Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি দুই সপ্তাহের মধ্যে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রোববার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, গ্যাস, কয়লা এবং তেলের যোগান দিতে আমাদের সময় লাগছে। লোডশেডিংয়ের আকার খানিকটা বড় হয়েছে। পরিস্থিতি অনেকটা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমাধান করার। আমরা আশা করছি আগামী দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে।

লোডশেডিং প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের লোডশেডিং বেড়ে গেছে। আমরা বারবার বলে আসছিলাম, আমাদের যে ফুয়েল গ্যাস কয়লা তেল, দীর্ঘ সময় লাগছে এগুলো যোগান দিতে। এ কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের জায়গাটা আরও দীর্ঘতর হচ্ছে।

নসরুল হামিদ বলেন, এখন যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে আমরা দেখছি পরিস্থিতি অনেকটা অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে চেষ্টা করছি এটা কত দ্রুত সমাধান করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে এটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ে পায়রাতে কয়লা নিয়ে আসার চেষ্টা আমরা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বড়পুকুরিয়াতে আমাদের পাওয়ার প্লান্টটি অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। আমাদের লিকুয়িট ফুয়েল যে পাওয়ার প্লান্টগুলো ছিল সেগুলো প্রায় অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। যে কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের মাত্রাটা অনেক বেড়ে গেছে।

লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে ঢাকার আশপাশে গ্রামাঞ্চলেসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা সকাল থেকে এটা মনিটর করছি। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

নসরুল হামিদ বলেন, আমরা অচিরেই চেষ্টা করছি যে, এই অবস্থা থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আমরা আশা করছি ১০-১৫ সময়ের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে বেরিয়ে আসা যায়। কারণ আমাদের কয়লা যোগান দিতে হচ্ছে, তেলের যোগান দিতে হচ্ছে, গ্যাসের যোগান দিতে হচ্ছে। আবার ইন্ডাস্ট্রিতেও গ্যাস যোগান দিতে হচ্ছে। এই সমস্ত পরিস্থিতি একসাথে এসেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে পরিমাণ হিট ওয়েদার দেখছি আমরা, তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে আমাদের পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে মজুদ ছিল পাওয়ার প্লান্টের জন্য, আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ রাখতে চেষ্টা করছিলাম। সেটাও আমরা জ্বালানির কারণে দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, তাপপ্রবাহও বেড়ে গেছে। তাপমাত্রা কোথাও ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে গেছে। এজন্য আমাদের পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে পাওয়ার প্ল্যান্ট মজুত ছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য প্রস্তুত রাখছিলাম, সেটাও আমরা জ্বালানির কারণে দিতে পারছি না।

আগের মত সিডিউল লোডশেডিংয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা আছে কি না-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এ মুহূর্তে সেভাবে যাচ্ছি না। কিছু জায়গায় আমরা কিছুটা লোডশেডিং করছি। আবার সেটা থেকে ফেরার চেষ্টা করছি। আমাদের ফুয়েল অর্থাৎ কয়লা, গ্যাস, তেলের সংকট। আমরা ঠিকমতো যোগান দিতে পারছি না। সেই কারণেই ঝামেলাটা হচ্ছে। তবে আমি মনে করি এটা খুব সাময়িক, এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এরই মধ্যে যোগানের চেষ্টা হয়ে গেছে, আমরা চেষ্টা করছি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে একটা ভালো জায়গায় যেতে পারব।

পরিস্থিতির উন্নতির জন্য এখন কেন চেষ্টা করা হচ্ছে, আগে কেন করা হয়নি-জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা দু’মাস আগে থেকে চেষ্টা করছিলাম। আমরা জানতাম যে এ রকম একটা পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। সেটার সমাধান নিয়ে আমরা চেষ্টা করছিলাম।

এর মধ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে পেট্রোল পাম্পে অকটেন দিতে পারছে না-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পেট্রোলের তো অভাব নেই। আমরা যেটা আনার চেষ্টা করছি সেটা হেভি ফুয়েল, সেটা দিয়ে তো গাড়ি চলে না। আমরা প্রচুর পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার চেষ্টা করছি।’

নসরুল হামিদ আরও বলেন, বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসছে, বাকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আসবে। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আমরা একটা ভালো পরিস্থিতিতে যাবো। কারও আশঙ্কা করার কিছু নেই। আমরা আশাবাদী, আমরা মোটামুটি গুছিয়ে ফেলেছি।

সমন্বিতভাবে কাজ করা দরকার জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, এ ক্ষেত্রে সেটি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শেষ মুহূর্তে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে জ্বালানির যোগান দেওয়ার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এ জায়গাটায় তাই হয়েছে। আমরা বহু আগে থেকে বলে আসছিলাম, আল্টিমেটলি আমাদের এ যোগান দিতে হবে। দেরি হয়ে গেছে সেজন্য আমাদের মাথা পেতে নিতে হবে। আমরা সবাই এর ভুক্তভোগী।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট-হরিরামপুর সড়কটি যেন মরণফাঁদ

লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি দুই সপ্তাহের মধ্যে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রোববার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি বলেন, গ্যাস, কয়লা এবং তেলের যোগান দিতে আমাদের সময় লাগছে। লোডশেডিংয়ের আকার খানিকটা বড় হয়েছে। পরিস্থিতি অনেকটা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সমাধান করার। আমরা আশা করছি আগামী দশ থেকে পনেরো দিনের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে।

লোডশেডিং প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের লোডশেডিং বেড়ে গেছে। আমরা বারবার বলে আসছিলাম, আমাদের যে ফুয়েল গ্যাস কয়লা তেল, দীর্ঘ সময় লাগছে এগুলো যোগান দিতে। এ কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের জায়গাটা আরও দীর্ঘতর হচ্ছে।

নসরুল হামিদ বলেন, এখন যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে আমরা দেখছি পরিস্থিতি অনেকটা অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে চেষ্টা করছি এটা কত দ্রুত সমাধান করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে এটা সমাধানের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ে পায়রাতে কয়লা নিয়ে আসার চেষ্টা আমরা করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বড়পুকুরিয়াতে আমাদের পাওয়ার প্লান্টটি অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। আমাদের লিকুয়িট ফুয়েল যে পাওয়ার প্লান্টগুলো ছিল সেগুলো প্রায় অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। যে কারণে আমাদের লোডশেডিংয়ের মাত্রাটা অনেক বেড়ে গেছে।

লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে ঢাকার আশপাশে গ্রামাঞ্চলেসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা সকাল থেকে এটা মনিটর করছি। আমরা বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এটার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

নসরুল হামিদ বলেন, আমরা অচিরেই চেষ্টা করছি যে, এই অবস্থা থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। আমরা আশা করছি ১০-১৫ সময়ের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে বেরিয়ে আসা যায়। কারণ আমাদের কয়লা যোগান দিতে হচ্ছে, তেলের যোগান দিতে হচ্ছে, গ্যাসের যোগান দিতে হচ্ছে। আবার ইন্ডাস্ট্রিতেও গ্যাস যোগান দিতে হচ্ছে। এই সমস্ত পরিস্থিতি একসাথে এসেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে পরিমাণ হিট ওয়েদার দেখছি আমরা, তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে আমাদের পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে মজুদ ছিল পাওয়ার প্লান্টের জন্য, আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ রাখতে চেষ্টা করছিলাম। সেটাও আমরা জ্বালানির কারণে দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, তাপপ্রবাহও বেড়ে গেছে। তাপমাত্রা কোথাও ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে গেছে। এজন্য আমাদের পিক আওয়ারে ডিমান্ডও বেড়ে গেছে। আমাদের হাতে যে পাওয়ার প্ল্যান্ট মজুত ছিল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য প্রস্তুত রাখছিলাম, সেটাও আমরা জ্বালানির কারণে দিতে পারছি না।

আগের মত সিডিউল লোডশেডিংয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা আছে কি না-জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এ মুহূর্তে সেভাবে যাচ্ছি না। কিছু জায়গায় আমরা কিছুটা লোডশেডিং করছি। আবার সেটা থেকে ফেরার চেষ্টা করছি। আমাদের ফুয়েল অর্থাৎ কয়লা, গ্যাস, তেলের সংকট। আমরা ঠিকমতো যোগান দিতে পারছি না। সেই কারণেই ঝামেলাটা হচ্ছে। তবে আমি মনে করি এটা খুব সাময়িক, এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এরই মধ্যে যোগানের চেষ্টা হয়ে গেছে, আমরা চেষ্টা করছি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে একটা ভালো জায়গায় যেতে পারব।

পরিস্থিতির উন্নতির জন্য এখন কেন চেষ্টা করা হচ্ছে, আগে কেন করা হয়নি-জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা দু’মাস আগে থেকে চেষ্টা করছিলাম। আমরা জানতাম যে এ রকম একটা পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। সেটার সমাধান নিয়ে আমরা চেষ্টা করছিলাম।

এর মধ্যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে পেট্রোল পাম্পে অকটেন দিতে পারছে না-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পেট্রোলের তো অভাব নেই। আমরা যেটা আনার চেষ্টা করছি সেটা হেভি ফুয়েল, সেটা দিয়ে তো গাড়ি চলে না। আমরা প্রচুর পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার চেষ্টা করছি।’

নসরুল হামিদ আরও বলেন, বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসছে, বাকি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আসবে। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আমরা একটা ভালো পরিস্থিতিতে যাবো। কারও আশঙ্কা করার কিছু নেই। আমরা আশাবাদী, আমরা মোটামুটি গুছিয়ে ফেলেছি।

সমন্বিতভাবে কাজ করা দরকার জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, এ ক্ষেত্রে সেটি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শেষ মুহূর্তে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে জ্বালানির যোগান দেওয়ার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এ জায়গাটায় তাই হয়েছে। আমরা বহু আগে থেকে বলে আসছিলাম, আল্টিমেটলি আমাদের এ যোগান দিতে হবে। দেরি হয়ে গেছে সেজন্য আমাদের মাথা পেতে নিতে হবে। আমরা সবাই এর ভুক্তভোগী।