নিজস্ব প্রতিবেদক :
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের চাওয়া অনুযায়ী সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালিত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়।
রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে ঘন্টাব্যাপী বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে ইসি বদ্ধপরিকর। তবে এ বিষয়ে পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ক্রেডিবল (দায়বদ্ধ) নির্বাচন করতে চায় ইসি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, তিনি আশাবাদী নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক হবে। তিনি অতিরিক্ত যেটা বলেছেন নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়। আমরাও আমাদের তরফ থেকে তা জানাতে পেরেছি।
সিইসি বলেন, বিভিন্ন বিষয় আলাপচারিতার মধ্যে নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তিনি জানতে চেয়েছিলেন আমাদের প্রস্তুতি কেমন। তিনি অতিরিক্ত যেটা বলেছেন সেটি হচ্ছ, নির্বাচনটা যেন অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়।
আলোচনায় গণমাধ্যমের ভূমিকা উঠে এসেছে জানিয়ে সিইসি বলেন, পর্যবেক্ষকের বিষয়টা আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি স্বচ্ছতার ওপর জোর দেবো। এ জন্য পর্যবেক্ষক এবং গণমাধ্যমের কাছ থেকে বস্তুনিষ্ঠ সহায়তা কামনা করবো। কারণ, নির্বাচনের যে একটা দর্পণ তা প্রতিফলিত হবে গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে। তিনি (সারাহ) বলেছেন গণমাধ্যমের জন্য যে নীতিমালা হয়েছে- সেখানে পারমিশন (অনুমতি) নিয়ে যেতে হবে। আমরা বলেছি পারমিশন বলে কিছু ছিল না। শেষ পর্যন্ত গণমাধ্যম থেকে যে দাবিটা আসছে সেটা হলো মোটরসাইকেলের বিষয়। আমরা বলেছি একটা কারণে এটা বাদ দিয়েছিলাম।
সিইসি বলেন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার আমাদেরকে সাংবাদিক নীতিমালা ও নির্বাচনকালীন সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলে চলাচলের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। মোটরসাইকেলের অপব্যবহার হতে পারে। মাসলম্যান মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে সংকট তৈরি করে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল। একই সঙ্গি বলেছি, গণমাধ্যমের যে দাবি সেটাও যৌক্তিক। মোটরসাইকেল ছাড়া তাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড কাভার করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। সে জন্য আমরা বলেছি, এটা আন্ডার রিভিউ (বিবেচনাধীন) রেখেছি। সেটা আমরা যথাযথভাবে পরিবর্তন করবো।
সিইসি বলেন, সারাহ কুক আশা করেছেন ইলেকশনটা যেন পার্টিসিপেটরি ও ক্রেডিবল হয়। ইলেকশন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হতে হলে- আমি জোর দিয়েছি যারা পোলিং এজেন্ট তাদের ভূমিকাটা গুরুত্বপূর্ণ। পোলিং এজেন্টদের আমরা সেনসেটাইজ (সংবেদনশীল) করবো। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা এবং অনিয়ম রোধ করতে হলে পোলিং এজেন্টদের সক্রিয় হতে হবে, সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে। এটা হলে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে অনিয়মের আশঙ্কা হ্রাস পাবে।
এসময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক চায় বলে জানিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করে। যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করতে পারে।
সারাহ কুক বলেন, আমরা স্বাধীন, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তার দলের সঙ্গে আমার এটি প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ। গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।
এ সময় সারাহ কুকের সঙ্গে হাইকমিশনের দুজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। চলতি বছর এপ্রিলের শেষে দায়িত্ব নেওয়ার পরে এটিই সিইসির সঙ্গে কুকের প্রথম সাক্ষাৎ।
অপরদিকে সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান ও ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।