নিজস্ব প্রতিবেদক :
রক্তের রাজনীতি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি তৈরি করেছিল বিএনপি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক শাজাহান খান।
রোববার (২৮ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান। একের পর এক হত্যা করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছিল জিয়াউর রহমান। দেড় হাজারের বেশি কর্মকর্তা ও জওয়ানদের হত্যা করেছিল। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করতে রমজান মাসে তাদের হত্যা করেছিল। তারা ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে কৃষকরা যখন দাবিতে আন্দোলন করছিল সেই আন্দোলন বন্ধ করতেও খালেদা জিয়া গুলি চালায় তাদের ওপর। মূলত তাদের রাজনীতি হত্যার রাজনীতি। রক্তের রাজনীতি করে তারা ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি তৈরি করেছিল।
বিএনপি এবার নির্বাচনে না এলে তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটবে বলে মন্তব্য করে শাজাহান খান বলেন, বিএনপিকে এবার নির্বাচনে আসতেই হবে। নির্বাচন ছাড়া বিএনপির আর কোনো উপায় নেই। নির্বাচনে না এলে তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটবে। যদি আগামী নির্বাচনে তারা না আসে তবে বাংলার মানুষ এদেশে আর আপনাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেবে না।
সম্প্রতি আমেরিকার দেওয়া ভিসা নীতির কারণে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে মন্তব্য করে শাহজাহান খান বলেন, আমেরিকার ভিসা নীতি ঘোষণার পর বিএনপি আনন্দে আত্মহারা ছিল। তারা মনে করেছিল, আমেরিকা ভিসা নীতি করেছে সরকার বা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। পরে যখন তারা বুঝতে পারলো, তখন তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকা তাদের ভিসা নীতিতে বলেনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বা নির্বাচন যারা করবে তাদের কথা। বরং এ নীতিতে বলা হয়েছে, যারা নির্বাচন বানচাল করবে, ষড়যন্ত্র করবে ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতা করবে তাদের জন্য এ ভিসা নীতি কার্যকর হবে।
আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, বিএনপি বারবার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এখন আবার ক্ষমতায় যেতে চায়। একবার দুইবার নয় ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ক্ষমতায় গিয়েও তারা হত্যার চেষ্টা করেছে আবার ক্ষমতার বাইরে থেকেও তারা হত্যার চেষ্টা করছে। এ ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে তারা বাংলার মাটিতে হাওয়া ভবন সৃষ্টি করেছিল। মাটিতে আর কোনো দিন তাদের হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন ফিরে আসবে না। মানুষ তাদের হাওয়া ভবনের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকিদাতা আবু সাঈদ চাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে। পাশাপাশি বিএনপিকে জানিয়ে দিতে চাই, যদি তারা ১৩-১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্র করে মানুষ হত্যা করে তবে মুক্তিযোদ্ধা, শ্রমিক, জনতা তাদের রাজপথে প্রতিহত করবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব ওসমান আলী, যুগ্ম সদস্য সচিব এবিএম সুলতান আহমেদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান।