Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজানেও আন্দোলন চলবে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে রমজানেও সারাদেশে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ক্লাবে ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি। ওলামা-মাশায়েক এবং এতিমদের সম্মানে ইফতারে আয়োজন করে বিএনপি। ইফতারে আগে বিশেষ মোনাজাত করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নেছারুল হক।

তিনি বলেন, রমজানে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার ইচ্ছা না থাকলেও সরকার বিএনপিকে কর্মসূচি দিতে বাধ্য করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। দেশে এমন সরকার রয়েছে, যারা নির্বাচিত নন। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করছে। সারা দেশে রমজানের মাঝেও এ দাবি নিয়ে আন্দোলন চলমান থাকবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন আমরা চালিয়ে যেতে চাই। আমরা আশা করব সাধারণ মানুষ এসব কর্মসূচি সফল করবে।

তিনি বলেন, এ রমজান মাসেও যে সমস্ত জিনিসগুলো মানুষকে কষ্ট দেয় তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখব। রমজান মাসে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু আজকে দেশের যে অবস্থা তৈরি হয়েছে আমরা বাধ্য হয়েছি এ রমজান মাসেও সাধারণ মানুষকে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার যে আন্দোলন তা চলমান রাখতে। সে কারণে এ কর্মসূচি দিয়েছি। আমরা আশ করব, সেই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ অংশ নেবে।

তিনি বলেন, আজকে দেশ ও জাতি চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে। এখন দলমত নির্বিশেষ সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের সংসদ গঠন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এমন এক সময়ে আমরা ইফতার মাহফিল করছি যখন দেশে সাধারণ মানুষ অত্যন্ত কষ্টে দিন যাপন করছে। ইফতারের সময় ন্যূনতম যে খাদ্যদ্রব্য দরকার, সেগুলোর দাম আকাশচুম্বী যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। প্রতিটি জিনিসের দাম আজকে বেড়ে গেছে। এই দাম বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে আওয়ামী সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি। আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। সাধারণ মানুষের শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে। আমরা এই দুঃসহ অবস্থার অবসান চাই। এই অবস্থায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেসব বিষয় মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে, তা নিযে আমরা আমাদের কর্মসূচি চলমান রাখবো।

অনুষ্ঠানে শুরুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ঘুরে-ঘুরে বিভিন্ন টেবিলে গিয়ে হাত মিলান ও শিশুদের খোঁজ নেন। ইফতারে প্রায় ১৬০ জনের মতো বিভিন্ন মাদরাসাছাত্র এবং শতাধিক শিক্ষক অংশ নেয়। ২০১৮ সালে খালেদ জিয়ার কারাগারে যাওয়ার পর তার সম্মানে বিএনপির আয়োজিত প্রতিটি ইফতারে মঞ্চে একটি আসন ফাঁকা রাখা হতো। কিন্তু আজকের ইফতারে সেটি রাখা হয়নি।

মির্জা ফখরুল ঘোষিত কর্মসূচি হলো, ১ এপ্রিল সারাদেশের সকল মহানগর ও জেলায় বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি। ৮ এপ্রিল সারাদেশের সকল মহানগরের থানা পর্যায়ে ও জেলার উপজেলা পর্যায়ে দুপুর ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি। ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগীয় শহরগুলোতে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশের সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারপত্র বিলি, মানববন্ধন করা হবে।

এর মধ্যে ৯ এপ্রিল, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ, ১০ এপ্রিল, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ, ১১ এপ্রিল খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ, ১২ এপ্রিল ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ, ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।

এছাড়া ২৮ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশের সকল জেলা/মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, দুস্থ, অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তাসহ বিভিন্ন গণসংযোগমূলক কর্মসূচিতে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন।

ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ আলম প্রমুখ। ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা নেসারুল হক ইফতারের আগে দোয়া-মোনাজাত করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

