নিজস্ব প্রতিবেদক :
দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আপনারা ভিজছেন, কষ্ট করছেন। সামনে আরও কষ্ট হবে। এর মধ্যদিয়েই যেকোনো মূল্যে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজিত সরকার পতনের একদফা দাবির গণ মিছিল শেষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য দেয়ার সময় বৃষ্টি নামলেও নেতাকর্মীরা বৃষ্টিতে ভিজে তার বক্তব্য শুনেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও লাখো জনতার উপস্থিতি সরকারকে না বলে দিয়েছে। দেশের মানুষ এ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এরা ক্ষমতায় টিকে থাকতে সব অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছে। আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আটক রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। সব নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার জনগণের সব ধরনের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনগণের আওয়াজ স্তব্ধ করে আবারও এরা ক্ষমতায় আসতে চায়। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। সরকার জোর করে ক্ষমতায় আসতে চাইবে। সবাইকে সতর্ক থাকবে হবে। নেতাকর্মীদের বুকে সাহস নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
আন্দোলন নস্যাৎ করতে সরকার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন ফখরুল। তিনি বলেন, অনেক চক্রান্ত করছে। আওয়ামী লীগ বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে বুকে সাহস নিয়ে, শক্তি নিয়ে ভয়াবহ এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। যতই চক্রান্ত করুক, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হতে পারে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমন আশঙ্কা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তারাই তো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে, আর দোষ চাপায় বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ আজ দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা বৃষ্টিতে ভিজে কষ্ট করতেছেন। আরো কষ্ট হবে। তবু এই সরকারকে পরাজিত করে দেশে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় গণমিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
এর আগে কমলাপুর স্টেশন থেকে পীরজঙ্গী মাজার হয়ে আরামবাগ, ফকিরাপুল হয়ে নয়াপল্টনে আসে দক্ষিণের গণমিছিল। রামপুরা ডেল্টা হাসপাতাল থেকে শুরু হয়ে হাজীপাড়া, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, মৌচাক, শান্তিনগর হয়ে আসে উত্তরের মিছিল। দুটি গণমিছিল একজায়গায় মিলিত হলে পুরো নয়াপল্টন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পরে শুরু হয় বিএনপির সমাবেশ। এটি বাস্তবায়ন করতে দুটি ট্রাক দিয়ে ভাসমান মঞ্চ তৈরি করা হয়।