Dhaka রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্পে আতঙ্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভূমিকম্পজনিত আতঙ্ক ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে রোববার (২৩ নভেম্বর) থেকে ১৫ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া আগামী রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে ঢাবি শিক্ষার্থীদের হলগুলো খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হলগুলো ঠিকঠাক করে পরে বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালু করা হবে।

শনিবার (২১ নভেম্বর) ঢাবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ এ তথ্য জানান। ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ভূমিকম্পের পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে। হলগুলোর পুরোনো অবস্থা আছে। হলগুলোর ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও মেরামত করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সেই কারিগরি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রকৌশলীদের ভাষ্যমতে চার সপ্তাহ প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এজন্য সব হল খালি করা প্রয়োজন। ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকবে। আগামী রোববার বিকেল ৫টা থেকে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হলো।

তিনি আরও বলেন, হল ছাড়ার সময় যেহেতু তাদের রুম পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তাই তারা চাবিগুলো সংশ্লিষ্ট হাউজ টিউটরকে দিতে বলা হলো।

এদিকে ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও তৎপরবর্তী ঝাঁকুনির কারণে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক আঘাতের বিষয়টি বিবেচনা করা হয় এবং তাদের সার্বিক নিরাপত্তার দিক সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। সভায় বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের পরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলীর মতামত বিশ্লেষণ করা হয়।

এতে বলা হয়, প্রকৌশলীদের মতামত হলো ভূমিকম্প পরবর্তী আবাসিক হলগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামগ্রিক ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। এই ঝুঁকি নিরূপণ ও সম্ভাব্য সংস্কারের স্বার্থে আবাসিক হলগুলো খালি করা প্রয়োজন। এ কারণে সভায় আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা এবং আবাসিক হলগুলো খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী রোববার বিকেল ৫টার মধ্যে আবাসিক হলসগুলো খালি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সভায় প্রাধ্যক্ষদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

এর আগে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম এক ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাদিক কায়েম বলেন, “পরপর দুইদিন ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কনসার্নগুলো আমরা মাননীয় ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার স্যারদের অবগত করি।”

তিনি বলেন, “এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি এসএমটি এবং সিন্ডিকেট মিটিং আহ্বান করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মিটিংয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব হলের প্রতিটি কক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ডাকসুর ভিপি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভূমিকম্প পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।”

উল্লেখ্য, ঢাবির অফিস যথারীতি খোলা থাকবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ভূমিকম্পে আতঙ্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিন বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশের সময় : ০৯:৪১:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভূমিকম্পজনিত আতঙ্ক ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে রোববার (২৩ নভেম্বর) থেকে ১৫ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া আগামী রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে ঢাবি শিক্ষার্থীদের হলগুলো খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হলগুলো ঠিকঠাক করে পরে বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালু করা হবে।

শনিবার (২১ নভেম্বর) ঢাবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ এ তথ্য জানান। ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।

সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ভূমিকম্পের পর যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে। হলগুলোর পুরোনো অবস্থা আছে। হলগুলোর ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও মেরামত করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সেই কারিগরি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রকৌশলীদের ভাষ্যমতে চার সপ্তাহ প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এজন্য সব হল খালি করা প্রয়োজন। ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকবে। আগামী রোববার বিকেল ৫টা থেকে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হলো।

তিনি আরও বলেন, হল ছাড়ার সময় যেহেতু তাদের রুম পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তাই তারা চাবিগুলো সংশ্লিষ্ট হাউজ টিউটরকে দিতে বলা হলো।

এদিকে ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও তৎপরবর্তী ঝাঁকুনির কারণে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক আঘাতের বিষয়টি বিবেচনা করা হয় এবং তাদের সার্বিক নিরাপত্তার দিক সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। সভায় বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের পরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলীর মতামত বিশ্লেষণ করা হয়।

এতে বলা হয়, প্রকৌশলীদের মতামত হলো ভূমিকম্প পরবর্তী আবাসিক হলগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামগ্রিক ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। এই ঝুঁকি নিরূপণ ও সম্ভাব্য সংস্কারের স্বার্থে আবাসিক হলগুলো খালি করা প্রয়োজন। এ কারণে সভায় আগামী ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা এবং আবাসিক হলগুলো খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী রোববার বিকেল ৫টার মধ্যে আবাসিক হলসগুলো খালি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সভায় প্রাধ্যক্ষদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

এর আগে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম এক ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাদিক কায়েম বলেন, “পরপর দুইদিন ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কনসার্নগুলো আমরা মাননীয় ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার স্যারদের অবগত করি।”

তিনি বলেন, “এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি এসএমটি এবং সিন্ডিকেট মিটিং আহ্বান করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মিটিংয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব হলের প্রতিটি কক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ডাকসুর ভিপি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভূমিকম্প পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।”

উল্লেখ্য, ঢাবির অফিস যথারীতি খোলা থাকবে।