রমজানেও আন্দোলন চলবে: ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৮:১২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে রমজানেও সারাদেশে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ক্লাবে ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি। ওলামা-মাশায়েক এবং এতিমদের সম্মানে ইফতারে আয়োজন করে বিএনপি। ইফতারে আগে বিশেষ মোনাজাত করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নেছারুল হক।

তিনি বলেন, রমজানে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার ইচ্ছা না থাকলেও সরকার বিএনপিকে কর্মসূচি দিতে বাধ্য করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। দেশে এমন সরকার রয়েছে, যারা নির্বাচিত নন। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি আন্দোলন করছে। সারা দেশে রমজানের মাঝেও এ দাবি নিয়ে আন্দোলন চলমান থাকবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন আমরা চালিয়ে যেতে চাই। আমরা আশা করব সাধারণ মানুষ এসব কর্মসূচি সফল করবে।

তিনি বলেন, এ রমজান মাসেও যে সমস্ত জিনিসগুলো মানুষকে কষ্ট দেয় তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখব। রমজান মাসে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু আজকে দেশের যে অবস্থা তৈরি হয়েছে আমরা বাধ্য হয়েছি এ রমজান মাসেও সাধারণ মানুষকে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার যে আন্দোলন তা চলমান রাখতে। সে কারণে এ কর্মসূচি দিয়েছি। আমরা আশ করব, সেই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ অংশ নেবে।

তিনি বলেন, আজকে দেশ ও জাতি চরম সংকটের মধ্যে রয়েছে। এখন দলমত নির্বিশেষ সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার, জনগণের সংসদ গঠন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এমন এক সময়ে আমরা ইফতার মাহফিল করছি যখন দেশে সাধারণ মানুষ অত্যন্ত কষ্টে দিন যাপন করছে। ইফতারের সময় ন্যূনতম যে খাদ্যদ্রব্য দরকার, সেগুলোর দাম আকাশচুম্বী যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। প্রতিটি জিনিসের দাম আজকে বেড়ে গেছে। এই দাম বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে আওয়ামী সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি। আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। সাধারণ মানুষের শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে। আমরা এই দুঃসহ অবস্থার অবসান চাই। এই অবস্থায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেসব বিষয় মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে, তা নিযে আমরা আমাদের কর্মসূচি চলমান রাখবো।

অনুষ্ঠানে শুরুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ঘুরে-ঘুরে বিভিন্ন টেবিলে গিয়ে হাত মিলান ও শিশুদের খোঁজ নেন। ইফতারে প্রায় ১৬০ জনের মতো বিভিন্ন মাদরাসাছাত্র এবং শতাধিক শিক্ষক অংশ নেয়। ২০১৮ সালে খালেদ জিয়ার কারাগারে যাওয়ার পর তার সম্মানে বিএনপির আয়োজিত প্রতিটি ইফতারে মঞ্চে একটি আসন ফাঁকা রাখা হতো। কিন্তু আজকের ইফতারে সেটি রাখা হয়নি।

মির্জা ফখরুল ঘোষিত কর্মসূচি হলো, ১ এপ্রিল সারাদেশের সকল মহানগর ও জেলায় বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি। ৮ এপ্রিল সারাদেশের সকল মহানগরের থানা পর্যায়ে ও জেলার উপজেলা পর্যায়ে দুপুর ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি। ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগীয় শহরগুলোতে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশের সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারপত্র বিলি, মানববন্ধন করা হবে।

এর মধ্যে ৯ এপ্রিল, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ, ১০ এপ্রিল, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ, ১১ এপ্রিল খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ, ১২ এপ্রিল ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ, ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।

এছাড়া ২৮ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশের সকল জেলা/মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, দুস্থ, অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তাসহ বিভিন্ন গণসংযোগমূলক কর্মসূচিতে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন।

ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ আলম প্রমুখ। ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা নেসারুল হক ইফতারের আগে দোয়া-মোনাজাত করেন।