিনাকে আর সময় দিতে চায় না।
দুর্নীতির মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দেওয়ার বিষয়টি মশকরা হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত পরশু দিন আদালত বিচারের নামে মশকরা করেছে। বিচার বিভাগ এখন অবিচারের কারখানা। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে বিচার পাওয়া ‘আষাঢ়ে গল্প’।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার দলীয় বাহিনী দিয়ে জনগণের দাবিকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা যুবসমাজকে ধ্বংস করে, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ক্ষমতায় থাকবে, আর আমরা বসে দেখব তা হবে না। আমরা রাজপথে থাকব, নেতৃত্ব দেব, আর আপনারাও রাজপথে থাকবেন। তাহলে এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে।
এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সাহসে আমরা এই বয়সে সাহসী। আপনারা রাস্তায় থাকবেন, আমরা আপনাদের নেতৃত্ব দেব।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে নাকি ১ লাখ মানুষ মারা যাবে। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে ১৮ কোটি মানুষ মারা যাবে। ১৮ কোটি মানুষ বাঁচবে, নাকি দুর্নীতি-লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা, যুব সমাজকে ধ্বংস করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের মালিক থাকবে, আর আমরা প্রজার মতো বাস করবো? এজন্য তো মুক্তিযুদ্ধ করেনি। করিনি। যুদ্ধ ৭১ সালে শুরু হয়েছে, যুদ্ধ চলমান যতক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র না ফিরবে। এবার যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিরোধিতা করবে তাদের ক্ষমা করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, তারেক রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার জন্য ডাক দেননি। তিনি গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ঢাক দিয়েছেন। গণতন্ত্র না থাকলে বিচারপতিরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। যৌথ সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত হন।