Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গারা স্বজনদের ভাসানচরে ডাকছে

ভাষানচর

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ১ হাজার ৬৪২জন রোহিঙ্গাকে ভাষানচরে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাদের জীবনধারণের জন্য উন্নত ব্যবস্থা করা হয়ছে। যা কোনোদিন রোহিঙ্গারা কল্পনাও করেনি। আরাম আয়েশি সেই জীবন ফিরে পেয়ে রোহিঙ্গারা এতোটাই খুশি যে, তারা তাদের স্বজনদেরকেও সেখানে যাওয়ার জন্য ডাকছে।

দুই দিন ধরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ভাসানচরযাত্রার ক্লান্তি। এরপর নতুন পাকা দালানের ঘরে অনেকের জীবনে প্রথমবারের মতো খাটের বিছানায় ঘুম। এবার ঘর গোছানোর পালা। শনিবার সেই কাজেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভাসানচরের নতুন বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে এক হাজার ৬৪২ জনের জীবনের নতুন এক অভিজ্ঞতা, সঙ্গে মুক্ত ও নতুন জীবনের স্বপ্ন। ঘরের কাজ করতে করতেই নিজেদের এই স্বপ্নের সঙ্গী হতে অনেকেই কক্সবাজারের শিবিরে থাকা স্বজনদের ভাসানচরে ডাকছিলেন।

কক্সবাজার থেকে গত শুক্রবার ভাসানচরে স্থানান্তর করা রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি কেমন আছে জানতে গতকাল সরেজমিনে তাদের আবাসস্থল গুচ্ছগ্রাম-৮-এ যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল কালের কণ্ঠ’র এই প্রতিবেদকের। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গ্রামে পা রাখতেই চোখে পড়ে ঘরের বারান্দায় অনেকে কাপড় শুকানোর জন্য তার টানাচ্ছেন। মো. ইসমাইল নামে একজন হাসিমুখে তার সন্তুষ্টির কথা জানান। তিনি বলছিলেন, এখানে খুব ভালো আছেন। বাংলাদেশের সরকার ঘর, বিদ্যুৎ, পানি দিয়েছে।

ইসমাইলের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে উচ্ছ্বসিত সকালের খাবার নিয়ে। সকালের নাশতার সঙ্গে আপেল দেওয়া হবে কখনো ভাবেননি তিনি নিজেও। আপেল খাবে না রেখে দেবে প্রশ্ন করছিল তাঁর ছেলে।

পাশের কক্ষে ইউনুসের পরিবার। চার সদস্যের ওই পরিবারের শিশুরা বিছানায় বসে খেলছিল। সেটা দেখেই আনন্দিত ইউনুস। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনিও বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে বাংলাদেশই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমারে তাঁদের পাকা ঘর বানাতে দেওয়া হতো না।

কোনোভাবে খুপরি ঘর বানিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটিও জ্বালিয়ে দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়ার পর খুপরি ঘরেই থাকতে হতো। পানির সংকটও ছিল। কিন্তু ভাসানচরে ইটের দালানে ঘর, খাট, বিদ্যুতের মতো সুবিধা পেয়ে তার পরিবার অভিভূত।

ইউনুস বলেন, জীবনে প্রথম রাত তিনি ও তার পরিবার পাকা দালানে, খাটের বিছানায় ঘুমিয়েছেন। এ এক বড় প্রশান্তি। তিনি বলেন, কক্সবাজারে স্বজনদের সঙ্গে তার কথা হচ্ছে। তিনি তাদেরকেও ভাসানচরে চলে আসতে বলেছেন।

কয়েক ঘর পরে এক নারীকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। জানালা দিয়ে উঁকি দিতেই তিনি কথা বলতে বলতে বেরিয়ে আসেন। তখন তাকে ফোনে কক্সবাজারে থাকা এক স্বজনকে বলতে শোনা যায়-ঘর আছে, বিদ্যুৎ, পানি, রান্নাঘর আছে। সব ভালো।

কথা হয়েছে ৩০ বছর বয়সী আরেকজনের সঙ্গে। তিনি একা একটি কক্ষ পেয়েছেন। তিনি জানান, মা-বাবাকে কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরে রেখে একাই এসেছেন তিনি। গতকাল সকালে মোবাইল ফোনে তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি চান, তার মা-বাবাও যেন চলে আসেন ভাসানচরে।

আরও পড়ুন : সাতটি জাহাজে দেড় সহস্রাধিক রোহিঙ্গার ভাসানচর যাত্রা

মাঝ বয়সী এক নারী বলেন, সবই ভালো। কিন্তু বাথরুম, টয়লেট কয়েকটি ঘর পরে। তার কথা শেষ না হতেই তার স্বামী বলে ওঠেন, কুতুপালং শিবিরে তো আরো দূরে ছিল। সেখানকার তুলনায় অনেক ভালো।

কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আনা মালামাল শনিবার তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে মানবিক সহায়তাসামগ্রীও বিতরণ শুরু হয়েছে। ভাসানচরে আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রথম পাঁচ-সাত দিন রোহিঙ্গাদের রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাসামগ্রী বিতরণ করা শেষ হলে তারা নিজেরাই কক্সবাজারের ক্যাম্পের মতো রান্না করে খেতে পারবেন।

ভাসানচরের প্রকল্প পরিচালকসহ ২২টি এনজিওর প্রতিনিধিরা শনিবার ভাসানচরে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

ভাসানচরে দেশি-বিদেশি ২২টি এনজিও নিয়ে গড়ে ওঠা জোট ‘এনজিও অ্যালায়েন্স ফর ভাসানচর’-এর সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম বলেন, আগামী এক বছরের মানবিক সহায়তাসামগ্রীর প্রস্তুতি তাদের আছে। দাতাদের সহযোগিতা ছাড়া নিজস্ব উদ্যোগে তারা এ সহায়তা দেবেন। এরই মধ্যে তাঁদের দাতাদের অনেকে ভাসানচরের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ডা. মাহতাব উদ্দিন বলেন, ভাসানচরে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে সার্জারি, কভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চালু হচ্ছে। নৌবাহিনীর সহায়তায় স্পিডবোটের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে জরুরি রোগীকে দ্বীপের বাইরে অন্যত্র নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্প পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাসানচরের জরুরি যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতার জন্য বিমানবাহিনী সব সময় প্রস্তুত।

ভাসানচরে বর্তমানে এক লাখ রোহিঙ্গা থাকার ব্যবস্থা আছে। গত শুক্রবার ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গা দলের নতুন আবাসস্থল নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবের কারণে শিগগিরই আরো রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হতে পারেন এবং পর্যায়ক্রমে তাঁদের সেখানে নেওয়া হতে পারে বলে সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে।

তবে কয়েক মাস আগে সাগর থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নেওয়া ৩০৬ জন রোহিঙ্গার অনেককে আগামী কিছুদিনের মধ্যে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

জানা গেছে, ওই ৩০৬ জনের মধ্যে পূর্ণ পরিবার মাত্র একটি। বাকিদের পরিবারের সদস্যরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে আছেন। তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরতে চান। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কাউকে জোর করে ভাসানচরে নেওয়া হবে না, রাখাও হবে না। বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোর সদস্যরা ভাসানচরে যেতে না চাইলে ভাসানচর থেকে তাদের পর্যায়ক্রমে কক্সবাজারে পাঠানো হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

রোহিঙ্গারা স্বজনদের ভাসানচরে ডাকছে

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৫:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ১ হাজার ৬৪২জন রোহিঙ্গাকে ভাষানচরে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাদের জীবনধারণের জন্য উন্নত ব্যবস্থা করা হয়ছে। যা কোনোদিন রোহিঙ্গারা কল্পনাও করেনি। আরাম আয়েশি সেই জীবন ফিরে পেয়ে রোহিঙ্গারা এতোটাই খুশি যে, তারা তাদের স্বজনদেরকেও সেখানে যাওয়ার জন্য ডাকছে।

দুই দিন ধরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ভাসানচরযাত্রার ক্লান্তি। এরপর নতুন পাকা দালানের ঘরে অনেকের জীবনে প্রথমবারের মতো খাটের বিছানায় ঘুম। এবার ঘর গোছানোর পালা। শনিবার সেই কাজেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভাসানচরের নতুন বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে এক হাজার ৬৪২ জনের জীবনের নতুন এক অভিজ্ঞতা, সঙ্গে মুক্ত ও নতুন জীবনের স্বপ্ন। ঘরের কাজ করতে করতেই নিজেদের এই স্বপ্নের সঙ্গী হতে অনেকেই কক্সবাজারের শিবিরে থাকা স্বজনদের ভাসানচরে ডাকছিলেন।

কক্সবাজার থেকে গত শুক্রবার ভাসানচরে স্থানান্তর করা রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি কেমন আছে জানতে গতকাল সরেজমিনে তাদের আবাসস্থল গুচ্ছগ্রাম-৮-এ যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল কালের কণ্ঠ’র এই প্রতিবেদকের। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গ্রামে পা রাখতেই চোখে পড়ে ঘরের বারান্দায় অনেকে কাপড় শুকানোর জন্য তার টানাচ্ছেন। মো. ইসমাইল নামে একজন হাসিমুখে তার সন্তুষ্টির কথা জানান। তিনি বলছিলেন, এখানে খুব ভালো আছেন। বাংলাদেশের সরকার ঘর, বিদ্যুৎ, পানি দিয়েছে।

ইসমাইলের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে উচ্ছ্বসিত সকালের খাবার নিয়ে। সকালের নাশতার সঙ্গে আপেল দেওয়া হবে কখনো ভাবেননি তিনি নিজেও। আপেল খাবে না রেখে দেবে প্রশ্ন করছিল তাঁর ছেলে।

পাশের কক্ষে ইউনুসের পরিবার। চার সদস্যের ওই পরিবারের শিশুরা বিছানায় বসে খেলছিল। সেটা দেখেই আনন্দিত ইউনুস। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনিও বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে বাংলাদেশই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমারে তাঁদের পাকা ঘর বানাতে দেওয়া হতো না।

কোনোভাবে খুপরি ঘর বানিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটিও জ্বালিয়ে দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়ার পর খুপরি ঘরেই থাকতে হতো। পানির সংকটও ছিল। কিন্তু ভাসানচরে ইটের দালানে ঘর, খাট, বিদ্যুতের মতো সুবিধা পেয়ে তার পরিবার অভিভূত।

ইউনুস বলেন, জীবনে প্রথম রাত তিনি ও তার পরিবার পাকা দালানে, খাটের বিছানায় ঘুমিয়েছেন। এ এক বড় প্রশান্তি। তিনি বলেন, কক্সবাজারে স্বজনদের সঙ্গে তার কথা হচ্ছে। তিনি তাদেরকেও ভাসানচরে চলে আসতে বলেছেন।

কয়েক ঘর পরে এক নারীকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। জানালা দিয়ে উঁকি দিতেই তিনি কথা বলতে বলতে বেরিয়ে আসেন। তখন তাকে ফোনে কক্সবাজারে থাকা এক স্বজনকে বলতে শোনা যায়-ঘর আছে, বিদ্যুৎ, পানি, রান্নাঘর আছে। সব ভালো।

কথা হয়েছে ৩০ বছর বয়সী আরেকজনের সঙ্গে। তিনি একা একটি কক্ষ পেয়েছেন। তিনি জানান, মা-বাবাকে কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরে রেখে একাই এসেছেন তিনি। গতকাল সকালে মোবাইল ফোনে তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি চান, তার মা-বাবাও যেন চলে আসেন ভাসানচরে।

আরও পড়ুন : সাতটি জাহাজে দেড় সহস্রাধিক রোহিঙ্গার ভাসানচর যাত্রা

মাঝ বয়সী এক নারী বলেন, সবই ভালো। কিন্তু বাথরুম, টয়লেট কয়েকটি ঘর পরে। তার কথা শেষ না হতেই তার স্বামী বলে ওঠেন, কুতুপালং শিবিরে তো আরো দূরে ছিল। সেখানকার তুলনায় অনেক ভালো।

কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আনা মালামাল শনিবার তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে মানবিক সহায়তাসামগ্রীও বিতরণ শুরু হয়েছে। ভাসানচরে আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রথম পাঁচ-সাত দিন রোহিঙ্গাদের রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাসামগ্রী বিতরণ করা শেষ হলে তারা নিজেরাই কক্সবাজারের ক্যাম্পের মতো রান্না করে খেতে পারবেন।

ভাসানচরের প্রকল্প পরিচালকসহ ২২টি এনজিওর প্রতিনিধিরা শনিবার ভাসানচরে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

ভাসানচরে দেশি-বিদেশি ২২টি এনজিও নিয়ে গড়ে ওঠা জোট ‘এনজিও অ্যালায়েন্স ফর ভাসানচর’-এর সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কলিম বলেন, আগামী এক বছরের মানবিক সহায়তাসামগ্রীর প্রস্তুতি তাদের আছে। দাতাদের সহযোগিতা ছাড়া নিজস্ব উদ্যোগে তারা এ সহায়তা দেবেন। এরই মধ্যে তাঁদের দাতাদের অনেকে ভাসানচরের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ডা. মাহতাব উদ্দিন বলেন, ভাসানচরে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে সার্জারি, কভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চালু হচ্ছে। নৌবাহিনীর সহায়তায় স্পিডবোটের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে জরুরি রোগীকে দ্বীপের বাইরে অন্যত্র নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্প পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাসানচরের জরুরি যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতার জন্য বিমানবাহিনী সব সময় প্রস্তুত।

ভাসানচরে বর্তমানে এক লাখ রোহিঙ্গা থাকার ব্যবস্থা আছে। গত শুক্রবার ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গা দলের নতুন আবাসস্থল নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবের কারণে শিগগিরই আরো রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হতে পারেন এবং পর্যায়ক্রমে তাঁদের সেখানে নেওয়া হতে পারে বলে সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে।

তবে কয়েক মাস আগে সাগর থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নেওয়া ৩০৬ জন রোহিঙ্গার অনেককে আগামী কিছুদিনের মধ্যে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

জানা গেছে, ওই ৩০৬ জনের মধ্যে পূর্ণ পরিবার মাত্র একটি। বাকিদের পরিবারের সদস্যরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে আছেন। তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরতে চান। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কাউকে জোর করে ভাসানচরে নেওয়া হবে না, রাখাও হবে না। বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোর সদস্যরা ভাসানচরে যেতে না চাইলে ভাসানচর থেকে তাদের পর্যায়ক্রমে কক্সবাজারে পাঠানো হবে।