Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাহজাদপুরে ২০ বছরেও সংস্কার হয়নি মুজিব বাঁধ: জনদুর্ভোগ চরমে

ছবি : যোগাযোগ

গত ২০ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী থেকে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার আমাইকোলা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘মুজিব বাঁধ’ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ বাঁধ ও সড়কের দু’পাশের বিভিন্ন স্থানে মাটি, ইট, খোয়া, পাথর ও সিসি ব্লক ধ্বসে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হওয়ায় বাঁধের ওপর দিয়ে ঝূঁকি নিয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে হচ্ছে।

ফলে লাখো মানুষের চলাচলে ও মালামাল পরিবহনে নিত্যদিন সীমাহীন দুর্ভোগ-দুর্গতি পোহাতে হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। নেই জনভোগান্তি লাঘবেরও কেউ!

সোমবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনকালে নানা আক্ষেপ প্রকাশ করে এলাকাবাসী জানান, বাঁধের ওপরের সড়কের ইট-পাথর ধ্বসে বিভিন্ন স্থান এতটাই সংকুচিত হয়েছে যে ওইসব স্থান দিয়ে ঝূঁকি নিয়ে রিকশাভ্যান চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। মাত্র ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ও সড়কে দশ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ঘন্টা পার করতে হচ্ছে।

 

ঝূঁকিপূর্ণ এ সড়কের ওপর দিয়ে বাঘাবাড়ী, রামখাড়ুয়া, চয়রা, বেড়া, মোয়াকোলা, আহম্মদপুর (ডোমবাড়িয়া), করশালিকা, আন্ধারমানিক, ভূলবাকুটিয়া, কুলিয়ারচর, ধুনাইল, বাগধুনাইলসহ পাশর্^বর্তী বিভিন্ন গ্রামের লাখো আমজনতার চলাচল, দুগ্ধ ও কৃষিপন্যসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন : শাহজাদপুরে ট্যাংকলরি শ্রমিককে মারপিটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঝূঁকিপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে এলাকাবাসী ও শত শত স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচল, ধান, চাল, পাট, সরিষা, দুধের ক্যান, সার, জ্বালানী তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা দ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল ও কৃষিপণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে কৃষিখাতের অগ্রগতির অন্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বাঁধের ওপর নির্মিত সড়কটি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাধীনতার পরে তৎকালীর সরকার পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আইআরডি) আওতায় এ বাঁধ নিমার্ণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে এর নির্মাণকাজ শুরু করে যা ১৯৮০ সালে দিকে শেষ হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাঁধের নামকরণ করা হয় ‘মুজিব বাঁধ’।

 

এর আগে এ অঞ্চলের মানুষ বর্ষাকালে নৌকাযোগে ও শুস্ক মৌসুমে জমির ওপর দিয়ে পায়ে হেটে যাতায়াত করত। বাঁধটি নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয় । এ সড়কটি নির্মাণ করে বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলাকে বন্যার আওতামূক্ত করা হয়। ফলে বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার কৃষকেরা সারা বছরে বহু ফসল উৎপাদন করায় কৃষিখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটে।

 

সর্বশেষ গত ২০০০ সালে এ বাঁধের সংস্কার কাজ ও পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতে বাঁধটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটায় জনভোগান্তির পরিসমাপ্তি ঘটে । এরপর দীর্ঘ ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও বাঁধের সংস্কার কাজ না করায় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় এটি চলাচলের অযোগ্য ও ঝূঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে রূপবাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, দুগ্ধ, কৃষি ও শিল্পপ্রধান এ এলাকার মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের একমাত্র ভরসা বাঁধের এ সড়ক। জনগুরুত্বপূর্ণ বাঁধের এ সড়কটি স্বল্প সময়ে সংস্কার অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ জানান, এ বছরেই ২১ কোটি টাকা ব্যায়ে মুজিব বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল পাচ্ছে না সাত গ্রামের মানুষ

