Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ম্যাচটি আমি একাই হারিয়েছি : শান্ত

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১০:২৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • ২২২ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, নতুন ক্রিকেট খেলবে বাংলাদেশ। তবে সিলেট টেস্টে সেই পুরোনো ব্যর্থতার গল্প ছাড়া নতুন ক্রিকেট আর দেখা যায়নি। চারদিনেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট হারতে হলো টাইগারদের। এর মধ্যে প্রতিটি দিনই দাপটের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছে ক্রেইগ আরভিনের দল।

চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে বুধবার (২৩ এপ্রিল) জয় তুলে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। টেস্ট জিততে সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল ১৭৪ রান, ৭ উইকেট হারিয়ে তারা সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। যদিও শেষদিকে দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে সফরকারীদের নিয়ন্ত্রণ থেকে ম্যাচ বের করে নেওয়ার চেষ্টা চালান মেহেদী হাসান মিরাজ এবং তাইজুল ইসলাম। তবে জিম্বাবুয়েই শেষ পর্যন্ত তাদের গন্তব্যে সফলভাবে পৌঁছে গেছে।

ম্যাচ শেষে হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ম্যাচটি আমি একাই হারিয়েছি। তাই একাই হারের দায়ভার নিচ্ছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি সময় নিতে পারতাম। যদি চিন্তা করেন পুরো ম্যাচটা আমি অধিনায়ক হিসেবে হারিয়ে দিয়েছি। কারণ সত্যি কথা সকালে আউটটাতে পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

এমন হার হতাশাজনক উল্লেখ করে টাইগার অধিনায়ক আরও বলেন, অবশ্যই হতাশাজনক, পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণে ম্যাচটা হারা। অতিরিক্ত আপসেট বলব না, তবে আমরা ভালো করিনি।

বাকির অনুপ্রেরণা কিভাবে দেবেন, এই প্রশ্নে শান্ত বলেন, ‘দেখুন, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে অবশ্যই অনুপ্রাণিত হতে হবে। তবে অনুপ্রেরণা দিয়ে খুব একটা কিছু হয় না আসলে। যে যে জায়গায় ভুল করেছে, সে সেই ভুলটা যেন না করে, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। আজকের ম্যাচ নিয়ে যদি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেন একজন অধিনায়ক হিসেবে, তাহলে পুরো ম্যাচটা আমি একা হারিয়ে দিয়েছি। সত্যি কথা। কারণ সকালের ওই আউটটাতেই (সব কিছু) নষ্ট হয়ে গেছে। ’

হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে শান্ত বলেন, ‘তখন যদি একটা ৫০-৬০ রানের জুটি হতো, তাহলে ২২০ (রানের লিড হতে পারত)। ২২০ রানের বেশি লিড হলে আমরা হয়তো ভালো অবস্থানে থাকতাম, সকালে ব্যাটিংয়ের আগে একটা আলাপচারিতাতেও কিন্তু আমি এটা বলেছি। এই পুরো ম্যাচে সবার দিকে আসলে (অভিযোগ) নিয়ে যেতে চাই না। পুরো দায়ভার আমি নিতে চাই। কারণ, খুব বাজে সময়ে আমি আউট হয়েছি। ’

মিরাজ-তাইজুলের প্রশংসা করার পাশাপাশি ব্যাটারদের ব্যর্থতা নিয়ে শান্ত বলেন, আমার আউট পুরো ব্যাটিংটা নষ্ট করে ফেলেছিল। ওই মোমেন্টামটা ওরা পাওয়াতেই খেলাটা আমার কাছে মনে হয়েছে যে হেরে গেছি। মিরাজ এবং তাইজুল ভাই ভালো চেষ্টা করেছে। অসম্ভব ভালো বোলিং করেছে অবশ্যই ক্রেডিট দিতে হবে। বাট আমার কাছে মনে হয় যে বোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ম্যাচ হেরে হতাশা লুকাতে পারলেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘অবশ্যই হতাশার। ওভারঅল পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণেই ম্যাচ হেরেছি। অতিরিক্ত হতাশার এটা আসলে বলবো না। একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। আপসেট। ভালো করিনি। এতটুকুই।’

চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারেই নিজের উইকেট হারানোটাই কাল হয়েছে বলে মনে করেন শান্ত, ‘আমার কাছে তাই মনে হয়। আমার আউটটা পুরো খেলাটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মনে হয় ওই ছন্দটা ওরা পাওয়াতে আমরা খেলাটা হেরে গেছি।’

