Dhaka সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শর্ত প্রকাশ না করেই বিদেশিদের দেওয়া হচ্ছে টার্মিনাল, যা বললেন বিডা চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিকায়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নিতে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় ডেনমার্কভিত্তিক এপিএম টার্মিনালসকে বেছে নিয়েছে সরকার। বন্দরের নিত্যদিনের দীর্ঘ ওয়েটিং টাইম, স্বচ্ছতার অভাব ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা দূর করে বিশ্বমানের অপারেশন নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক কনটেইনার পোর্ট পারফর্মেন্স ইনডেক্স অনুযায়ী ৪০৫টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর রয়েছে ৩৩৪তম অবস্থানে, যেখানে ভিয়েতনামের কাই মেপ বন্দর উঠে এসেছে সপ্তম স্থানে— গ্লোবাল অপারেটর ব্যবস্থাপনার কারণে। বাংলাদেশও একই মডেল গ্রহণ করে বন্দর ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছে।’

তিনি জানান, পোর্টের মালিকানা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে যাচ্ছে— এ ধরনের আশঙ্কার কোনও সুযোগ নেই। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে লালদিয়া চরে এপিএম টার্মিনালস বিশ্বমানের একটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করবে। নির্মাণ শেষে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কেবল পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে তাদের হাতে। চুক্তির মেয়াদ শেষে পুরো অবকাঠামো সরকারের অধীনেই ফিরে আসবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘গাড়ি আমাদের, তারা শুধু চালক। চালক কখনও গাড়ির মালিক হয় না।’

বিডা চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান চৌধুরী রোববার (১৬ নভেম্বর) রাতে প্রশ্ন উত্তর আকারে তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তার ফেসবুক পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: চট্টগ্রাম বন্দরে একটি গ্লোবাল অপারেটর কেন জরুরি হলো?

বাংলাদেশের বন্দরে মূল চ্যালেঞ্জ হলো দুর্নীতি এবং দীর্ঘ ওয়েটিং টাইম। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো, যেমন ভিয়েতনাম, বৈশ্বিক অপারেটর দ্বারা প্রযুক্তিনির্ভর বন্দর ব্যবস্থাপনা চালু করে তাদের কাই মেপ বন্দরকে বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে সপ্তম অবস্থানে নিয়ে গেছে। আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৪০৫টি বন্দরের মধ্যে ৩৩৪তম স্থানে। আমাদের এমন অপারেটর প্রয়োজন, যারা নতুন প্রযুক্তি ও দক্ষ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে আমাদের হয়ে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করতে পারবে। আমাদের তরুণ জনশক্তি তাদের কাছ থেকে বন্দর পরিচালনা শিখে একদিন নিজেরাই দেশে-বিদেশে পোর্টে নেতৃত্ব দেবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, একটি দুর্নীতিমুক্ত বন্দর পাবার আশা করতে পারি আমরা।

প্রশ্ন: পোর্টের মালিকানা কি বিদেশিদের হাতে চলে যাচ্ছে?

প্রশ্নই আসে না! বন্দরের মালিকানা বাংলাদেশের কাছেই থাকছে। লালদিয়া চরে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস একটি নতুন টার্মিনাল নকশা ও নির্মাণ করবে। যেই বিশ্বমানের টার্মিনাল লালদিয়ায় তৈরি হবে, সেটার মালিক হবে বাংলাদেশ। নির্মাণকাল তিন বছর। তারপর এপিএম একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে। সময় শেষ হয়ে গেলে তারা সব আমাদের বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাবে। মনে করুন, গাড়িটা আমাদের। তারা ড্রাইভার। তাহলে কি গাড়িটা তার হয়ে গেলো?

প্রশ্ন: এপিএম টার্মিনালস কারা? এদেরকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হলো?

এপিএম টার্মিনালস বিশ্বখ্যাত এপি মোলার-মেয়ার্স্ক গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের শীর্ষ ২০টি বন্দরের ১০টি অপারেট করে তারা। ৩৩টি দেশে সর্বমোট ৬০টির বেশি টার্মিনাল পরিচালনা করছেন এই মুহূর্তে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ও চীনে অপারেট করছেন তারা।

প্রশ্ন: চুক্তির মূল শর্তগুলো কি কি?

লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল একটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রকল্প। এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে-

– প্রাইভেট পার্টনারের সম্পূর্ণ বিনিয়োগ। সাইনিং মানি হিসাবে ২৫০ কোটি টাকা এবং নির্মাণকালে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এপিএম। সরকার থেকে কোনও অর্থায়ন বা গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে না।

– নির্মাণের পর ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি। চুক্তির মেয়াদকালে আমাদের সকল বাণিজ্যিক, সামাজিক ও পরিবেশগত শর্ত মেনে চললে মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।

– যতগুলো কনটেইনার তারা হ্যান্ডেল করবে, প্রত্যেকটার জন্য আমাদের একটি নির্দিষ্ট ফি দিবে। যত বেশি ভলিউম করবে আমাদের আয় তত বেশি হবে। এর পাশাপাশি দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে অনেক ধরনের শর্ত আছে এই চুক্তিতে। যেমন, কোনও কনটেইনার হ্যান্ডেল করতে না পারলেও আমাদের মিনিমাম একটা ভলিউম ধরে তারা পেমেন্ট করবেন।

– রেগুলেটর হিসেবে থাকছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

প্রশ্ন: ৩০ বছরের চুক্তি কি অনেক বেশি দিনের হয়ে গেলো না?

৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি পিপিপি কাঠামোর ক্ষেত্রে একটা মাঝামাঝি (মিড-রেঞ্জ) মেয়াদকাল। অন্যান্য দেশে একই ধাঁচের চুক্তির মেয়াদকাল: ভারত (২০১৮) মুম্বাই পোর্ট ৬০ বছর, চীন (২০০৩) সাংহাই পোর্ট ৫০ বছর, ভিয়েতনাম (২০১০) কাই মেপ পোর্ট ৫০ বছর।

প্রশ্ন: চুক্তির পূর্নাঙ্গ দলিল কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না?

শুধু বাংলাদেশ না, কোনও দেশের সরকারই পিপিপি চুক্তির মূল দলিল জনসম্মুখে প্রকাশ করবে না আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে। সরকারি ক্রয়নীতি ও পিপিপি গাইডলাইন অনুযায়ী পূর্ণ প্রকাশ নিরাপদ নয় কারণ এটি ভবিষ্যৎ দরপত্র প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা সব প্রকাশ করে ফেললে আগামী সব চুক্তির দর কষাকষিতে আমরা ব্যাকফুটে চলে যাবো। এছাড়াও চুক্তির দলিলে ব্যবসায়িক তথ্য ও অপারেশনাল কৌশল থাকে যা গোপনীয়তার শর্ত দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। বিশ্ব ব্যাংক, এডিবির মতো সংস্থাগুলোও সম্পূর্ণ চুক্তি প্রকাশ না করে বরং সারাংশ প্রকাশ করার পরামর্শ দেয়। এতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে, আবার বেসরকারি অংশীদারের গোপনীয়তা রক্ষাও হয়। লালদিয়ার ক্ষেত্রেও এই সকল বিষয় প্রযোজ্য। জনগণের অবহতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (যেমন: মালিকানা, আয় কাঠামো) আমরা এর মধ্যে প্রেস ব্রিফিং করে প্রকাশ করেছি এবং সাংবাদিকদেরও লিখিত জানিয়েছি।

প্রশ্ন: অপারেটর বাছাইয়ের প্রক্রিয়া কি স্বচ্ছ/আইনানুগ ছিল?

পিপিপি নীতিমালার জি টু জি পদ্ধতির আলোকে টেন্ডার আহ্বান, প্রাক-যোগ্যতা (পিকিউ) যাচাই, টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল মূল্যায়ন এবং ডিউ ডিলিজেন্সের মাধ্যমে অপারেটর চূড়ান্ত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিযুক্ত করা হয়েছে নিরপেক্ষ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর, আইনজীবী, কনসালট্যান্ট। গঠন করা হয়েছে আন্ত মন্ত্রণালয় টেন্ডার কমিটি। প্রতিটি ধাপের অডিটযোগ্য রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে।

প্রশ্ন: আমরা কি শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছি?

শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্র বন্দর চীনা ঋণে নির্মিত। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কান সরকার ৯৯ বছরের জন্য চীনা কোম্পানির কাছে কন্ট্রোলিং ইকুইটি স্টেক দিয়ে দিতে বাধ্য হয়। হাম্বানটোটা থেকে আমাদের শিক্ষা হল যে অতিরিক্ত ঋণনির্ভর কাঠামো ও দুর্বল রিস্ক শেয়ারিং মডেল দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা ওই পথে হাঁটিনি। লালদিয়া টার্মিনালের মালিক রাষ্ট্র এবং আগেই বলেছি এটির জন্য আমরা কোন ঋণ নেইনি—এটি সম্পূর্ণরূপে এপিএম এর বিনিয়োগ। চুক্তিতে ট্রাফিক স্টাডি, রিস্ক শেয়ারিং, কারেন্সি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং স্টেপ-ইন রাইটের মতো বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে অর্থনৈতিক কাঠামো টেকসই ও স্বচ্ছ থাকে।

প্রশ্ন: অপারেটর ব্যর্থ হলে বা চুক্তি ভঙ্গ করলে কি করবে সরকার?

চুক্তিতে পারফরম্যান্স-ভিত্তিক কেপিআই, রেমেডি ও পেনাল্টির ধারা, স্টেপ-ইন রাইট, টার্মিনেশন এবং হ্যান্ড-ব্যাকের মতো প্রভিশন অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা জনস্বার্থ সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপারেটর চুক্তি ভঙ্গ করলে বা প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দিতে ব্যর্থ হলে এসব ধারা অনুযায়ী সরকার বা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সময়ে পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং বিকল্প ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে পারে।

প্রশ্ন: বিদ্যমান টার্মিনালগুলো সমস্যা না মিটিয়ে নতুন টার্মিনাল কেন?

বর্তমান টার্মিনালগুলোতে ডিজিটাইজেশন, ইয়ার্ড রিডিজাইন, গেট অপ্টিমাইজেশন, কনটেইনার ব্যবস্থাপনার সংস্কার চলছে। অন্যদিকে লালদিয়ায় বিশ্বমানের কনটেইনার টার্মিনাল যোগ হলে অপারেশনাল প্রতিযোগিতা বাড়বে। বন্দর অবকাঠামোর ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই। তাই এক প্রকল্পটি একই সাথে বটলনেক রিমুভাল ও নতুন সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ করবে।

প্রশ্ন: সবকিছু এত তাড়াতাড়ি হচ্ছে কেন?

আশ্চর্য! সারাজীবন শুনলাম সরকারি অফিস ঢিলা। ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট সময়মতো করতে পারলে আমাদের দেশ নাকি কোথায় চলে যেতো! এখন যখন সরকারের কিছু অন্তপ্রাণ অফিসার লেজার ফোকাস নিয়ে দিনরাত খেটে একটা বড় কাজ এগিয়ে নিয়ে গেলো, তখনতো সবার বলা উচিত, “দে মেড আস ফ্লাই!!” কারো সাথে মিল খুঁজবেন না। ঐটা কাকতাল।

প্রশ্ন: আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে কি?

নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার নিরাপত্তা প্রটোকল যথারীতি বলবৎ থাকবে। লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল এই নেটওয়ার্কের মধ্যেই অপারেট করবে। এছাড়া, টার্মিনালে ব্যবহৃত সব ধরনের প্রযুক্তি ও অপারেশনাল প্রক্রিয়ায় সরকার অনুমোদিত স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ডেটা লোকালাইজেশন, সাইবার সিকিউরিটি ব্যবস্থা, ব্যাকগ্রাউন্ড স্ক্রিনিং এবং অ্যাক্সেস কন্ট্রোল মেকানিজম নিশ্চিত করা হবে। এই পুরো ব্যবস্থাপনাই সরকারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ও চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে, ফলে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনো সুযোগ নেই।

প্রশ্ন: সব মিলিয়ে দেশের কী লাভ হবে?

– প্রতি বছর অতিরিক্ত ৮ লাখ টিইইউ ধারণক্ষমতা যুক্ত হবে, যা বর্তমান সক্ষমতার তুলনায় প্রায় ৪৪% বেশি।

– প্রতি ইউনিটে পণ্য পরিবহনের খরচ কমবে।

– আমদানি-রফতানি দ্রুততর হবে।

– এখনকার তুলনায় দ্বিগুণ বড় কনটেইনার জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে।

– বিশ্বের দূরবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি জাহাজ সংযোগের সুযোগ উন্মুক্ত হবে।

– ৫০০-৭০০ সরাসরি স্থানীয় কর্মসংস্থান তৈরি হবে নির্মাণ ও পরিচালনা পর্যায়ে। হাজারেরও বেশী পরোক্ষ স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে পরিবহন, লজিস্টিকস ও বৃহত্তর সাপ্লাই চেইনে।

– এপিএম টার্মিনালসের নিজস্ব ট্রেনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয় প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপকরা বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ পাবেন।

– ডিজিটাল টার্মিনাল অপারেশন সিস্টেম, লিন পদ্ধতি ও ফ্লো ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে প্রযুক্তি ও দক্ষতা স্থানান্তর হবে।

– আমাদের প্রথম পরিবেশবান্ধব গ্রীন পোর্ট হবে এটি।

প্রশ্ন: তাহলে কিছু মানুষ এত হাউ মাউ কাউ করছে কেন?

