নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলোচিত নেতা জাকির খান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। রোববার (১৩ এপ্রিল সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এ সময় তার স্বজন ও নেতাকর্মী ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে বরণ করে নেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জাকির খানের মুক্তির খবরে সকাল থেকে দলে দলে নেতাকর্মী ও তার স্বজনরা জেলা কারাগারের গেটের সামনে জড়ো হয়। এ সময় তারা ব্যান্ড বাজিয়ে ও স্লোগান দিয়ে উল্লাস করে। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় জাকির খান কারাগার থেকে মুক্ত হলে তারা ফুল ও মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। এ সময় জাকির খান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও ফিলিস্তিনের পতাকা নেড়ে আনন্দ উল্লাস করেন। পরে গাড়িতে চড়ে তিনি পুরো শহর ঘুরে শোডাউন করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে জাকির খানকে রিলিজ করা হয়। অনেক বছর আগে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তিনি পাঁচ বছর সাজা ভোগ করেন। সাজার মেয়াদ শেষ হলে আজ তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।’
জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব মণ্ডল বলেন, দীর্ঘদিন পর মুক্ত বাতাসে ফিরেছেন জাকির খান। তাকে পেয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে পড়েছেন। তারা অনেক বেশি আনন্দিত।
তিনি বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ৩২টি মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। বাকি ১টি মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।
সন্ত্রাসবিরোধী মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক আগে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় আজ তিনি সাজা শেষ করে মুক্তি পেয়েছেন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলার আসামি ছিলেন জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১ এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তিনি গ্রেফতার হন। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি ও মামলার অন্য আসামিরা খালাস পান।
এর আগে ২০০৩ সালে অপারেশন ক্লিন হার্ট চলার সময় ১৮ ফেব্রুয়ারি সাব্বির আলম খন্দকার খুন হওয়ার পর এ মামলার আসামি হওয়ায় তিনি নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানে সুকুমবিকে কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ‘গ্রেস’ নামে আট তলাবিশিষ্ট একটি থ্রি-স্টার হোটেল কিনে ব্যবসা পরিচালনা করেন। তবে দীর্ঘ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও তার অনুসারীরা জাকির খানের নামের আতঙ্ক বজায় রেখেছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাকির খানের অনুসারীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।