শাহজাদপুরে ২০ বছরেও সংস্কার হয়নি মুজিব বাঁধ: জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশের সময় : ০৪:৫২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অগাস্ট ২০২০

গত ২০ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী থেকে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার আমাইকোলা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘মুজিব বাঁধ’ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ বাঁধ ও সড়কের দু’পাশের বিভিন্ন স্থানে মাটি, ইট, খোয়া, পাথর ও সিসি ব্লক ধ্বসে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হওয়ায় বাঁধের ওপর দিয়ে ঝূঁকি নিয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে হচ্ছে।

ফলে লাখো মানুষের চলাচলে ও মালামাল পরিবহনে নিত্যদিন সীমাহীন দুর্ভোগ-দুর্গতি পোহাতে হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। নেই জনভোগান্তি লাঘবেরও কেউ!

সোমবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনকালে নানা আক্ষেপ প্রকাশ করে এলাকাবাসী জানান, বাঁধের ওপরের সড়কের ইট-পাথর ধ্বসে বিভিন্ন স্থান এতটাই সংকুচিত হয়েছে যে ওইসব স্থান দিয়ে ঝূঁকি নিয়ে রিকশাভ্যান চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। মাত্র ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ও সড়কে দশ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ঘন্টা পার করতে হচ্ছে।

 

ঝূঁকিপূর্ণ এ সড়কের ওপর দিয়ে বাঘাবাড়ী, রামখাড়ুয়া, চয়রা, বেড়া, মোয়াকোলা, আহম্মদপুর (ডোমবাড়িয়া), করশালিকা, আন্ধারমানিক, ভূলবাকুটিয়া, কুলিয়ারচর, ধুনাইল, বাগধুনাইলসহ পাশর্^বর্তী বিভিন্ন গ্রামের লাখো আমজনতার চলাচল, দুগ্ধ ও কৃষিপন্যসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন : শাহজাদপুরে ট্যাংকলরি শ্রমিককে মারপিটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

ঝূঁকিপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে এলাকাবাসী ও শত শত স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাচল, ধান, চাল, পাট, সরিষা, দুধের ক্যান, সার, জ্বালানী তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা দ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল ও কৃষিপণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে কৃষিখাতের অগ্রগতির অন্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বাঁধের ওপর নির্মিত সড়কটি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাধীনতার পরে তৎকালীর সরকার পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের (আইআরডি) আওতায় এ বাঁধ নিমার্ণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে এর নির্মাণকাজ শুরু করে যা ১৯৮০ সালে দিকে শেষ হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাঁধের নামকরণ করা হয় ‘মুজিব বাঁধ’।

 

এর আগে এ অঞ্চলের মানুষ বর্ষাকালে নৌকাযোগে ও শুস্ক মৌসুমে জমির ওপর দিয়ে পায়ে হেটে যাতায়াত করত। বাঁধটি নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয় । এ সড়কটি নির্মাণ করে বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলাকে বন্যার আওতামূক্ত করা হয়। ফলে বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার কৃষকেরা সারা বছরে বহু ফসল উৎপাদন করায় কৃষিখাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটে।

 

সর্বশেষ গত ২০০০ সালে এ বাঁধের সংস্কার কাজ ও পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতে বাঁধটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটায় জনভোগান্তির পরিসমাপ্তি ঘটে । এরপর দীর্ঘ ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও বাঁধের সংস্কার কাজ না করায় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় এটি চলাচলের অযোগ্য ও ঝূঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে রূপবাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, দুগ্ধ, কৃষি ও শিল্পপ্রধান এ এলাকার মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের একমাত্র ভরসা বাঁধের এ সড়ক। জনগুরুত্বপূর্ণ বাঁধের এ সড়কটি স্বল্প সময়ে সংস্কার অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ জানান, এ বছরেই ২১ কোটি টাকা ব্যায়ে মুজিব বাঁধের সংস্কার কাজ শুরু হবে।