Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোহামেডানকে হারিয়ে ফের স্বাধীনতা চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৮৬ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মোহামেডানকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারায় বসুন্ধরা কিংস।

এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় স্বাধীনতা কাপের শিরোপা ঘরে তুললো বসুন্ধরা। ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণাত্নক ফুটবল খেলতে থাকে বসুন্ধরা। অন্যদিকে কিছুটা কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকে মোহামেডান। তবে প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যায় দু’দল।

বারুদে ঠাসা ছিল ফাইনাল। লাল কার্ড, গোল-পাল্টা গোল। মাঠে উত্তেজনাও ছড়িয়েছিল মাঝেমধ্যে। বিরতির পর খেলা শুরু হওয়ার পরপরই দশজনের দলে পরিণত হয় কিংস। রফিকুল ইসলাম বক্সে বাজেভাবে ট্যাকল করলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান।

এর পরপরই মুজাফফরভের কর্নার থেকে গোল করে মোহামেডানকে এগিয়ে দেন এমানুয়েল। ম্যাচে ফিরতে বেশি সময় নেয়নি কিংস। রাকিব করেন সমতাসূচক গোল।

মনে হচ্ছিলো ফাইনাল ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়াবে। সে সুযোগ দেয়নি কিংস। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট দশেক আগে ডরিয়েলটন গোল করে চ্যাম্পিয়ন করে দেন ১০ জনের কিংসকে।

ম্যাচের চার মিনিটেই দারুণ সুযোগে পেয়েছিল কিংস। ববুরবেকের বাড়ানো লং বল বক্সের মধ্যেই পেয়ে যান রফিক। তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৮ মিনিটে মুজাফরভের ফ্রি-কিক থেকে বিপদের সম্ভাবনা ছিল কিংসের। তবে সঠিক জায়গায় ছিলেন দোরিয়েলতন গোমেজ। দলকে বিপদমুক্ত করেন তিনি। ১৪ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে রবসন রবিনহোর বুলেট গতির শট ফিরিয়ে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসেন।

রক্ষণ সামলে নিয়মিত বিরতিতে আক্রমণে উঠছিল মোহামেডান। তবে কিংসের রক্ষণ ভেদ করতে পারছিলেন না তারা।

৩৮ মিনিটে সোহেল রানার ক্রসে দোরিয়েলতনের হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। এরপর দুই দলই বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোলশূন্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।

প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধ হলো ঠিক বলা যায় মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই উত্তেজনা। বসুন্ধরার লেফট উইঙ্গার রফিক বা দিকে বল ডিফেন্স করতে গিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠে যান মোহামেডানের ওমরের কাঁধে। বেজে ওঠে রেফারির বাঁশি। এর আগে বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। এবার আর বাঁচতে পারেননি। সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। এই নিয়ে মিনিট কয়েক বসুন্ধরার ফুটবলাররা রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদ করতে থাকেন।

দশজনের বসুন্ধরা মিনিট খানেকের মধ্যেই গোল হজম করে বসে। ৫১ মিনিটে বা দিক থেকে মোজাফফরের কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে লাফিয়ে উঠে দারুণ হেডে গোল দেন সানডে। কিংসকে স্তব্ধ করে উল্লাসে মেতে ওঠে সাদাকালো শিবির। অবশ্য এই উল্লাস বেশিক্ষণ টেকেনি।

গোল হজম করে তেঁতে ওঠে দশজনের বসুন্ধরা। মিগুয়েল মাঝমাঠের একটু সামনে থেকে বল নিয়ে এগোতে থাকেন ডি বক্সের দিকে। মোহামেডান ডিফেন্ডারদের ব্লকে পড়ে ব্যাকপাসে তিনি বল বাড়িয়ে দেন ডি বক্সে থাকা রবসনের দিকে। রবসন শট নিলে তা আবার ফিরে আসে বাঁ দিকে থাকা রাকিবের পায়ে। বাকি কাজ অনায়াসে সারেন বাংলাদেশী ফরোয়ার্ড।

১-১ গোলে সমতার পর দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ৬৫ মিনিটের সময় মিগেলের শার্ট ধরে ওমর টান দিলে তিনি বিরক্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে দুই দলের খেলোয়াড়রা ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। মিনিট খানেক পর পরিস্থিতি শান্ত করেন রেফারি। এর মাঝে চলতে থাকে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ।

১০ জনের বসুন্ধরা একের পর এক আক্রমণে নাজেহাল করে তোলে সাদাকালো শিবিরকে। তবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না। ৮৬ মিনিটে দলের ভরসা হয়ে আসেন দুই ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েল-ডোরিয়েলটন। মিগুয়েলের আলতো পাসে ডোরিয়েলটনের জোরালো শটে শিরোপার দেখা দেখা পায় ১০ জনের বসুন্ধরা।

শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে দুই দলের ফুটবলারদের মাঝে কয়েকবার হাতাহাতি বেধে যায়। যা চলমান থাকে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পরও। হতাশায় মুষড়ে থাকা মোহামেডান যেন খেই হারিয়ে ফেলে।

গত মৌসুমে মোহামেডানের বিপক্ষে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে কিংস হেরেছিল ১-২ গোলে। এবারের মৌসুমে কিংস আরেক টুর্নামেন্টে মোহামেডানকে সেই স্কোরলাইনে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিলো।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

মোহামেডানকে হারিয়ে ফের স্বাধীনতা চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা

প্রকাশের সময় : ০৬:৩২:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মোহামেডানকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারায় বসুন্ধরা কিংস।

এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় স্বাধীনতা কাপের শিরোপা ঘরে তুললো বসুন্ধরা। ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণাত্নক ফুটবল খেলতে থাকে বসুন্ধরা। অন্যদিকে কিছুটা কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকে মোহামেডান। তবে প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যায় দু’দল।

বারুদে ঠাসা ছিল ফাইনাল। লাল কার্ড, গোল-পাল্টা গোল। মাঠে উত্তেজনাও ছড়িয়েছিল মাঝেমধ্যে। বিরতির পর খেলা শুরু হওয়ার পরপরই দশজনের দলে পরিণত হয় কিংস। রফিকুল ইসলাম বক্সে বাজেভাবে ট্যাকল করলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান।

এর পরপরই মুজাফফরভের কর্নার থেকে গোল করে মোহামেডানকে এগিয়ে দেন এমানুয়েল। ম্যাচে ফিরতে বেশি সময় নেয়নি কিংস। রাকিব করেন সমতাসূচক গোল।

মনে হচ্ছিলো ফাইনাল ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়াবে। সে সুযোগ দেয়নি কিংস। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট দশেক আগে ডরিয়েলটন গোল করে চ্যাম্পিয়ন করে দেন ১০ জনের কিংসকে।

ম্যাচের চার মিনিটেই দারুণ সুযোগে পেয়েছিল কিংস। ববুরবেকের বাড়ানো লং বল বক্সের মধ্যেই পেয়ে যান রফিক। তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৮ মিনিটে মুজাফরভের ফ্রি-কিক থেকে বিপদের সম্ভাবনা ছিল কিংসের। তবে সঠিক জায়গায় ছিলেন দোরিয়েলতন গোমেজ। দলকে বিপদমুক্ত করেন তিনি। ১৪ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে রবসন রবিনহোর বুলেট গতির শট ফিরিয়ে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসেন।

রক্ষণ সামলে নিয়মিত বিরতিতে আক্রমণে উঠছিল মোহামেডান। তবে কিংসের রক্ষণ ভেদ করতে পারছিলেন না তারা।

৩৮ মিনিটে সোহেল রানার ক্রসে দোরিয়েলতনের হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। এরপর দুই দলই বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোলশূন্যভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।

প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধ হলো ঠিক বলা যায় মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই উত্তেজনা। বসুন্ধরার লেফট উইঙ্গার রফিক বা দিকে বল ডিফেন্স করতে গিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠে যান মোহামেডানের ওমরের কাঁধে। বেজে ওঠে রেফারির বাঁশি। এর আগে বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। এবার আর বাঁচতে পারেননি। সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। এই নিয়ে মিনিট কয়েক বসুন্ধরার ফুটবলাররা রেফারির সঙ্গে বাদানুবাদ করতে থাকেন।

দশজনের বসুন্ধরা মিনিট খানেকের মধ্যেই গোল হজম করে বসে। ৫১ মিনিটে বা দিক থেকে মোজাফফরের কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে লাফিয়ে উঠে দারুণ হেডে গোল দেন সানডে। কিংসকে স্তব্ধ করে উল্লাসে মেতে ওঠে সাদাকালো শিবির। অবশ্য এই উল্লাস বেশিক্ষণ টেকেনি।

গোল হজম করে তেঁতে ওঠে দশজনের বসুন্ধরা। মিগুয়েল মাঝমাঠের একটু সামনে থেকে বল নিয়ে এগোতে থাকেন ডি বক্সের দিকে। মোহামেডান ডিফেন্ডারদের ব্লকে পড়ে ব্যাকপাসে তিনি বল বাড়িয়ে দেন ডি বক্সে থাকা রবসনের দিকে। রবসন শট নিলে তা আবার ফিরে আসে বাঁ দিকে থাকা রাকিবের পায়ে। বাকি কাজ অনায়াসে সারেন বাংলাদেশী ফরোয়ার্ড।

১-১ গোলে সমতার পর দুই দলের খেলোয়াড়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ৬৫ মিনিটের সময় মিগেলের শার্ট ধরে ওমর টান দিলে তিনি বিরক্ত হয়ে যান। এক পর্যায়ে দুই দলের খেলোয়াড়রা ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। মিনিট খানেক পর পরিস্থিতি শান্ত করেন রেফারি। এর মাঝে চলতে থাকে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ।

১০ জনের বসুন্ধরা একের পর এক আক্রমণে নাজেহাল করে তোলে সাদাকালো শিবিরকে। তবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না। ৮৬ মিনিটে দলের ভরসা হয়ে আসেন দুই ব্রাজিলিয়ান মিগুয়েল-ডোরিয়েলটন। মিগুয়েলের আলতো পাসে ডোরিয়েলটনের জোরালো শটে শিরোপার দেখা দেখা পায় ১০ জনের বসুন্ধরা।

শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে দুই দলের ফুটবলারদের মাঝে কয়েকবার হাতাহাতি বেধে যায়। যা চলমান থাকে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পরও। হতাশায় মুষড়ে থাকা মোহামেডান যেন খেই হারিয়ে ফেলে।

গত মৌসুমে মোহামেডানের বিপক্ষে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে কিংস হেরেছিল ১-২ গোলে। এবারের মৌসুমে কিংস আরেক টুর্নামেন্টে মোহামেডানকে সেই স্কোরলাইনে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিলো।