Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা সহায়তা প্রকল্পের মেয়াদ ও অনুদান বাড়ছে

রোহিঙ্গা ক্যাম্প

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্পের অনুদান, মেয়াদ ও কর্মক্ষেত্র বাড়ছে। এ জন্য প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। সেখানে প্রকল্পটির ব্যয় ৯৩০ কোটি টাকা বাড়ানোর পাশাপাশি মেয়াদও ২ বছর ৭ মাস (৩১ মাস) বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকা দুটি উপজেলা থেকে বাড়িয়ে আটটির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ শেষে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আরও ৩টি প্রকল্প এদিন একনেকে উপস্থাপন করা হবে। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে গণভবন থেকে বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ, কালভার্ট, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টার, সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ, এফএসসিডি’র বিদ্যমান ফেসিলিটি উন্নয়ন, অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রপাতি, পরিচালন ও মিনি পাইপে পানি সরবরাহ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কমিউনিটি ল্যাট্রিন, রক্ষণাবেক্ষণসহ বায়োগ্যাস ল্যাট্রিন, ওয়াটার অপশন স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণসহ পয়ঃনিস্কাশন ও কঠিন ময়লা নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন। এছাড়া বিদ্যমান টয়লেট সংস্কারসহ বাসা-বাড়িতে বায়োফিল টয়লেট স্থাপন করা হবে।

প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় জনসাধারণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। এছাড়া অগ্নি দুঘর্টনায় ক্ষয়ক্ষতি কমবে। তাই প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য।

সূত্র জানায়, ‘জুরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনুমোদন দেয় একনেক। এবার ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ২ বছর ৭ মাস মেয়াদ বাড়িয়ে প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবে ৯৩০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই হিসাবে এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

আরও পড়ুন : হাওরে উড়াল সড়ক প্রকল্প : এ মাসেই একনেকে অনুমোদন

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন এস্টেটে নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত শিবিরে আশ্রয় নেয়। এতে সংশ্লিষ্ট উপজেলার জনসংখ্যা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়। বিদ্যমান অবকাঠামো যেমন, রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট, ড্রেন, সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর চরম চাপ সৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অগ্নিজনিত দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তারা অতিমাত্রায় ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অনুদানে মোট ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেকে মূল প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পের কার্যক্রম এলজিইডি, এফএসসিডি এবং ডিপিএইচ এই তিনটি সংস্থার আওতাভুক্ত। একই প্রকল্পের আওতায় ডিপিএইচ’র কার্যক্রম নিজেরা বাস্তবায়ন করছে এবং এফএসসিডি ও এলজিইডির অঙ্গগুলো এলজিইডি বাস্তবায়ন করছে।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণের কল্যাণে বিশ্বব্যাংক অতিরিক্ত ১০ কোটি ডলার এবং কেএফডব্লিউ ৭০ লাখ ইউরো অতিরিক্ত অনুদান সহায়তা দেয়। ফলে কক্সবাজার জেলার সকল উপজেলায় সুষম উন্নয়নের জন্য প্রকল্প এলাকা দুটি উপজেলা থেকে বাড়িয়ে আটটি উপজেলা করাসহ প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর ৭ মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর হতে ২০২৪ সালে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে কক্সবাজারের নতুন ছয়টিসহ মোট আটটি উপজেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া এবং কাজের পরিমাণ বাড়ানো হবে। ২০১৯ সালের রেট সিডিউল কার্যকর হওয়ায় সে অনুযায়ী প্রকল্পের অবশিষ্ট পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলন করা হবে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তনজনিত কারণে আরপিএ অংশে সমন্বয় ও প্রকল্পের কার্যপরিধি বাড়ানো হবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আজ থেকে দেশের ৬৪ জেলায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে : সংস্কৃতি উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সহায়তা প্রকল্পের মেয়াদ ও অনুদান বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ০৫:১৮:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্পের অনুদান, মেয়াদ ও কর্মক্ষেত্র বাড়ছে। এ জন্য প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। সেখানে প্রকল্পটির ব্যয় ৯৩০ কোটি টাকা বাড়ানোর পাশাপাশি মেয়াদও ২ বছর ৭ মাস (৩১ মাস) বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকা দুটি উপজেলা থেকে বাড়িয়ে আটটির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ শেষে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আরও ৩টি প্রকল্প এদিন একনেকে উপস্থাপন করা হবে। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে গণভবন থেকে বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ, কালভার্ট, মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টার, সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ, এফএসসিডি’র বিদ্যমান ফেসিলিটি উন্নয়ন, অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রপাতি, পরিচালন ও মিনি পাইপে পানি সরবরাহ, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কমিউনিটি ল্যাট্রিন, রক্ষণাবেক্ষণসহ বায়োগ্যাস ল্যাট্রিন, ওয়াটার অপশন স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণসহ পয়ঃনিস্কাশন ও কঠিন ময়লা নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন। এছাড়া বিদ্যমান টয়লেট সংস্কারসহ বাসা-বাড়িতে বায়োফিল টয়লেট স্থাপন করা হবে।

প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় জনসাধারণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। এছাড়া অগ্নি দুঘর্টনায় ক্ষয়ক্ষতি কমবে। তাই প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য।

সূত্র জানায়, ‘জুরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনুমোদন দেয় একনেক। এবার ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ২ বছর ৭ মাস মেয়াদ বাড়িয়ে প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবে ৯৩০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই হিসাবে এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

আরও পড়ুন : হাওরে উড়াল সড়ক প্রকল্প : এ মাসেই একনেকে অনুমোদন

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন এস্টেটে নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত শিবিরে আশ্রয় নেয়। এতে সংশ্লিষ্ট উপজেলার জনসংখ্যা দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়। বিদ্যমান অবকাঠামো যেমন, রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট, ড্রেন, সুপেয় পানি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর চরম চাপ সৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অগ্নিজনিত দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তারা অতিমাত্রায় ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অনুদানে মোট ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেকে মূল প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পের কার্যক্রম এলজিইডি, এফএসসিডি এবং ডিপিএইচ এই তিনটি সংস্থার আওতাভুক্ত। একই প্রকল্পের আওতায় ডিপিএইচ’র কার্যক্রম নিজেরা বাস্তবায়ন করছে এবং এফএসসিডি ও এলজিইডির অঙ্গগুলো এলজিইডি বাস্তবায়ন করছে।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণের কল্যাণে বিশ্বব্যাংক অতিরিক্ত ১০ কোটি ডলার এবং কেএফডব্লিউ ৭০ লাখ ইউরো অতিরিক্ত অনুদান সহায়তা দেয়। ফলে কক্সবাজার জেলার সকল উপজেলায় সুষম উন্নয়নের জন্য প্রকল্প এলাকা দুটি উপজেলা থেকে বাড়িয়ে আটটি উপজেলা করাসহ প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর ৭ মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর হতে ২০২৪ সালে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে কক্সবাজারের নতুন ছয়টিসহ মোট আটটি উপজেলায় উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া এবং কাজের পরিমাণ বাড়ানো হবে। ২০১৯ সালের রেট সিডিউল কার্যকর হওয়ায় সে অনুযায়ী প্রকল্পের অবশিষ্ট পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলন করা হবে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তনজনিত কারণে আরপিএ অংশে সমন্বয় ও প্রকল্পের কার্যপরিধি বাড়ানো হবে।