Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লকার থেকে ৫৫ কেজি সোনা গায়েবের ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউস থেকে অন্তত ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় মামলা করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চুরি হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অজ্ঞাত আসামি করে রোববার ( ৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বিমানবন্দর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। মামলার তথ্যটি নিশ্চিত করেন বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুল হক মিঞা।

তিনি বলেন, কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদাম থেকে সোনা চুরির ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি অজ্ঞাত। অজ্ঞাত আসামিদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা নেই। আর এই মামলায় এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার নেই বলেও জানান তিনি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম সোনা খোয়া গেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনার বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এই গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ধারণা, কোনো চক্র সুকৌশলে কাস্টম হাউস থেকে জব্দ স্বর্ণ সরিয়ে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে অল্প অল্প করে সরানো হয়েছে, নাকি একবারেই গায়েব করা তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

এর আগে চুরির চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে গত শনিবার। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় রোববার (৩ সেপ্টেম্বর)। এ ঘটনায় শুল্ক বিভাগ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাজ স্বর্ণ জব্দ করে ঢাকা কাস্টমস হাউজের কাছে হস্তান্তর করা। পরবর্তী বিষয়গুলো ও গুদামে জমা রাখার বিষয়গুলো ঢাকা কাস্টমস হাউজই দেখে। আর বিষয়টি নজরে এসেছেও ঢাকা কাস্টমস হাউজের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তার মাধ্যমেই। এখন তারা তদন্ত করে দেখবে কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত।

ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত চারজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমাদের আইনি পদক্ষেপ চলমান থাকবে।

এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঢাকা কাস্টম হাউজের কমিশনার জানতে পারেন গুদাম থেকে প্রায় ১৫ কেজি সোনা গায়েব হয়েছে। পরে গুদামে থাকা সোনার হিসাব করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি প্রাথমিকভাবে ৫৫ কেজিরও বেশি সোনা গায়েব হওয়ার সত্যতা পেয়েছে।

আরও জানা যায়, গুদামে আনুমানিক ২০০ কেজির বেশি সোনা ছিল। ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া সোনা থেকে ৫৫ কেজিরও বেশি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে কাস্টম বিমানবন্দরে তোলপাড় চলছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

লকার থেকে ৫৫ কেজি সোনা গায়েবের ঘটনায় মামলা

প্রকাশের সময় : ০১:৩৮:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউস থেকে অন্তত ৫৫ দশমিক ৫১ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় মামলা করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। চুরি হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অজ্ঞাত আসামি করে রোববার ( ৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বিমানবন্দর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। মামলার তথ্যটি নিশ্চিত করেন বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুল হক মিঞা।

তিনি বলেন, কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদাম থেকে সোনা চুরির ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি অজ্ঞাত। অজ্ঞাত আসামিদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা নেই। আর এই মামলায় এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার নেই বলেও জানান তিনি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি ৫০১ গ্রাম সোনা খোয়া গেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। সাধারণত বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে জব্দ করা সোনার বার, অলংকারসহ মূল্যবান জিনিস এই গুদামে রাখা হয়। গুদামে রক্ষিত সোনার হিসাব মেলাতে গিয়েই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ধারণা, কোনো চক্র সুকৌশলে কাস্টম হাউস থেকে জব্দ স্বর্ণ সরিয়ে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে অল্প অল্প করে সরানো হয়েছে, নাকি একবারেই গায়েব করা তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

এর আগে চুরির চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঢাকা শুল্ক বিভাগের নজরে আসে গত শনিবার। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় রোববার (৩ সেপ্টেম্বর)। এ ঘটনায় শুল্ক বিভাগ একজন যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাজ স্বর্ণ জব্দ করে ঢাকা কাস্টমস হাউজের কাছে হস্তান্তর করা। পরবর্তী বিষয়গুলো ও গুদামে জমা রাখার বিষয়গুলো ঢাকা কাস্টমস হাউজই দেখে। আর বিষয়টি নজরে এসেছেও ঢাকা কাস্টমস হাউজের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তার মাধ্যমেই। এখন তারা তদন্ত করে দেখবে কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত।

ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত চারজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমাদের আইনি পদক্ষেপ চলমান থাকবে।

এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঢাকা কাস্টম হাউজের কমিশনার জানতে পারেন গুদাম থেকে প্রায় ১৫ কেজি সোনা গায়েব হয়েছে। পরে গুদামে থাকা সোনার হিসাব করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি প্রাথমিকভাবে ৫৫ কেজিরও বেশি সোনা গায়েব হওয়ার সত্যতা পেয়েছে।

আরও জানা যায়, গুদামে আনুমানিক ২০০ কেজির বেশি সোনা ছিল। ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া সোনা থেকে ৫৫ কেজিরও বেশি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে কাস্টম বিমানবন্দরে তোলপাড় চলছে।