Dhaka বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটে দাঁড়ানো ট্রেনে ইঞ্জিনের ধাক্কায় আহত ৫০

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • ১৯৮ জন দেখেছেন

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : 

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীসহ কয়েকটি বগিতে নিয়ন্ত্রণ হারানো এক ইঞ্জিনের ধাক্কা দেওয়ার ফলে ট্রেনের অন্তত ৫০ যাত্রী আহত হয়েছেন।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট রেলস্টেশনে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী ৪৬১ নং ট্রেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহতরা হলেন— শেফালি আক্তার (৪০), সামিনা খাতুন (৬২), নবিজুল ইসলাম (৬০), জাহেদুল ইসলাম। গুরুতর আহত চারজনকে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা রেলওয়ের হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুড়িমারী থেকে পার্বতীপুরগামী ৪৫৬/৪৬১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি লালমনিরহাট স্টেশনে আসলে অন্য একটি ইঞ্জিন বদলের জন্য বগিগুলোর সঙ্গে সংযোগের উদ্দেশ্যে লোকোশেড থেকে এগিয়ে আসতে থাকে। এসময় রেলওয়ের লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ ইঞ্জিনটি চালাচ্ছিলেন। বগির কাছাকাছি আসার সময় ইঞ্জিনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দ্রুত গতিতে বগিগুলোকে ধাক্কা দিলে বিকট শব্দ হয়। এতে বগির অভ্যন্তরে থাকা অর্ধশত যাত্রী ছিটকে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে আতঙ্কে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন। আহতদের মধ্যে চারজনকে পাশেই থাকা রেলওয়ের বিভাগীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাকিরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নেন।

দুর্ঘটনায় আহত শেফালি আক্তার বলেন, আমি ভেবেছিলাম ইঞ্জিন বদলের সময় তেমন জোরে ধাক্কা দেয় না। কিন্তু কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইঞ্জিন প্রবল বেগে ধাক্কা দিলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার মাথায় দুইটি সেলাই পড়েছে।

আহত নবিজুল ইসলাম বলেন, আমার রংপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠেছিলাম। হঠাৎ ধাক্কায় আমার মাথা সিটের লোহায় লেগে ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল। বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে। পরে আমাকে লোকজন হাসপাতালে পাঠিয়েছে, সেখানে আমার মাথায় চারটি শেলাই দিয়েছে ডাক্তার।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজ বলেন, আমাদের এখানে জরুরি বিভাগে গুরুতর চারজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে শুনেছি।

এ ব্যাপারে লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ দাস বলেন, ইঞ্জিনের ব্রেক লাগাতে দেরি হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইঞ্জিনের গতি ঘণ্টায় দশ কিলোমিটার ছিল বলে তিনি দাবি করেন।

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নূরনবী বলেন, একটা ইঞ্জিন বদল হয়ে আরেকটা ইঞ্জিন সংযোগ নেওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোরে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই ইঞ্জিনের লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ সেই ট্রেন নিয়ে ইতোমধ্যে রওনা করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনেছেন, তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

জানতে চাইলে রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনাল ম্যাকানিক্যাল ইন্জিনিয়ার (লোকো) শাহিনুল হক অপু বলেন, আমরা অভিযুক্ত লোকো মাস্টারকে আপাতত আর কোনো ট্রেনের দায়িত্ব দেব না। ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন জমা দিলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১০

লালমনিরহাটে দাঁড়ানো ট্রেনে ইঞ্জিনের ধাক্কায় আহত ৫০

প্রকাশের সময় : ০৮:১০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : 

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীসহ কয়েকটি বগিতে নিয়ন্ত্রণ হারানো এক ইঞ্জিনের ধাক্কা দেওয়ার ফলে ট্রেনের অন্তত ৫০ যাত্রী আহত হয়েছেন।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট রেলস্টেশনে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী ৪৬১ নং ট্রেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহতরা হলেন— শেফালি আক্তার (৪০), সামিনা খাতুন (৬২), নবিজুল ইসলাম (৬০), জাহেদুল ইসলাম। গুরুতর আহত চারজনকে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা রেলওয়ের হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুড়িমারী থেকে পার্বতীপুরগামী ৪৫৬/৪৬১ নম্বর লোকাল ট্রেনটি লালমনিরহাট স্টেশনে আসলে অন্য একটি ইঞ্জিন বদলের জন্য বগিগুলোর সঙ্গে সংযোগের উদ্দেশ্যে লোকোশেড থেকে এগিয়ে আসতে থাকে। এসময় রেলওয়ের লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ ইঞ্জিনটি চালাচ্ছিলেন। বগির কাছাকাছি আসার সময় ইঞ্জিনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দ্রুত গতিতে বগিগুলোকে ধাক্কা দিলে বিকট শব্দ হয়। এতে বগির অভ্যন্তরে থাকা অর্ধশত যাত্রী ছিটকে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে আতঙ্কে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন। আহতদের মধ্যে চারজনকে পাশেই থাকা রেলওয়ের বিভাগীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাকিরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নেন।

দুর্ঘটনায় আহত শেফালি আক্তার বলেন, আমি ভেবেছিলাম ইঞ্জিন বদলের সময় তেমন জোরে ধাক্কা দেয় না। কিন্তু কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইঞ্জিন প্রবল বেগে ধাক্কা দিলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার মাথায় দুইটি সেলাই পড়েছে।

আহত নবিজুল ইসলাম বলেন, আমার রংপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠেছিলাম। হঠাৎ ধাক্কায় আমার মাথা সিটের লোহায় লেগে ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল। বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছে। পরে আমাকে লোকজন হাসপাতালে পাঠিয়েছে, সেখানে আমার মাথায় চারটি শেলাই দিয়েছে ডাক্তার।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজ বলেন, আমাদের এখানে জরুরি বিভাগে গুরুতর চারজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে শুনেছি।

এ ব্যাপারে লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ দাস বলেন, ইঞ্জিনের ব্রেক লাগাতে দেরি হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইঞ্জিনের গতি ঘণ্টায় দশ কিলোমিটার ছিল বলে তিনি দাবি করেন।

লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নূরনবী বলেন, একটা ইঞ্জিন বদল হয়ে আরেকটা ইঞ্জিন সংযোগ নেওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোরে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই ইঞ্জিনের লোকো মাস্টার রাজ গোবিন্দ সেই ট্রেন নিয়ে ইতোমধ্যে রওনা করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনেছেন, তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

জানতে চাইলে রেলওয়ের লালমনিরহাট ডিভিশনাল ম্যাকানিক্যাল ইন্জিনিয়ার (লোকো) শাহিনুল হক অপু বলেন, আমরা অভিযুক্ত লোকো মাস্টারকে আপাতত আর কোনো ট্রেনের দায়িত্ব দেব না। ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন জমা দিলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।