নিজের ব্যাটিং নিয়ে শান্ত আরও বলেছেন, ‘আমার সাধারণত রানের জন্য চিন্তা থাকে। স্কোরিংয়ের সুযোগ খোঁজার চিন্তা থাকে। যে আউট হয়েছি, আমার কাছে মনে হয়েছে আমি সময় নিতে পারতাম। আরেকটু সময় নিতে পারতাম। যেটা আপনি বললেন দিনের দ্বিতীয় বল ছিল। আমারও মনে হয় আরেকটু সময় নিলে ভালো হতো। এই শটটা আমি খেলি। পাশাপাশি এটাও সত্য দলের যে পরিস্থিতি ছিল আমি টাইম নিলেও পারতাম।’

ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে দারুণ ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল ও মিরাজ ছিলেন অসাধারণ। তাদের প্রশংসা করে শান্ত বলেছেন, ‘ওখানে মিরাজ ও তাইজুল ভাই অসম্ভব ভালো বোলিং করেছেন। বোর্ডে এরকম রান থাকার পরও ওরা যেভাবে চেষ্টা করেছেন, সেটাকে কৃতিত্ব দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয়, বোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না।’

সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে হারতে হলো বাংলাদেশকে। হারলেও সামনে এমন উইকেটেই খেলতে চান শান্তরা, ‘আমার মনে হয়, এরকম স্পোর্টিং উইকেটে খেলা উচিত। উইকেট খুবই ভালো ছিল। ব্যাটারদের জন্য যেরকম সুবিধা ছিল। বোলারদের জন্যও টুকটাক সুবিধা ছিল। এখান থেকে আসলে পেছনে তাকানোর প্রয়োজন নেই। সামনের ম্যাচে এ ধরনের উইকেট থাকা উচিত।’

সংবাদ সম্মেলেন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। ম্যাচ ফি বেড়েছে। আর কী করলে আপনাদের পারফরম্যান্স ভালো হবে?’ জবাবে শান্ত বলেন, ‘অনেকদিন পর বেতন বেড়েছে। এটা অবশ্যই ভালো খবর। বিসিবি অনেক আন্তরিক এই ক্ষেত্রে। তারা চেষ্টা করছেন। কিন্তু আর কী করলে পারফরম্যান্স ভালো হবে এটা বোধহয় বসে আমাদের আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ম্যাচটি আমি একাই হারিয়েছি : শান্ত

প্রকাশের সময় : ১০:২৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

স্পোর্টস ডেস্ক : 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, নতুন ক্রিকেট খেলবে বাংলাদেশ। তবে সিলেট টেস্টে সেই পুরোনো ব্যর্থতার গল্প ছাড়া নতুন ক্রিকেট আর দেখা যায়নি। চারদিনেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট হারতে হলো টাইগারদের। এর মধ্যে প্রতিটি দিনই দাপটের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছে ক্রেইগ আরভিনের দল।

চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে বুধবার (২৩ এপ্রিল) জয় তুলে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। টেস্ট জিততে সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল ১৭৪ রান, ৭ উইকেট হারিয়ে তারা সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। যদিও শেষদিকে দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে সফরকারীদের নিয়ন্ত্রণ থেকে ম্যাচ বের করে নেওয়ার চেষ্টা চালান মেহেদী হাসান মিরাজ এবং তাইজুল ইসলাম। তবে জিম্বাবুয়েই শেষ পর্যন্ত তাদের গন্তব্যে সফলভাবে পৌঁছে গেছে।

ম্যাচ শেষে হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ম্যাচটি আমি একাই হারিয়েছি। তাই একাই হারের দায়ভার নিচ্ছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি সময় নিতে পারতাম। যদি চিন্তা করেন পুরো ম্যাচটা আমি অধিনায়ক হিসেবে হারিয়ে দিয়েছি। কারণ সত্যি কথা সকালে আউটটাতে পুরো খেলাটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

এমন হার হতাশাজনক উল্লেখ করে টাইগার অধিনায়ক আরও বলেন, অবশ্যই হতাশাজনক, পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণে ম্যাচটা হারা। অতিরিক্ত আপসেট বলব না, তবে আমরা ভালো করিনি।

বাকির অনুপ্রেরণা কিভাবে দেবেন, এই প্রশ্নে শান্ত বলেন, ‘দেখুন, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে অবশ্যই অনুপ্রাণিত হতে হবে। তবে অনুপ্রেরণা দিয়ে খুব একটা কিছু হয় না আসলে। যে যে জায়গায় ভুল করেছে, সে সেই ভুলটা যেন না করে, সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। আজকের ম্যাচ নিয়ে যদি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেন একজন অধিনায়ক হিসেবে, তাহলে পুরো ম্যাচটা আমি একা হারিয়ে দিয়েছি। সত্যি কথা। কারণ সকালের ওই আউটটাতেই (সব কিছু) নষ্ট হয়ে গেছে। ’

