Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যদি সাহস থাকে, ঠেকান: জোনায়েদ সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সংবিধানবিরোধী কোনো নিয়ম জারি করে জনগণের অধিকারের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না জানিয়ে সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, কোনো দমন-পীড়ন এই লড়াইকে থামাতে পারবে না। আপনাদের যদি সাহস থাকে ঠেকান। আমরা রাস্তায় নামব।’

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ও এক দফা দাবিতে দেশব্যাপী হরতালের সমর্থনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এই দেশ লাখ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে তৈরি করেছে। এই দেশে জনগণের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সেটা করতে গেলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় দিয়ে একটা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। এই রাষ্ট্রব্যবস্থা, এই ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা বদল করে, বাংলাদেশে একটা নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। এর জন্য গণতন্ত্র মঞ্চ লড়াই করছে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, ভোটের অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা, সুযোগের সমতা; সেই লড়াই চলবে। কোনো শক্তি, কোনো দমন-পীড়ন এই লড়াইকে থামাতে পারবে না। আপনাদের যদি সাহস থাকে, ঠেকান। আমরা রাস্তায় নামব। আমাদের কর্মীরা নৈতিক জোর নিয়ে দেশপ্রেম নিয়ে রাস্তায় নামবে। আপনাদের কথায় আমরা ভয় পাই না।

তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন তামাশার, দেশের নাগরিক এবং দেশের বিরুদ্ধে। সরকার নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তাদেরকে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে যে মিটিং মিছিল বন্ধ করতে হবে। মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে হবে। এটা হচ্ছে সরকারের পাঁয়তারা।

ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা নিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে সকালে আমরা দেখলাম তেজগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেখানে আগুনে পুড়ে বেশ কয়েকজন মানুষ হতাহত হয়েছেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এরকম নাশকতার সাথে চলমান আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। এরা (সরকার) নাশকতা করে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতে চায়। আন্দোলনের ওপর ক্রাকডাউন করতে চায়।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপিসহ যুগপৎ ধারায় ৩৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। এর বাইরেও ৬৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। প্রতিদিন তারা জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে, নির্বাচন বয়কট করতে। এই নির্বাচন তামাশার, দেশের নাগরিক এবং দেশের বিরুদ্ধে। মানুষ তাতে সাড়া দিয়েছে। আর এই সরকার সেই সাড়ায় ভয় পেয়ে নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তাদের দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে যে, মিটিং মিছিল বন্ধ করতে হবে। মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে হবে। এটা যে নির্বাচন নামক তামাশা, সেটা আমরা মানুষের কাছে উন্মোচন করে দিচ্ছি—এটা বন্ধ করতে হবে, এটা হচ্ছে সরকারের পাঁয়তারা।

সরকার বিরোধী দলের নেতাদের জেলে ঢুকিয়ে আন্দোলন দমন করতে চায় মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এটা আমরা আগেই বলেছি। এখন খোদ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ঠান্ডা মাথায় টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন—তারা ভেবে-চিন্তে পরিকল্পিতভাবে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জেলে রেখেছেন। ওনাদের জেলে না রাখলে নাকি এখন হরতাল-অবরোধে যে গাড়ি চলে, সেটা চলতো না।

জাতীয় পার্টিকে উদ্দেশ্য করে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বললেন, ভিক্ষার সিট নিয়ে তিনি নির্বাচন করেন না। তার কয়েক ঘণ্টা পরে আমরা দেখলাম ২৬টি আসন সমঝোতা করে তারা নির্বাচনে গেছেন। জনাব জি এম কাদের সাহেব, আপনাকে জাতির কাছে বলতে হবে, এই ২৬টি আসন কি ভিক্ষা?

সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের মিটিং মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা আমরা মানব না বলে জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, প্রয়োজন হলে সিইসির বাসার সামনে গিয়ে মিছিল করব। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, আপনার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনারকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন। আমরা এটাও বলতে চাই, আপনারা তফসিল বাতিল করুন। জনগণ এই এই নির্বাচন মানবে না। আমরা জীবন দিয়ে হলেও এই নির্বাচনকে প্রতিহত করব।

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার বলেন, আজকে একটা পার্লামেন্ট বহাল রেখে আরেকটা পার্লামেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। এটা তো পাগলের রাজত্ব চলছে!

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যদি সাহস থাকে, ঠেকান: জোনায়েদ সাকি

প্রকাশের সময় : ০৫:৩২:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সংবিধানবিরোধী কোনো নিয়ম জারি করে জনগণের অধিকারের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না জানিয়ে সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, কোনো দমন-পীড়ন এই লড়াইকে থামাতে পারবে না। আপনাদের যদি সাহস থাকে ঠেকান। আমরা রাস্তায় নামব।’

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ও এক দফা দাবিতে দেশব্যাপী হরতালের সমর্থনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এই দেশ লাখ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে তৈরি করেছে। এই দেশে জনগণের কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সেটা করতে গেলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় দিয়ে একটা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। এই রাষ্ট্রব্যবস্থা, এই ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা বদল করে, বাংলাদেশে একটা নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। এর জন্য গণতন্ত্র মঞ্চ লড়াই করছে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, ভোটের অধিকার, ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা, সুযোগের সমতা; সেই লড়াই চলবে। কোনো শক্তি, কোনো দমন-পীড়ন এই লড়াইকে থামাতে পারবে না। আপনাদের যদি সাহস থাকে, ঠেকান। আমরা রাস্তায় নামব। আমাদের কর্মীরা নৈতিক জোর নিয়ে দেশপ্রেম নিয়ে রাস্তায় নামবে। আপনাদের কথায় আমরা ভয় পাই না।

তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন তামাশার, দেশের নাগরিক এবং দেশের বিরুদ্ধে। সরকার নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তাদেরকে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে যে মিটিং মিছিল বন্ধ করতে হবে। মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে হবে। এটা হচ্ছে সরকারের পাঁয়তারা।

ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা নিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে সকালে আমরা দেখলাম তেজগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেখানে আগুনে পুড়ে বেশ কয়েকজন মানুষ হতাহত হয়েছেন। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এরকম নাশকতার সাথে চলমান আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। এরা (সরকার) নাশকতা করে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতে চায়। আন্দোলনের ওপর ক্রাকডাউন করতে চায়।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপিসহ যুগপৎ ধারায় ৩৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। এর বাইরেও ৬৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। প্রতিদিন তারা জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে, নির্বাচন বয়কট করতে। এই নির্বাচন তামাশার, দেশের নাগরিক এবং দেশের বিরুদ্ধে। মানুষ তাতে সাড়া দিয়েছে। আর এই সরকার সেই সাড়ায় ভয় পেয়ে নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তাদের দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে যে, মিটিং মিছিল বন্ধ করতে হবে। মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে হবে। এটা যে নির্বাচন নামক তামাশা, সেটা আমরা মানুষের কাছে উন্মোচন করে দিচ্ছি—এটা বন্ধ করতে হবে, এটা হচ্ছে সরকারের পাঁয়তারা।

সরকার বিরোধী দলের নেতাদের জেলে ঢুকিয়ে আন্দোলন দমন করতে চায় মন্তব্য করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এটা আমরা আগেই বলেছি। এখন খোদ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ঠান্ডা মাথায় টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন—তারা ভেবে-চিন্তে পরিকল্পিতভাবে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জেলে রেখেছেন। ওনাদের জেলে না রাখলে নাকি এখন হরতাল-অবরোধে যে গাড়ি চলে, সেটা চলতো না।

জাতীয় পার্টিকে উদ্দেশ্য করে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বললেন, ভিক্ষার সিট নিয়ে তিনি নির্বাচন করেন না। তার কয়েক ঘণ্টা পরে আমরা দেখলাম ২৬টি আসন সমঝোতা করে তারা নির্বাচনে গেছেন। জনাব জি এম কাদের সাহেব, আপনাকে জাতির কাছে বলতে হবে, এই ২৬টি আসন কি ভিক্ষা?

সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের মিটিং মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা আমরা মানব না বলে জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, প্রয়োজন হলে সিইসির বাসার সামনে গিয়ে মিছিল করব। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, আপনার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনারকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করুন। আমরা এটাও বলতে চাই, আপনারা তফসিল বাতিল করুন। জনগণ এই এই নির্বাচন মানবে না। আমরা জীবন দিয়ে হলেও এই নির্বাচনকে প্রতিহত করব।

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার বলেন, আজকে একটা পার্লামেন্ট বহাল রেখে আরেকটা পার্লামেন্ট নির্বাচন হচ্ছে। এটা তো পাগলের রাজত্ব চলছে!

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা।