যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশনের একটি সালিশি মামলায় বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তবে সে পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী পরোয়ানা স্থগিতের বিষয়টি জানিয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ফেসবুকে মুশফিকুল ফজল আনসারী লিখেছেন- ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক একটি চুক্তি বাতিলের দায়ে স্মিথ কোজেনারেশন ক্ষতিপূরণ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একটি মামলা করে। ১৯৯৭ সালে স্মিথ কোজেনারেশন তৎকালীন বাংলাদেশের সরকারের সাথে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য অনুমতি প্রদান করেছিল সরকার। এই মামলায় দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্ট অনেকটা এখতিয়ার বহির্ভূত একটি রায় প্রদান করে, যা আজ শুক্রবার আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়। যদিও বিষয়টির সাময়িক অবসান ঘটেছে তবে লুটেরা সরকারের দায় রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত এই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার নিতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের সে সময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে না এনে ধামাচাপাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দুজনই উচ্চপর্যায়ের বাংলাদেশি কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা, ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফৌজদারি ও দেওয়ানি প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সবাদমাধ্যম ল-৩৬০-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আমেরিকার একটি আদালত। যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশনের একটি সালিশি মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ইউএস ডিস্ট্রিক্ট বিচারক কার্ল জে নিকোলস স্মিথ মার্কিন মার্শাল সার্ভিসকে ওই দুজন ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন।
বিদ্যুৎ কোম্পানিটি বাংলাদেশের কাছ থেকে ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলাটি দায়ের করেছে। এই বিরোধের সূত্রপাত ১৯৯৭ সালে স্মিথ কোজেনারেশন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে এই প্রকল্পটি বাতিল করে দেয়। পরে কোম্পানিটি সেই বছরই আইসিসি ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করে।