নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না, ভারতপ্রেম ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষুসেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারতপ্রেম। ঐ একটাই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারণ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সুতরাং তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এইটা জনগণ জানতেন এবং বুঝতেন।
নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব তিনি পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করেছিলেন জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন, সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুক। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাচ্ছি।
রিজভী বলেন, কয়েক দিন আগে তারা (আওয়ামী লীগ) ঘোষণা দিয়েছিল নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর নাকি উথালপাতাল করে দেবেন। কিন্তু ওই দিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছেন, তবে ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেননি। তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ?
তিনি বলেন, কারণ শেখ হাসিনা তাদের লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের বলেছিলেন, তোরা যত পারস লুটপাট কর, কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না। বের হলেই হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। সঙ্গি-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন তিনি।
রিজভী বলেন, আদানি বলে ভারতের একটা কোম্পানি, তার সঙ্গে বিদ্যুতের চুক্তি করেছে, অত্যন্ত অসম চুক্তি, অত্যন্ত অন্যায় চুক্তি, এক ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার কম, কিন্তু আদানির কাছ থেকে যেটা কেনা হয় সেটা এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা। পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। তিনি আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে, যদি কখনও পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে কোনও চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে?
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত প্রেম। ওই একটাই প্রেম ছিল তার। তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনাদের তো সব গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র ও সংগঠন সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই স্বাস্থ্য বিভাগে যারা দীর্ঘদিন অন্যায় করেছেন তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। স্বাচিপ নামে একটি সংগঠন আছে, এখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই স্বাচিপের চিকিৎসকদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করছে। এগুলো না দেখলে অন্তর্বর্তী সরকারকেও বিপদে পড়তে হবে। ওই দানবেরা কোনো ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়লে তা কারও জন্য শুভ হবে না।
রিজভী আরও বলেন, মার্কেটগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের হাতে। বর্তমান সরকার কি তাদের একজনকেও ধরেছেন? একজনকেও গ্রেফতার করেছেন? অথচ শুল্ক কমানোর পরও পেঁয়াজ, আলু, চিনি, আটা ও সয়াবিন তেলের দাম কমে না। কারণ, বাজার সিন্ডিকেট যাদের হাতে তাদের কাউকে সরকার গ্রেফতার করতে পারেনি। এ বিষয়গুলো না দেখলে ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝেমধ্যেই ভুত-পেত্নীর মতো আওয়াজ দেবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, বিএনপির সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক, সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক 
