একদল আছেন, তারা পরিচয় দেন ‘বিশেষজ্ঞ’ বলে কিন্তু আসলে তারা ‘বিশেষ অজ্ঞ’। পড়ালেখা করেন না। জীবনে পিপিপি প্রজেক্ট করেন নাই। এ বিষয়ে কোনও অভিজ্ঞতা নাই। ফটোকার্ড দেখে কমেন্ট করেন। পত্রিকায় ভুলভাল লেখেন। ‘দেশ ধ্বংস’, ‘দেশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে’ ইত্যাদি বলে নিজেদের ভিউ ব্যবসা বাড়ান।

আরেকদল বন্দর থেকে চাঁদা তুলতেন। দুর্নীতি করতেন। তাদের মন খারাপ। এখন বিভিন্ন অজুহাতে তারা তাদের স্বার্থ রক্ষায় নেমেছেন।

আরেকদলের কথা আপনারা সবাই জানেন।

আশিক চৌধুরী শেষে তার সহকর্মীদের ধন্যবাদ দিয়ে লিখেছেন, ‘আমার যখন বয়স হবে, লাঠিতে ভর করে লালদিয়াতে হাঁটতে হাঁটতে আমি আমার নাতনিকে গর্ব করে দেখাতে পারবো যে চট্টগ্রামের- দেশের এই অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমাদের সকলের চেষ্টায় সম্ভব হয়েছিল।’

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নোয়াখালীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩

শর্ত প্রকাশ না করেই বিদেশিদের দেওয়া হচ্ছে টার্মিনাল, যা বললেন বিডা চেয়ারম্যান

প্রকাশের সময় : ১০:৫৫:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিকায়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নিতে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় ডেনমার্কভিত্তিক এপিএম টার্মিনালসকে বেছে নিয়েছে সরকার। বন্দরের নিত্যদিনের দীর্ঘ ওয়েটিং টাইম, স্বচ্ছতার অভাব ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা দূর করে বিশ্বমানের অপারেশন নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক কনটেইনার পোর্ট পারফর্মেন্স ইনডেক্স অনুযায়ী ৪০৫টি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর রয়েছে ৩৩৪তম অবস্থানে, যেখানে ভিয়েতনামের কাই মেপ বন্দর উঠে এসেছে সপ্তম স্থানে— গ্লোবাল অপারেটর ব্যবস্থাপনার কারণে। বাংলাদেশও একই মডেল গ্রহণ করে বন্দর ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছে।’

তিনি জানান, পোর্টের মালিকানা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে যাচ্ছে— এ ধরনের আশঙ্কার কোনও সুযোগ নেই। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে লালদিয়া চরে এপিএম টার্মিনালস বিশ্বমানের একটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করবে। নির্মাণ শেষে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কেবল পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে তাদের হাতে। চুক্তির মেয়াদ শেষে পুরো অবকাঠামো সরকারের অধীনেই ফিরে আসবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘গাড়ি আমাদের, তারা শুধু চালক। চালক কখনও গাড়ির মালিক হয় না।’

বিডা চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান চৌধুরী রোববার (১৬ নভেম্বর) রাতে প্রশ্ন উত্তর আকারে তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তার ফেসবুক পোস্টটি নিচে তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: চট্টগ্রাম বন্দরে একটি গ্লোবাল অপারেটর কেন জরুরি হলো?

