দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে অবৈধভাবে দখলে ছিল রংপুরের বদরগঞ্জে রেলওয়ের দুই ধারে জায়গা। দীর্ঘদিনেও এগুলো উচ্ছেদে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাতে দখলদাররা ধরেই নিয়েছিল কোনোদিন তাদেরকে আর কেউ উচ্ছেদ করতে পারবে না।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পৌরশহরের ১২ নম্বর রেলঘুন্টি থেকে কলেজ রেলঘুন্টি পর্যন্ত প্রায় আধাকিলোমিটার এলাকায় অবস্থিত এসব অবৈধ বসতঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এসকাভেটর দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এতে দোকানপাট, হোটেল, গুদাম, বসতবাড়ি এবং মাদক ও জুয়ার আখড়া হিসেবে পরিচিত স্থাপনাও ছিল। উচ্ছেদ করা স্থাপনার মধ্যে ছিল কয়েকটি মার্কেট, টিনশেড ঘর, পাকা দালান ও সেমিপাকা অবকাঠামো।
উচ্ছেদ অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে লালমনিরহাট অঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব ও বদরগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রেহেনুমা তারান্নুম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ সময় বিপুলসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় ৩০ বছর ধরে দখল নিয়ে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি রেলের দুই ধারে ব্যবসার আড়ালে মাদকের আখড়া ও বড় গোডাউন তৈরি করে ভাড়া দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে সরকার প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। কয়েক দফা উচ্ছেদের নোটিশ করেও কেউ রেলের জমি ছাড়েনি।
আরও পড়ুন : মাওয়া অংশে পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পে অগ্রগতি ৩৬ শতাংশ
অবশেষে গত ২২ সেপ্টেম্বর উচ্ছেদের জন্য আবারো নোটিশ ও মাইকিং করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে রেলওয়ে পুলিশ ও বদরগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ নেতৃত্বে রেললাইনের দুই ধারের ৩২ একর ৫৫ শতাংশ জমির ওপর ছোট বড় প্রায় আড়াই শ দোকান ও বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। এ সময় রেললাইনের দুই ধার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। কিছু ব্যবসায়ী তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে পারলেও, অনেকেই তা পারেনি।
বদরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে এ জন্য বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
লালমনিরহাট অঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব বলেন, স্টেশন ইয়ার্ড, রেললাইন এবং এর আশপাশের এলাকা থেকে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের মালামাল সরিয়ে নিতে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই তারা সরে যায়নি।
বিশেষ করে কিছু মাদক কারবারি রেললাইন ঘিরে মাদকের আখড়া গড়ে তোলে। এসব কারণে রেলওয়ের নিরাপদ চলাচলের জন্য উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান তিনি।