হারের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে শান্ত বলেন, ‘তখন যদি একটা ৫০-৬০ রানের জুটি হতো, তাহলে ২২০ (রানের লিড হতে পারত)। ২২০ রানের বেশি লিড হলে আমরা হয়তো ভালো অবস্থানে থাকতাম, সকালে ব্যাটিংয়ের আগে একটা আলাপচারিতাতেও কিন্তু আমি এটা বলেছি। এই পুরো ম্যাচে সবার দিকে আসলে (অভিযোগ) নিয়ে যেতে চাই না। পুরো দায়ভার আমি নিতে চাই। কারণ, খুব বাজে সময়ে আমি আউট হয়েছি। ’

মিরাজ-তাইজুলের প্রশংসা করার পাশাপাশি ব্যাটারদের ব্যর্থতা নিয়ে শান্ত বলেন, আমার আউট পুরো ব্যাটিংটা নষ্ট করে ফেলেছিল। ওই মোমেন্টামটা ওরা পাওয়াতেই খেলাটা আমার কাছে মনে হয়েছে যে হেরে গেছি। মিরাজ এবং তাইজুল ভাই ভালো চেষ্টা করেছে। অসম্ভব ভালো বোলিং করেছে অবশ্যই ক্রেডিট দিতে হবে। বাট আমার কাছে মনে হয় যে বোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ম্যাচ হেরে হতাশা লুকাতে পারলেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘অবশ্যই হতাশার। ওভারঅল পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণেই ম্যাচ হেরেছি। অতিরিক্ত হতাশার এটা আসলে বলবো না। একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। আপসেট। ভালো করিনি। এতটুকুই।’

চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারেই নিজের উইকেট হারানোটাই কাল হয়েছে বলে মনে করেন শান্ত, ‘আমার কাছে তাই মনে হয়। আমার আউটটা পুরো খেলাটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মনে হয় ওই ছন্দটা ওরা পাওয়াতে আমরা খেলাটা হেরে গেছি।’

নিজের ব্যাটিং নিয়ে শান্ত আরও বলেছেন, ‘আমার সাধারণত রানের জন্য চিন্তা থাকে। স্কোরিংয়ের সুযোগ খোঁজার চিন্তা থাকে। যে আউট হয়েছি, আমার কাছে মনে হয়েছে আমি সময় নিতে পারতাম। আরেকটু সময় নিতে পারতাম। যেটা আপনি বললেন দিনের দ্বিতীয় বল ছিল। আমারও মনে হয় আরেকটু সময় নিলে ভালো হতো। এই শটটা আমি খেলি। পাশাপাশি এটাও সত্য দলের যে পরিস্থিতি ছিল আমি টাইম নিলেও পারতাম।’

ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে দারুণ ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল ও মিরাজ ছিলেন অসাধারণ। তাদের প্রশংসা করে শান্ত বলেছেন, ‘ওখানে মিরাজ ও তাইজুল ভাই অসম্ভব ভালো বোলিং করেছেন। বোর্ডে এরকম রান থাকার পরও ওরা যেভাবে চেষ্টা করেছেন, সেটাকে কৃতিত্ব দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয়, বোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না।’

সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে হারতে হলো বাংলাদেশকে। হারলেও সামনে এমন উইকেটেই খেলতে চান শান্তরা, ‘আমার মনে হয়, এরকম স্পোর্টিং উইকেটে খেলা উচিত। উইকেট খুবই ভালো ছিল। ব্যাটারদের জন্য যেরকম সুবিধা ছিল। বোলারদের জন্যও টুকটাক সুবিধা ছিল। এখান থেকে আসলে পেছনে তাকানোর প্রয়োজন নেই। সামনের ম্যাচে এ ধরনের উইকেট থাকা উচিত।’

সংবাদ সম্মেলেন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। ম্যাচ ফি বেড়েছে। আর কী করলে আপনাদের পারফরম্যান্স ভালো হবে?’ জবাবে শান্ত বলেন, ‘অনেকদিন পর বেতন বেড়েছে। এটা অবশ্যই ভালো খবর। বিসিবি অনেক আন্তরিক এই ক্ষেত্রে। তারা চেষ্টা করছেন। কিন্তু আর কী করলে পারফরম্যান্স ভালো হবে এটা বোধহয় বসে আমাদের আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।’