নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমারা দেখতে পাচ্ছি পার্শ্ববর্তী দেশে বসে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা শেখ হাসিনা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। আজকে বাংলাদেশে উসকানিমূলক একটি পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছিল জনগণ তা রুখে দিয়েছে। পরাজিত শক্তি দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে তা এ দেশের জনগণ রুখে দেবে। বাংলাদেশের জনগণ যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে তা তারাই রক্ষা করবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে ছাত্র আন্দোলনে নিহত নারায়ণগঞ্জে মো. আমানতের জানাজায় অংশগ্রহণ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে সেটি রক্ষার দায়িত্ব তারাই নেবে। আমরা আমানত ভাইয়ের মতো শহীদদের জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের দায়িত্ব শহীদদের সম্মান রক্ষা করা। বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা।
আন্দোলনে ২০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, এই ত্যাগ-তিতিক্ষার বদলে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নারায়ণগঞ্জের আমানত ভাই আমাদের হাতে বাংলাদেশকে আমানত রেখে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ গড়ার পথে একসঙ্গে চলবে। যারা আমাদের ভাইকে শহীদ করেছে আহত করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের প্রত্যেকের বিচার নিশ্চিত করা হবে। হত্যাকাণ্ডের হুকুমের আসামিদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে। আরও অনেককেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুঁজছে। দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমেরিকায় বসে সজিব ওয়াজেদ জয় ভারতকে সময় দিচ্ছেন তিন মাসের মধ্যে দেশে নির্বাচন নিশ্চিত করতে। সজিব ওয়াজেদ জয় মনে হয় ভুলে গেছেন বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। যে দেশে কবে নির্বাচন হবে তা ঠিক করবেন এ দেশের জনগণ।
জয়কে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভারতকে সময় দিয়েছেন সজিব ওয়াজেদ জয়। তিনি হয়তো ভুলে গেছেন বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। যে দেশটিতে কবে নির্বাচন হবে তা ঠিক করবেন এ দেশের জনগণ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আগামী রোববার থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ জানান তিনি। সারজিস আলম বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে। তবে এখন দেশ গড়ার পালা। দেশের স্থিতিশীলতার জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এজন্য আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীকে কর্মস্থলে ফিরে আসতে হবে এবং রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে হবে। তাই শিক্ষার্থীদের আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করবো আগামী রোববার (১৮ আগস্ট) থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বাগত জানিয়ে তারা যেন ক্লাসে ফিরে যান।’
গত ৫ আগস্ট ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ যোগ দিতে গিয়ে যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিতে নিহত হন সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. আমানত। নয় দিন নিখোঁজ থাকার পর ১৪ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আমানতের মরদেহ শনাক্ত করে তার পরিবার। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের চাষাঢ়ায় বাগে জান্নাত জামে মসজিদে এশার নামাজের পর সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. আমানতের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।