Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৬ জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীতে ডাকাতি-ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। দিনে গাড়ির হেলপার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, রাজমিস্ত্রির কাজ করার আড়ালে এসব অপরাধে জড়াচ্ছে এরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ এলাকা থেকে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২) যারা মূলত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।

গ্রেপ্তাররা দিনে গাড়ির হেলপার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, রাজমিস্ত্রির কাজ করে। এসব গ্রুপের সদস্যরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেশিয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারি, মাদকসহ বিভিন্ন ধরণের বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমেও জড়িত। গত দু’দিন রাজধানীর মিরপুর, দারুস সালাম এবং ঢাকার সাভার এলাকা থেকে ‘লেভেল হাই’, ‘চাঁন গ্রুপ’, ‘মাউরা ইমরান গ্রুপ’ ‘ল্যাংরা নুরু’, ‘পটোটো রুবেল’ ও ‘কিং শাওন’ গ্রুপের লিডারসহ ৪৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের এই ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কিশোর গ্যাং সদস্যরা ডাকাতি-চাঁদাবাজিতেও জড়িত। প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। কেউ কেউ জেলও খেটেছিল। ছাড়া পেয়ে আবার অপকাণ্ডে জড়িয়েছে তারা। এর মধ্যে পাটালি গ্রুপের ৫, লেভেল হাই গ্রুপের ৬, চাঁন গ্রুপের ৬, লও ঠ্যালা গ্রুপের ৫ ও মাউরা ইমরান গ্রুপের ৭ সদস্য রয়েছে। বাকি ৭ জন অন্য গ্রুপের সদস্য। এক একটি গ্রুপে ২০-১৫ জন করে সদস্য থাকে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

অন্যদিকে মিরপুর, দারুস সালাম এবং ঢাকার সাভার এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং ‘ল্যাংরা নুরু’, ‘পটোটো রুবেল’ ও ‘কিং শাওন’ গ্রুপের লিডারসহ ২১ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪। র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মিরপুর, দারুসসালাম, পল্লবী, শাহ আলী এলাকায় বেশ কিছু কিশোরগ্যাং সক্রিয় রয়েছে। তন্মধ্যে ‘ল্যাংরা নুরু’ ও ‘পটোটো রুবেল’ এর লিডারসহ ৭০-৮০ জনের সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এ গ্যাংয়ের সদস্যরা মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, ভাষানটেকসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি, মাদক সেবন ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। চিহ্নিত এসব বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অত্যাচারে বাসস্ট্যান্ডে আসা দূর-দূরান্তের যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন অতিষ্ঠ ও অসহায় হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের লিডার ‘ল্যাংরা নুরু’ ও ‘পটেটো রুবেল’ এর সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন বাস-ট্রাকে চুরি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি করে আসছিল। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বাস-ট্রাকের গতিরোধ করে চালকদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালকদের গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাছাড়াও ফুটপাতের দোকানদাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের মারধর করে। ‘ল্যাংরা নুরু’ গ্রুপের লিডার শাহআলম ওরফে ল্যাংরা নুরুর বিরুদ্ধে মিরপুর, কাফরুল ও শেরেবাংলা নগর থানায় মারামারি এবং খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত ৫টি মামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের ৩৬ জন গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ১০:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীতে ডাকাতি-ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। দিনে গাড়ির হেলপার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, রাজমিস্ত্রির কাজ করার আড়ালে এসব অপরাধে জড়াচ্ছে এরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ এলাকা থেকে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২) যারা মূলত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।

গ্রেপ্তাররা দিনে গাড়ির হেলপার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, রাজমিস্ত্রির কাজ করে। এসব গ্রুপের সদস্যরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেশিয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারি, মাদকসহ বিভিন্ন ধরণের বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমেও জড়িত। গত দু’দিন রাজধানীর মিরপুর, দারুস সালাম এবং ঢাকার সাভার এলাকা থেকে ‘লেভেল হাই’, ‘চাঁন গ্রুপ’, ‘মাউরা ইমরান গ্রুপ’ ‘ল্যাংরা নুরু’, ‘পটোটো রুবেল’ ও ‘কিং শাওন’ গ্রুপের লিডারসহ ৪৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইন-শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের এই ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কিশোর গ্যাং সদস্যরা ডাকাতি-চাঁদাবাজিতেও জড়িত। প্রত্যেকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। কেউ কেউ জেলও খেটেছিল। ছাড়া পেয়ে আবার অপকাণ্ডে জড়িয়েছে তারা। এর মধ্যে পাটালি গ্রুপের ৫, লেভেল হাই গ্রুপের ৬, চাঁন গ্রুপের ৬, লও ঠ্যালা গ্রুপের ৫ ও মাউরা ইমরান গ্রুপের ৭ সদস্য রয়েছে। বাকি ৭ জন অন্য গ্রুপের সদস্য। এক একটি গ্রুপে ২০-১৫ জন করে সদস্য থাকে। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশিয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

অন্যদিকে মিরপুর, দারুস সালাম এবং ঢাকার সাভার এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং ‘ল্যাংরা নুরু’, ‘পটোটো রুবেল’ ও ‘কিং শাওন’ গ্রুপের লিডারসহ ২১ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪। র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মিরপুর, দারুসসালাম, পল্লবী, শাহ আলী এলাকায় বেশ কিছু কিশোরগ্যাং সক্রিয় রয়েছে। তন্মধ্যে ‘ল্যাংরা নুরু’ ও ‘পটোটো রুবেল’ এর লিডারসহ ৭০-৮০ জনের সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এ গ্যাংয়ের সদস্যরা মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, ভাষানটেকসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি, মাদক সেবন ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। চিহ্নিত এসব বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অত্যাচারে বাসস্ট্যান্ডে আসা দূর-দূরান্তের যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন অতিষ্ঠ ও অসহায় হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের লিডার ‘ল্যাংরা নুরু’ ও ‘পটেটো রুবেল’ এর সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন বাস-ট্রাকে চুরি, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজি করে আসছিল। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বাস-ট্রাকের গতিরোধ করে চালকদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালকদের গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। তাছাড়াও ফুটপাতের দোকানদাররা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের মারধর করে। ‘ল্যাংরা নুরু’ গ্রুপের লিডার শাহআলম ওরফে ল্যাংরা নুরুর বিরুদ্ধে মিরপুর, কাফরুল ও শেরেবাংলা নগর থানায় মারামারি এবং খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত ৫টি মামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।