নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে শেরেবাংলা নগরের সংসদ ভবনের পূর্ব ব্লকের প্রথম লেভেলের শপথ কক্ষে এই শপথ অনুষ্ঠিত হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। এর আগে নিয়মানুযায়ী স্পিকার নিজে নিজেই শপথ গ্রহণ করেন।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। সকাল নয়টার দিকে সংসদ ভবনে একে একে শপথ নিতে জাতীয় সংসদ ভবনে উপস্থিত হন নবনির্বাচিত এমপিরা। সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শপথকক্ষে প্রবেশ করেন সকাল ১০টা ৮ মিনিটে।
জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদেরও পর্যায়ক্রমে শপথবাক্য পাঠ করাবেন স্পিকার। এরপর বেলা ১১টায় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা এবং দুপুর ১২টায় জাতীয় পার্টি ও অন্য দল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন।
এর আগে মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংবিধান অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের শপথ পড়াতে হয়। সে অনুযায়ী, আজ সকালে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পড়ান একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এমপিদের শপথের আগে প্রথম দফায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবিধান ও কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী এমপি হিসেবে নিজে শপথগ্রহণ করেন এবং শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
দ্বাদশ সংসদের এমপিরা নিজ নিজ নাম উচ্চরণ করে স্পিকারের সঙ্গে সঙ্গে পড়তে থাকেন- সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ (বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা) করিতেছি যে, আমি যে কর্তব্যভার গ্রহণ করিতে যাইতেছি, তাহা আইন-অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত পালন করিব; আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করিব; এবং সংসদ-সদস্যরূপে আমার কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হইতে দেব না।
এরপর সবাই শপথপত্রে নিজেদের আসনের নাম লিখে সই করেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংসদ সচিব এ কে এম আবদুস সালাম।
উল্লেখ্য, ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে নওগাঁ-২ আসনের প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। ওই আসনের নির্বাচনের জন্য নতুন করে শিডিউল দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হবে।
আর ময়মনসিংহের একটি কেন্দ্রে ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। সেই নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি।এ দুটি বাদে বাকি ২৯৮টি আসনের নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হয়েছে মঙ্গলবার।
জানা গেছে, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ আলোচনা করে তাদের নেতা নির্বাচিত করবে। এরপর রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বসে তাদের নেতা নির্বাচিত করে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার স্বীকৃতির জন্য স্পিকারের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানাবে।
নিয়মানুযায়ী, সংসদ নেতা নির্বাচন ও প্রধানমন্ত্রীর শপথের পর তার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশন আহ্বানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন স্পিকার। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন আহ্বান করবেন।
উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে ৮ জানুয়ারি দুপুর পর্যন্ত ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের পর সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। যাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ নেতা।
এদিকে গত দুই মেয়াদে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসা জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত ১১ আসনে জয় পেয়েছে।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি ও বিএনপির জোট থেকে বেরিয়ে আসা কল্যাণ পার্টি একটি আসনে জয় পেয়েছে।