Dhaka বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনা-জেলেনস্কির বৈঠকে ঢাকা-মস্কো সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৯৬ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দর মান্তিতস্কি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে ঢাকা-মস্কোর সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা জানতে পেরেছি মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সাইডলাইনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন। তবে এ নিয়ে ঢাকা-মস্কোর সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করে এবং আমরা এটিকে স্বাগত জানাই। আমরা এখানে আমেরিকানদের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। আমাদেরও বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আশা করি ওই বৈঠকের কোনও প্রভাব আমাদের সম্পর্কে পড়বে না।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে রাশিয়া অস্ত্র সরবরাহ করছে- এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশই মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। আমরা বাংলাদেশকেও অস্ত্র সরবরাহ করে থাকি।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ভারসাম্যের কূটনীতি করে চলেছে। বাংলাদেশের এই কূটনীতিকে আমরা প্রশংসা করি।

এক প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে আমরা প্রত্যাবাসন চাই। এ নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, টাকার সঙ্গে রুবল বিনিময়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এটা করতে পারলে দুই দেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে পশ্চিমারা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিয়েছে। তারা ইউক্রেন ইস্যুতে অনেক সোচ্চার, তবে গাজায় গণহত্যা নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও রাশিয়া একই মনোভাব পোষণ করে থাকে।

রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য আছে এবং আমরা এখানে আমাদের নীতি অনুসরণ করি। আমরা বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখি না, তিনি ব্যাখ্যা করেন।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হচ্ছে বাংলাদেশ কী করবে সেটি যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশগুলোর বলা উচিত নয়। বাংলাদেশিরা ঠিক করবে কার সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক রাখবে এবং এটি বাংলাদেশের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করা তাদের উচিত নয়।’

রাশিয়া চায় রোহিঙ্গারা তাদের নিজ ভূমিতে ফেরত যাক। এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা মনে করি বিদেশি কোনও দেশ বা এনজিও এই প্রক্রিয়ায় যেন হস্তক্ষেপ না করে। অবশ্য এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং মিয়ানমারে সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কখন শুরু হবে সেটি এখন অনিশ্চিত।’

অনেক দেশ, যেমন যুক্তরাষ্ট্র বা জাপান প্রস্তাব দিয়েছে– তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে। এর মধ্যে তারা কতজন রোহিঙ্গা নিয়ে গেছে সেটি আমাকে বলেন, জানতে চান রাষ্ট্রদূত।

মিয়ানমারের কাছে রাশিয়া কেন অস্ত্র বিক্রি করে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অস্ত্র সরবরাহ করছি। কিন্তু একই সঙ্গে ভারত, চীনও অস্ত্র সরবরাহ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকেও অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত আছি। এগুলো উন্নতমানের অস্ত্র এবং ইউক্রেন যুদ্ধ দেখলে সেটি বোঝা যায়। আমরা আগেও বাংলাদেশকে অস্ত্র সরবরাহ করেছি। বিমান ও আরও কিছু।’

মিয়ানমারের সমস্যার কারণে কেউ লাভবান হচ্ছে, কিন্তু ভারত বা বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে না। কেউ এ সমস্যা তৈরি করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিকাব প্রেসিডেন্ট নূরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে একটুও ছাড় নয় : নাহিদ ইসলাম

শেখ হাসিনা-জেলেনস্কির বৈঠকে ঢাকা-মস্কো সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত

প্রকাশের সময় : ০৬:৩১:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দর মান্তিতস্কি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে ঢাকা-মস্কোর সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা জানতে পেরেছি মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সাইডলাইনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠক করবেন। তবে এ নিয়ে ঢাকা-মস্কোর সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করে এবং আমরা এটিকে স্বাগত জানাই। আমরা এখানে আমেরিকানদের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। আমাদেরও বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আশা করি ওই বৈঠকের কোনও প্রভাব আমাদের সম্পর্কে পড়বে না।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে রাশিয়া অস্ত্র সরবরাহ করছে- এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, অনেক দেশই মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। আমরা বাংলাদেশকেও অস্ত্র সরবরাহ করে থাকি।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ভারসাম্যের কূটনীতি করে চলেছে। বাংলাদেশের এই কূটনীতিকে আমরা প্রশংসা করি।

এক প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে আমরা প্রত্যাবাসন চাই। এ নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিধা নেই।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, টাকার সঙ্গে রুবল বিনিময়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এটা করতে পারলে দুই দেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে পশ্চিমারা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিয়েছে। তারা ইউক্রেন ইস্যুতে অনেক সোচ্চার, তবে গাজায় গণহত্যা নিয়ে নিশ্চুপ রয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও রাশিয়া একই মনোভাব পোষণ করে থাকে।

রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে অনেক বিষয়ে মতপার্থক্য আছে এবং আমরা এখানে আমাদের নীতি অনুসরণ করি। আমরা বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখি না, তিনি ব্যাখ্যা করেন।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হচ্ছে বাংলাদেশ কী করবে সেটি যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা দেশগুলোর বলা উচিত নয়। বাংলাদেশিরা ঠিক করবে কার সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক রাখবে এবং এটি বাংলাদেশের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করা তাদের উচিত নয়।’

রাশিয়া চায় রোহিঙ্গারা তাদের নিজ ভূমিতে ফেরত যাক। এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা মনে করি বিদেশি কোনও দেশ বা এনজিও এই প্রক্রিয়ায় যেন হস্তক্ষেপ না করে। অবশ্য এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং মিয়ানমারে সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কখন শুরু হবে সেটি এখন অনিশ্চিত।’

অনেক দেশ, যেমন যুক্তরাষ্ট্র বা জাপান প্রস্তাব দিয়েছে– তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে। এর মধ্যে তারা কতজন রোহিঙ্গা নিয়ে গেছে সেটি আমাকে বলেন, জানতে চান রাষ্ট্রদূত।

মিয়ানমারের কাছে রাশিয়া কেন অস্ত্র বিক্রি করে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অস্ত্র সরবরাহ করছি। কিন্তু একই সঙ্গে ভারত, চীনও অস্ত্র সরবরাহ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকেও অস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত আছি। এগুলো উন্নতমানের অস্ত্র এবং ইউক্রেন যুদ্ধ দেখলে সেটি বোঝা যায়। আমরা আগেও বাংলাদেশকে অস্ত্র সরবরাহ করেছি। বিমান ও আরও কিছু।’

মিয়ানমারের সমস্যার কারণে কেউ লাভবান হচ্ছে, কিন্তু ভারত বা বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে না। কেউ এ সমস্যা তৈরি করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডিকাব প্রেসিডেন্ট নূরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।