নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনা, ২০১৩ সালের সাভারের রানা প্লাজা ধসকে ‘আওয়ামী লীগের তৈরি ট্র্যাজেডি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (১২ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মর্মান্তিক ঘটনার মূল কারণ হিসেবে ভবন মালিকের রাজনৈতিক প্রভাব ও নিয়ম ভাঙার সংস্কৃতিকে দায়ী করেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মতে, ভবন ধসের মূল দায়ী ছিলেন ভবন মালিক সোহেল রানা। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে সরকারি নিয়ম ও সতর্কবার্তাকে উপেক্ষা করেছিলেন। ভবন ধসের এক দিন আগে প্রকৌশলীরা ভবনটিকে ‘অপরিচালনাযোগ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তবুও সোহেল রানা শ্রমিকদের জোর করে ভবনে ফিরিয়ে আনেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস–এর দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরোপ্রধান জিম ইয়ার্ডলি রিপোর্টে স্পষ্টভাবে রানা ও তার রাজনৈতিক আশ্রিতদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তুলে ধরেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ভেতরে সরকারি ও স্থানীয় প্রচারমাধ্যম এ বিষয়টি স্বচ্ছভাবে তুলে ধরতে পারেনি। শফিকুল আলম বলেন, স্থানীয় পত্রিকাগুলোকে মূলত উদ্ধার অভিযান ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকতে বলা হয়, যাতে রানা ও তার রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ না পায়। প্রশাসন ও পুলিশও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সরাসরি কিছু করতে পারেনি।
প্রেস সচিব মন্তব্য করেন, রানা একক কোনো ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনি এটিকে একটি প্রাত্যহিক ব্যবস্থার ফলাফল হিসেবে বর্ণনা করেন। শফিকুল আলম বলেন, প্রায় ১৬ বছরের শাসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়ে স্থানীয় ‘দানবপ্রধান’ তৈরি হয়েছে। সোহেল রানা, নিজাম হাজারী ও শামীম ওসমান তাদের নিজ নিজ এলাকায় ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতীক হিসেবে কাজ করেছেন। শিক্ষিত সমাজেও এটি লক্ষ্য করা যায় ‘আওয়ামী চেতনা রক্ষার’ নামে মেধাবী ছাত্রদের সহিংস আচরণ এক ধরণের বিষাক্ত আনুগত্যের প্রকাশ।
তিনি এইসব ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেন। শফিকুল আলমের মতে, এই সব ঘটনা দেশের ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির একটি অনিবার্য পরিণতি।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