বাংলাদেশের বন্দরে মূল চ্যালেঞ্জ হলো দুর্নীতি এবং দীর্ঘ ওয়েটিং টাইম। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো, যেমন ভিয়েতনাম, বৈশ্বিক অপারেটর দ্বারা প্রযুক্তিনির্ভর বন্দর ব্যবস্থাপনা চালু করে তাদের কাই মেপ বন্দরকে বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে সপ্তম অবস্থানে নিয়ে গেছে। আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৪০৫টি বন্দরের মধ্যে ৩৩৪তম স্থানে। আমাদের এমন অপারেটর প্রয়োজন, যারা নতুন প্রযুক্তি ও দক্ষ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে আমাদের হয়ে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করতে পারবে। আমাদের তরুণ জনশক্তি তাদের কাছ থেকে বন্দর পরিচালনা শিখে একদিন নিজেরাই দেশে-বিদেশে পোর্টে নেতৃত্ব দেবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, একটি দুর্নীতিমুক্ত বন্দর পাবার আশা করতে পারি আমরা।

প্রশ্ন: পোর্টের মালিকানা কি বিদেশিদের হাতে চলে যাচ্ছে?

প্রশ্নই আসে না! বন্দরের মালিকানা বাংলাদেশের কাছেই থাকছে। লালদিয়া চরে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস একটি নতুন টার্মিনাল নকশা ও নির্মাণ করবে। যেই বিশ্বমানের টার্মিনাল লালদিয়ায় তৈরি হবে, সেটার মালিক হবে বাংলাদেশ। নির্মাণকাল তিন বছর। তারপর এপিএম একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে। সময় শেষ হয়ে গেলে তারা সব আমাদের বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাবে। মনে করুন, গাড়িটা আমাদের। তারা ড্রাইভার। তাহলে কি গাড়িটা তার হয়ে গেলো?

প্রশ্ন: এপিএম টার্মিনালস কারা? এদেরকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হলো?

এপিএম টার্মিনালস বিশ্বখ্যাত এপি মোলার-মেয়ার্স্ক গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের শীর্ষ ২০টি বন্দরের ১০টি অপারেট করে তারা। ৩৩টি দেশে সর্বমোট ৬০টির বেশি টার্মিনাল পরিচালনা করছেন এই মুহূর্তে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ও চীনে অপারেট করছেন তারা।

প্রশ্ন: চুক্তির মূল শর্তগুলো কি কি?

লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল একটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রকল্প। এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে-

– প্রাইভেট পার্টনারের সম্পূর্ণ বিনিয়োগ। সাইনিং মানি হিসাবে ২৫০ কোটি টাকা এবং নির্মাণকালে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এপিএম। সরকার থেকে কোনও অর্থায়ন বা গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে না।

– নির্মাণের পর ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি। চুক্তির মেয়াদকালে আমাদের সকল বাণিজ্যিক, সামাজিক ও পরিবেশগত শর্ত মেনে চললে মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।

– যতগুলো কনটেইনার তারা হ্যান্ডেল করবে, প্রত্যেকটার জন্য আমাদের একটি নির্দিষ্ট ফি দিবে। যত বেশি ভলিউম করবে আমাদের আয় তত বেশি হবে। এর পাশাপাশি দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে অনেক ধরনের শর্ত আছে এই চুক্তিতে। যেমন, কোনও কনটেইনার হ্যান্ডেল করতে না পারলেও আমাদের মিনিমাম একটা ভলিউম ধরে তারা পেমেন্ট করবেন।

– রেগুলেটর হিসেবে থাকছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

প্রশ্ন: ৩০ বছরের চুক্তি কি অনেক বেশি দিনের হয়ে গেলো না?

৩০ বছর মেয়াদী চুক্তি পিপিপি কাঠামোর ক্ষেত্রে একটা মাঝামাঝি (মিড-রেঞ্জ) মেয়াদকাল। অন্যান্য দেশে একই ধাঁচের চুক্তির মেয়াদকাল: ভারত (২০১৮) মুম্বাই পোর্ট ৬০ বছর, চীন (২০০৩) সাংহাই পোর্ট ৫০ বছর, ভিয়েতনাম (২০১০) কাই মেপ পোর্ট ৫০ বছর।

প্রশ্ন: চুক্তির পূর্নাঙ্গ দলিল কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না?

শুধু বাংলাদেশ না, কোনও দেশের সরকারই পিপিপি চুক্তির মূল দলিল জনসম্মুখে প্রকাশ করবে না আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে। সরকারি ক্রয়নীতি ও পিপিপি গাইডলাইন অনুযায়ী পূর্ণ প্রকাশ নিরাপদ নয় কারণ এটি ভবিষ্যৎ দরপত্র প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা সব প্রকাশ করে ফেললে আগামী সব চুক্তির দর কষাকষিতে আমরা ব্যাকফুটে চলে যাবো। এছাড়াও চুক্তির দলিলে ব্যবসায়িক তথ্য ও অপারেশনাল কৌশল থাকে যা গোপনীয়তার শর্ত দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। বিশ্ব ব্যাংক, এডিবির মতো সংস্থাগুলোও সম্পূর্ণ চুক্তি প্রকাশ না করে বরং সারাংশ প্রকাশ করার পরামর্শ দেয়। এতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে, আবার বেসরকারি অংশীদারের গোপনীয়তা রক্ষাও হয়। লালদিয়ার ক্ষেত্রেও এই সকল বিষয় প্রযোজ্য। জনগণের অবহতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (যেমন: মালিকানা, আয় কাঠামো) আমরা এর মধ্যে প্রেস ব্রিফিং করে প্রকাশ করেছি এবং সাংবাদিকদেরও লিখিত জানিয়েছি।

প্রশ্ন: অপারেটর বাছাইয়ের প্রক্রিয়া কি স্বচ্ছ/আইনানুগ ছিল?

পিপিপি নীতিমালার জি টু জি পদ্ধতির আলোকে টেন্ডার আহ্বান, প্রাক-যোগ্যতা (পিকিউ) যাচাই, টেকনিক্যাল ও ফিনান্সিয়াল মূল্যায়ন এবং ডিউ ডিলিজেন্সের মাধ্যমে অপারেটর চূড়ান্ত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিযুক্ত করা হয়েছে নিরপেক্ষ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর, আইনজীবী, কনসালট্যান্ট। গঠন করা হয়েছে আন্ত মন্ত্রণালয় টেন্ডার কমিটি। প্রতিটি ধাপের অডিটযোগ্য রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে।

প্রশ্ন: আমরা কি শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছি?

শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্র বন্দর চীনা ঋণে নির্মিত। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কান সরকার ৯৯ বছরের জন্য চীনা কোম্পানির কাছে কন্ট্রোলিং ইকুইটি স্টেক দিয়ে দিতে বাধ্য হয়। হাম্বানটোটা থেকে আমাদের শিক্ষা হল যে অতিরিক্ত ঋণনির্ভর কাঠামো ও দুর্বল রিস্ক শেয়ারিং মডেল দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য ক্ষতিকর। আমরা ওই পথে হাঁটিনি। লালদিয়া টার্মিনালের মালিক রাষ্ট্র এবং আগেই বলেছি এটির জন্য আমরা কোন ঋণ নেইনি—এটি সম্পূর্ণরূপে এপিএম এর বিনিয়োগ। চুক্তিতে ট্রাফিক স্টাডি, রিস্ক শেয়ারিং, কারেন্সি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং স্টেপ-ইন রাইটের মতো বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে অর্থনৈতিক কাঠামো টেকসই ও স্বচ্ছ থাকে।

প্রশ্ন: অপারেটর ব্যর্থ হলে বা চুক্তি ভঙ্গ করলে কি করবে সরকার?

চুক্তিতে পারফরম্যান্স-ভিত্তিক কেপিআই, রেমেডি ও পেনাল্টির ধারা, স্টেপ-ইন রাইট, টার্মিনেশন এবং হ্যান্ড-ব্যাকের মতো প্রভিশন অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা জনস্বার্থ সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপারেটর চুক্তি ভঙ্গ করলে বা প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দিতে ব্যর্থ হলে এসব ধারা অনুযায়ী সরকার বা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সময়ে পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং বিকল্প ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে পারে।

প্রশ্ন: বিদ্যমান টার্মিনালগুলো সমস্যা না মিটিয়ে নতুন টার্মিনাল কেন?

বর্তমান টার্মিনালগুলোতে ডিজিটাইজেশন, ইয়ার্ড রিডিজাইন, গেট অপ্টিমাইজেশন, কনটেইনার ব্যবস্থাপনার সংস্কার চলছে। অন্যদিকে লালদিয়ায় বিশ্বমানের কনটেইনার টার্মিনাল যোগ হলে অপারেশনাল প্রতিযোগিতা বাড়বে। বন্দর অবকাঠামোর ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নের বিকল্প নেই। তাই এক প্রকল্পটি একই সাথে বটলনেক রিমুভাল ও নতুন সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ করবে।

প্রশ্ন: সবকিছু এত তাড়াতাড়ি হচ্ছে কেন?

