নিজস্ব প্রতিবেদক :
৪৮ বছরের মধ্যে দেশে শেখ হাসিনার মতো জনপ্রিয় নেতা সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির উত্তরাধিকারী। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর গত ৪৮ বছরে তার মতো জনপ্রিয় নেতা সৃষ্টি হয়নি।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা নির্বাচন করি পাঁচ বছর পরে এক মাস। শেখ হাসিনা নির্বাচন করেন প্রতিদিন। তিনি যখন কোনো অঞ্চলে যান, সেখান থেকে এক দুজনের নাম লিখে রাখেন। যখন জাতীয় সংসদ বা সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন হচ্ছে, তখন ওই ডাইরি থেকে নামগুলো এনে ঠিক করে নেন। ১৫ বছরে আগের এবং ১৫ বছরে পরের বাংলাদেশ ছবির রূপান্তরের রূপকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সাহসী রাজনৈতিকের নাম শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের রূপান্তরের রূপকার। যিনি মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে বারবার বাংলার জয়গান গেয়েছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক কিছু ভাবছেন, অমুকরা এখন কোত্থেকে আসছে, কে আবার জুড়ে আসছে। উড়ে এসে জুড়ে বসা লোক আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হবে না।
তিনি বলেন, সিম্পল লিভিং, হাই থিংকিং, শেখ হাসিনার মূল মন্ত্র। আমরা এমন নেত্রী পেয়েছি যিনি সততার জন্য সারা বিশ্বে সমাদৃত। বিশ্বের সবচেয়ে সৎ নেতৃত্বের প্রথম সারিতেই আমাদের নেত্রীর নাম রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, হয়তো ৫ বছর পর নির্বাচন… তিনি হয়তো বাংলাদেশের কোনও প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তখনই হয়তো একটা-দুইটা নাম লিখে রেখেছেন। যখন জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে অথবা সংরক্ষিত আসনে প্রার্থিতা দেওয়া হচ্ছে তখনই ওই ডায়েরি থেকে খুঁজে খুঁজে নাম বের করে প্রার্থিতা ঠিক করে নেন, এই হচ্ছেন শেখ হাসিনা।
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের চিত্র বদলে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশের যে ছবি, সেই রূপান্তরের রূপকার বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। সৃষ্টিকর্তা দুজন মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। একজন আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এবং স্বাধীনতা দিয়ে তিনি যে লিগ্যাসি, যে উত্তরাধিকার রেখে গেছেন; তিনি (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) আজ নেই কিন্তু সেই লিগেসি সবসময়ের জন্য রয়ে গেছে। সৃষ্টিকর্তা আরেকজন মানুষকে সৃষ্টি করেছেন…. একজনকে স্বাধীনতার জন্য, তিনি বঙ্গবন্ধু। আরেকজনকে মুক্তির জন্য, তিনি শেখ হাসিনা।’
সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫৫০ জন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে দিতে হবে মাত্র ৪৮ জন। এটা নেত্রীর ওপর ছেড়ে দিন। নেত্রী কোন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের নাম কোন জেলায় গিয়ে লিখে রেখেছেন, তিনিই হয়তো স্থান পাবে এই ৪৮ জনের মধ্যে। আমাদের নেত্রী এই মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে দলের ত্যাগী, সংগ্রামী, রাজপথের পরিশ্রমী কর্মীদেই বেছে নেবেন, তাদের মূল্যায়ন করা হবে। কারণ দল আগে।
সব ধরনের দ্বন্দ্ব-কলহ ভুলে নতুন করে একাট্টা হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সবাই কাজ করবেন। যে কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব ভুলে যেতে হবে। এই বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য শত্রুরা কিন্তু তৎপর। শত্রুদের হাতে হাতিয়ার তুলে দেবেন না আমাদের ক্ষতি করার জন্য। আর আওয়ামী লীগ নিজেরাই যদি নিজেদের শত্রু হয় বাইরের শত্রুর কোনো দরকার নেই।
এতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা।