Dhaka শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনা আইন, বিচার ও পুলিশ প্রশাসনসহ সব সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে : টুকু

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে কোনো আইন ছিল না, কেউ বিচার পায়নি। শেখ হাসিনা আইন, বিচার ও পুলিশ প্রশাসনসহ সব সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী হাইস্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে টুকু বলেন, হাসিনার আমলে কোনো আইনের শাসন ছিল না। বিএনপির কোনো নেতাকর্মী হামলা-খুনের শিকার হলেও মামলা নিতো না। এমনকি সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রোমানা মাহমুদ বারবার হামলার শিকার হলেও কোনো মামলা নেওয়া হয়নি। আবার এখন পুলিশ বলছে, আইন মেনে সব কিছু করতে হবে। পুলিশ এমন আচরণ করলে জনগণ উপযুক্ত জবাব দেবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী অপকর্ম, লুটপাট ও খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। বিচার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখনো দেশে আওয়ামী লীগ রয়েছে। আপনাদের মুখরোচক কথা বলে মিলতাল দিয়ে থাকবে। কিন্তু আপনার তাদের কথায় ভুলবেন না, আওয়ামী লীগ থেকে সজাগ থাকবেন।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিয়েছে। সে ও তার দোসররা বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ঋণের জালে জর্জরিত করে ফেলেছে। যা আগামী অনেক বছরেও পরিশোধ করা দুষ্কর হবে। হাসিনা শুধু প্রয়োজনে সব কিছুর দাম বাড়িয়েছে। শেখ হাসিনা এ দেশকে শ্মশান বানিয়ে গেছে। এখন ভারত গিয়ে ষড়যন্ত্র করছে কীভাবে ক্ষমতায় আসা যায়? কিন্তু এদেশের মানুষ একবার যে বমি করে সেই বমি আর তোলে না।

টুকু বলেন, লাক লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। হাসিনা যে পরিমাণ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে সেটি দিয়ে একশটি পদ্মাসেতু তৈরি করা যেত। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী অপকর্ম, লুটপাট ও খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার এ বাংলার মাটিতেই হবে। এ বিচার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। তবে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ মুখরোচক কথা বলে মিলের চেষ্টা করবে। তাদের কথায় কেউ ভুলবেন না।

তিনি বলেন, অলরেডি শেখ হাসিনা খাজনা ট্যাক্স বাড়িয়েছেন। জিনিসপত্রের দামও বাড়াইছে। তার অর্থ সব আপনার পকেট থেকে যাবে। এ পদক্ষেপ শেখ হাসিনা নিয়েছে এবং এ বাংলাদেশকে একটা শ্মশান বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এ দেশকে যারা শাসন করার দায়িত্ব নেবে তাদের জন্য অনেক কঠিন হবে এটা করার জন্যই শেখ হাসিনা এ কাজ করেছে। এ কাজ করে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলে আওয়ামী লীগকে ফেলে দিল্লি চলে গেছে । এখন দিল্লি বসে চিন্তা করছে দিল্লি বোধহয় আবার তাকে বাংলাদেশের মসনদে বসিয়ে দেবে। স্বপ্ন দেখাটা ভালো কিন্তু দুঃস্বপ্ন দেখাটা ভালো না।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা আরও বলেন, আমি টুকু মাথানত করতে জানি না মাথা নত করিনি। হাসিনা আমাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছিল। আমি সেদিন ঘোষণা দিয়েছিলাম এ হাসিনার এ অবিচার মানি না আর এ অবিচার মেনে হাসিনার কাছে নত করব না।

তিনি বলেন, ১৯৭১ থেকে ৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল। এরপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের হাল ধরে বিশ্বের মানচিত্রে একটি সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন। আবার শেখ হাসিনা ২০০৮ সাল থেকে বিগত ১৬ বছরে লুটপাট, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র কায়েম করে দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে ভারত পালিয়ে গেছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত এ দেশকে পুনর্জীবিত করতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। এ ৩১ দফায় জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন করে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করে আবারও একটি সমৃদ্ধশালী দেশ উপহার দিবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসায় আগামী নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের শরিক দল ও যুগপৎ শরিক দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে এবং ৩১ দফার আলোকে একটি নিরাপদ, সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশ আবারও ইমার্জিং টাইগারের দেশে রূপান্তরিত হবে।’

কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদিউজ্জামান ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য রোমানা মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম-সম্পাদক ভিপি শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ সুইট, স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস ও যুবদলের সভাপতি মির্জা বাবু প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

শেখ হাসিনা আইন, বিচার ও পুলিশ প্রশাসনসহ সব সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে : টুকু

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৭:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে কোনো আইন ছিল না, কেউ বিচার পায়নি। শেখ হাসিনা আইন, বিচার ও পুলিশ প্রশাসনসহ সব সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী হাইস্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে টুকু বলেন, হাসিনার আমলে কোনো আইনের শাসন ছিল না। বিএনপির কোনো নেতাকর্মী হামলা-খুনের শিকার হলেও মামলা নিতো না। এমনকি সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রোমানা মাহমুদ বারবার হামলার শিকার হলেও কোনো মামলা নেওয়া হয়নি। আবার এখন পুলিশ বলছে, আইন মেনে সব কিছু করতে হবে। পুলিশ এমন আচরণ করলে জনগণ উপযুক্ত জবাব দেবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী অপকর্ম, লুটপাট ও খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। বিচার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখনো দেশে আওয়ামী লীগ রয়েছে। আপনাদের মুখরোচক কথা বলে মিলতাল দিয়ে থাকবে। কিন্তু আপনার তাদের কথায় ভুলবেন না, আওয়ামী লীগ থেকে সজাগ থাকবেন।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিয়েছে। সে ও তার দোসররা বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ঋণের জালে জর্জরিত করে ফেলেছে। যা আগামী অনেক বছরেও পরিশোধ করা দুষ্কর হবে। হাসিনা শুধু প্রয়োজনে সব কিছুর দাম বাড়িয়েছে। শেখ হাসিনা এ দেশকে শ্মশান বানিয়ে গেছে। এখন ভারত গিয়ে ষড়যন্ত্র করছে কীভাবে ক্ষমতায় আসা যায়? কিন্তু এদেশের মানুষ একবার যে বমি করে সেই বমি আর তোলে না।

টুকু বলেন, লাক লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। হাসিনা যে পরিমাণ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে সেটি দিয়ে একশটি পদ্মাসেতু তৈরি করা যেত। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী অপকর্ম, লুটপাট ও খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার এ বাংলার মাটিতেই হবে। এ বিচার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। তবে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ মুখরোচক কথা বলে মিলের চেষ্টা করবে। তাদের কথায় কেউ ভুলবেন না।

তিনি বলেন, অলরেডি শেখ হাসিনা খাজনা ট্যাক্স বাড়িয়েছেন। জিনিসপত্রের দামও বাড়াইছে। তার অর্থ সব আপনার পকেট থেকে যাবে। এ পদক্ষেপ শেখ হাসিনা নিয়েছে এবং এ বাংলাদেশকে একটা শ্মশান বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এ দেশকে যারা শাসন করার দায়িত্ব নেবে তাদের জন্য অনেক কঠিন হবে এটা করার জন্যই শেখ হাসিনা এ কাজ করেছে। এ কাজ করে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলে আওয়ামী লীগকে ফেলে দিল্লি চলে গেছে । এখন দিল্লি বসে চিন্তা করছে দিল্লি বোধহয় আবার তাকে বাংলাদেশের মসনদে বসিয়ে দেবে। স্বপ্ন দেখাটা ভালো কিন্তু দুঃস্বপ্ন দেখাটা ভালো না।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা আরও বলেন, আমি টুকু মাথানত করতে জানি না মাথা নত করিনি। হাসিনা আমাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছিল। আমি সেদিন ঘোষণা দিয়েছিলাম এ হাসিনার এ অবিচার মানি না আর এ অবিচার মেনে হাসিনার কাছে নত করব না।

তিনি বলেন, ১৯৭১ থেকে ৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল। এরপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের হাল ধরে বিশ্বের মানচিত্রে একটি সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন। আবার শেখ হাসিনা ২০০৮ সাল থেকে বিগত ১৬ বছরে লুটপাট, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্র কায়েম করে দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে ভারত পালিয়ে গেছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত এ দেশকে পুনর্জীবিত করতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। এ ৩১ দফায় জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন করে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করে আবারও একটি সমৃদ্ধশালী দেশ উপহার দিবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসায় আগামী নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের শরিক দল ও যুগপৎ শরিক দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে এবং ৩১ দফার আলোকে একটি নিরাপদ, সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশ আবারও ইমার্জিং টাইগারের দেশে রূপান্তরিত হবে।’

কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদিউজ্জামান ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য রোমানা মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম-সম্পাদক ভিপি শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ সুইট, স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস ও যুবদলের সভাপতি মির্জা বাবু প্রমুখ।