আশ্চর্য! সারাজীবন শুনলাম সরকারি অফিস ঢিলা। ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট সময়মতো করতে পারলে আমাদের দেশ নাকি কোথায় চলে যেতো! এখন যখন সরকারের কিছু অন্তপ্রাণ অফিসার লেজার ফোকাস নিয়ে দিনরাত খেটে একটা বড় কাজ এগিয়ে নিয়ে গেলো, তখনতো সবার বলা উচিত, “দে মেড আস ফ্লাই!!” কারো সাথে মিল খুঁজবেন না। ঐটা কাকতাল।

প্রশ্ন: আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে কি?

নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ইমিগ্রেশন, কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার নিরাপত্তা প্রটোকল যথারীতি বলবৎ থাকবে। লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল এই নেটওয়ার্কের মধ্যেই অপারেট করবে। এছাড়া, টার্মিনালে ব্যবহৃত সব ধরনের প্রযুক্তি ও অপারেশনাল প্রক্রিয়ায় সরকার অনুমোদিত স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ডেটা লোকালাইজেশন, সাইবার সিকিউরিটি ব্যবস্থা, ব্যাকগ্রাউন্ড স্ক্রিনিং এবং অ্যাক্সেস কন্ট্রোল মেকানিজম নিশ্চিত করা হবে। এই পুরো ব্যবস্থাপনাই সরকারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ও চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে, ফলে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনো সুযোগ নেই।

প্রশ্ন: সব মিলিয়ে দেশের কী লাভ হবে?

– প্রতি বছর অতিরিক্ত ৮ লাখ টিইইউ ধারণক্ষমতা যুক্ত হবে, যা বর্তমান সক্ষমতার তুলনায় প্রায় ৪৪% বেশি।

– প্রতি ইউনিটে পণ্য পরিবহনের খরচ কমবে।

– আমদানি-রফতানি দ্রুততর হবে।

– এখনকার তুলনায় দ্বিগুণ বড় কনটেইনার জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে।

– বিশ্বের দূরবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি জাহাজ সংযোগের সুযোগ উন্মুক্ত হবে।

– ৫০০-৭০০ সরাসরি স্থানীয় কর্মসংস্থান তৈরি হবে নির্মাণ ও পরিচালনা পর্যায়ে। হাজারেরও বেশী পরোক্ষ স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে পরিবহন, লজিস্টিকস ও বৃহত্তর সাপ্লাই চেইনে।

– এপিএম টার্মিনালসের নিজস্ব ট্রেনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয় প্রকৌশলী ও ব্যবস্থাপকরা বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ পাবেন।

– ডিজিটাল টার্মিনাল অপারেশন সিস্টেম, লিন পদ্ধতি ও ফ্লো ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে প্রযুক্তি ও দক্ষতা স্থানান্তর হবে।

– আমাদের প্রথম পরিবেশবান্ধব গ্রীন পোর্ট হবে এটি।

প্রশ্ন: তাহলে কিছু মানুষ এত হাউ মাউ কাউ করছে কেন?

একদল আছেন, তারা পরিচয় দেন ‘বিশেষজ্ঞ’ বলে কিন্তু আসলে তারা ‘বিশেষ অজ্ঞ’। পড়ালেখা করেন না। জীবনে পিপিপি প্রজেক্ট করেন নাই। এ বিষয়ে কোনও অভিজ্ঞতা নাই। ফটোকার্ড দেখে কমেন্ট করেন। পত্রিকায় ভুলভাল লেখেন। ‘দেশ ধ্বংস’, ‘দেশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে’ ইত্যাদি বলে নিজেদের ভিউ ব্যবসা বাড়ান।

আরেকদল বন্দর থেকে চাঁদা তুলতেন। দুর্নীতি করতেন। তাদের মন খারাপ। এখন বিভিন্ন অজুহাতে তারা তাদের স্বার্থ রক্ষায় নেমেছেন।

আরেকদলের কথা আপনারা সবাই জানেন।

আশিক চৌধুরী শেষে তার সহকর্মীদের ধন্যবাদ দিয়ে লিখেছেন, ‘আমার যখন বয়স হবে, লাঠিতে ভর করে লালদিয়াতে হাঁটতে হাঁটতে আমি আমার নাতনিকে গর্ব করে দেখাতে পারবো যে চট্টগ্রামের- দেশের এই অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমাদের সকলের চেষ্টায় সম্ভব হয়েছিল।’