Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ঘরে ঢুকে নারীকে ধর্ষণ, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফজর আলী নামে মূল অভিযুক্তসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৯ জুন) ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ফজর আলী মুরাদনগরের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের শহীদের ছেলে।

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- একই গ্রামের অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, ঘটনার রাতে তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় ফজর আলী ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে।

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, ঘটনার সময় আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে জোরপূর্বক তার ভিডিও ধারণ করে এবং শনিবার রাতে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ সময় মারধরের শিকার হয়ে ফজর আলী পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী গত পাঁচ বছর ধরে প্রবাসে রয়েছেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

এদিকে ওই নারীকে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শনিবার রাত থেকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

কুমিল্লায় নারীর নগ্ন ভিডিওধারণ ও ভাইরালকাণ্ডে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ১০/১২ জন যুবক বিবস্ত্র অবস্থায় ওই নারীকে মারধর করছে। এসময় ওই নারী বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ তাকে রক্ষা করেনি।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে; দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি ওঠে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও ছড়ানোয় জড়িত চারজনকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই নারীর পাশের বাড়ির এক সদস্য বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ঘটনার সময় ফজর আলীকে স্থানীয় লোকজন আটকে মারধর করেন। পরে তাকে কুমিল্লা শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল থেকে ফজর আলী পালিয়ে যান। পরে আজ তাকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মেসি জোড়া গোলের নৈপুন্যে ইন্টার মায়ামির জয়

মুরাদনগরে ঘরে ঢুকে নারীকে ধর্ষণ, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশের সময় : ১১:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ফজর আলী নামে মূল অভিযুক্তসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৯ জুন) ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ফজর আলী মুরাদনগরের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের শহীদের ছেলে।

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- একই গ্রামের অনিক, সুমন, রমজান ও বাবু।

গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ, ঘটনার রাতে তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় ফজর আলী ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে।

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, ঘটনার সময় আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে জোরপূর্বক তার ভিডিও ধারণ করে এবং শনিবার রাতে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ সময় মারধরের শিকার হয়ে ফজর আলী পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী গত পাঁচ বছর ধরে প্রবাসে রয়েছেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

এদিকে ওই নারীকে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শনিবার রাত থেকে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

কুমিল্লায় নারীর নগ্ন ভিডিওধারণ ও ভাইরালকাণ্ডে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ১০/১২ জন যুবক বিবস্ত্র অবস্থায় ওই নারীকে মারধর করছে। এসময় ওই নারী বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ তাকে রক্ষা করেনি।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে; দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি ওঠে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও ছড়ানোয় জড়িত চারজনকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওই নারীর পাশের বাড়ির এক সদস্য বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ঘটনার সময় ফজর আলীকে স্থানীয় লোকজন আটকে মারধর করেন। পরে তাকে কুমিল্লা শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতাল থেকে ফজর আলী পালিয়ে যান। পরে আজ তাকে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।