Dhaka শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিলানকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল ইন্টার

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:২৩:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
  • ২০৬ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে খেলার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো ইন্টার মিলান। সেমিফাইনালের প্রথম ধাপে নগর প্রতিদ্বন্দ্বি এসি মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৩ বছর অপেক্ষারত ক্লাবটিকে ফাইনালে যেতে অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র একটি ম্যাচ। সান সিরোতে উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগে নিজেদের এগিয়ে নিল লাউতারো মার্টিনেজের দল।

সান সিরোয় বুধবার (১০ মে) রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের প্রথম লেগে এসি মিলানকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে ইন্টার মিলান। গোল করে এদিন জেকো শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান হেনরিখ মিখিতারিয়ান।

গোলের জন্য ম্যাচের প্রথম দুটি শটেই সাফল্য পায় ইন্টার। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে কর্ণার কিক পায় ইন্টার। কর্ণার কিকে এসি মিলানের পেনাল্টি বক্সে ভাসিয়ে দেয়া বল দারুণ এক ভলিতে জালবন্দি করেন ইন্টারের এডিন জেকো। নীরব দর্শকের ভূমিকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না মিলান গোল রক্ষকের।

ম্যাচে লিড নিয়ে এগিয়ে থাকা ইন্টার পুনরায় দ্বিগুণ শক্তিতে শুরু করে আক্রমণ। ফলও পায় মিনিটের ব্যবধানেই। ম্যাচের দশম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মিলানের ফুটবলারদের ফাঁকি দিয়ে চোখের পলকে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন ইন্টারের হেনরিখ মাখিতারিয়ান। তার নেয়া ডান পায়ের জোরালো শট ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়েও মিলানের গোল রক্ষকের শেষ রক্ষা হয়নি। ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় সিমনে ইনজাঘির দল।

ম্যাচ শুরুর দশ মিনিটের মাথায় দুই গোল দিয়ে ফুরফুরে মেজাজে যাওয়া ইন্টার এরপর আক্রমণে গেছে আরও বেশ কয়েক বার। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৩১ মিনিটে ইন্টারের লাউতারো মার্টিনেজ মিলানের বক্সে পড়ে যাওয়ায় রেফারি পেনাল্টিও দিয়েছিলেন। তবে ভিএআর এর মাধ্যমে অবশ্য সে সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। প্রথমার্ধে আর গোল না হলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইন্টার।

এদিকে দুই গোল হজম করে মিলান ভুগতে থাকে ছন্দহীনতায়। ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ড রাফায়েল লেওয়া এ ম্যাচে খেলতে পারেনি চোটের কারণে যার প্রভাব পড়ে মাঠের খেলায়। প্রথমার্ধে মিলানের নেয়া পাঁচ শটের একটিও লক্ষ্যে ছিল না। একই সময়ে ইন্টারের নেয়া ১১ শটের তিনটিই ছিলো লক্ষ্যে।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয় এসি মিলান। ৫০তম মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে ব্রাহিম দিয়াসের শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর আরেকটি ভালো সুযোগ পায় তারা, শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জুনিয়র মেসিয়াস।

খানিক পর ব্যবধান বাড়ানোর বড় সুযোগ আসে ইন্টারের সামনে। জেকোর সামনে একমাত্র বাধা ছিল গোলরক্ষক। তার প্রচেষ্টা এগিয়ে এসে পা দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মিয়াঁ।

৬৪তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি মিলান। অলিভিয়ে জিরুদের পাস থেকে সান্দ্রো তনালির শট পোস্টে লাগে। একেবারে শেষ দিকে আরেকটি সুযোগ পায় তারা। কিন্তু তোমাসো পবেগা শট মারেন গোলরক্ষক বরাবর।

২০১০ সালের পর এখনও পর্যন্ত ইতালিয়ান কোনো ক্লাব চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয় করতে পারেনি। সর্বশেষ ২০১০ সালে জিতেছিলো ইন্টারমিলান। এবারও নিশ্চিত ইতালির একটি দল ফাইনাল খেলবে এবং শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।

ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখলে মনে হবে পুরো মাঠজুড়ে খেলেছে কেবল এসি মিলানই। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিলো মিলানই। তাদের ছিল ৫৭ ভাগ বল দখলে। ইন্টারের ৪৩ ভাগ। যদিও গোললক্ষ্যে বেশি শট নিয়েছিলো ইন্টারই। ১৬টি। যার মধ্যে ৫টি ছিল একেবারে পোস্ট বরাবর। অন্যদিকে এসি মিলানের শট ছিল ১৩টি। পোস্ট লক্ষ্যে ছিল কেবল ২টি।

প্রথমার্ধে ২ গোল হজম করার পর দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মিলান। কিন্তু গোলের পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। উল্টো নিজেদের দুই গোল ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে ইন্টার মিলান।

ম্যাচ শেষে বিটি স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গোলদাতা এডিন জেকো বলেন, আমি অসাধারণ অনুভব করছি। বিশেষ করে এটা ডার্বি (মিলান) হওয়ার কারণে। কাগজ-কলমে আমরা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছি। সুতরাং, এই জয় আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু।

সান সিরোয় এ ম্যাচটি ছিলো মিলানের হোম ম্যাচ। দ্বিতীয় ধাপের ম্যাচটি তাই ইন্টারের হোম হওয়ায় তাদের দর্শকও থাকবে বেশি। সব মিলিয়ে ফাইনালে যাওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ইন্টার। এদিকে দুই গোলের ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় মিলানের জন্য কঠিনই হবে ফাইনালে খেলা। ১৭ই মে দ্বিতীয় লেগে একই মাঠে মুখোমুখি হবে দুই দল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জোর করে চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সম্ভাবনা নষ্ট করে দেয় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

মিলানকে হারিয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল ইন্টার

প্রকাশের সময় : ০১:২৩:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে খেলার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো ইন্টার মিলান। সেমিফাইনালের প্রথম ধাপে নগর প্রতিদ্বন্দ্বি এসি মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৩ বছর অপেক্ষারত ক্লাবটিকে ফাইনালে যেতে অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র একটি ম্যাচ। সান সিরোতে উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের আগে নিজেদের এগিয়ে নিল লাউতারো মার্টিনেজের দল।

সান সিরোয় বুধবার (১০ মে) রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের প্রথম লেগে এসি মিলানকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে ইন্টার মিলান। গোল করে এদিন জেকো শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান হেনরিখ মিখিতারিয়ান।

গোলের জন্য ম্যাচের প্রথম দুটি শটেই সাফল্য পায় ইন্টার। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে কর্ণার কিক পায় ইন্টার। কর্ণার কিকে এসি মিলানের পেনাল্টি বক্সে ভাসিয়ে দেয়া বল দারুণ এক ভলিতে জালবন্দি করেন ইন্টারের এডিন জেকো। নীরব দর্শকের ভূমিকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না মিলান গোল রক্ষকের।

ম্যাচে লিড নিয়ে এগিয়ে থাকা ইন্টার পুনরায় দ্বিগুণ শক্তিতে শুরু করে আক্রমণ। ফলও পায় মিনিটের ব্যবধানেই। ম্যাচের দশম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মিলানের ফুটবলারদের ফাঁকি দিয়ে চোখের পলকে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন ইন্টারের হেনরিখ মাখিতারিয়ান। তার নেয়া ডান পায়ের জোরালো শট ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়েও মিলানের গোল রক্ষকের শেষ রক্ষা হয়নি। ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় সিমনে ইনজাঘির দল।

ম্যাচ শুরুর দশ মিনিটের মাথায় দুই গোল দিয়ে ফুরফুরে মেজাজে যাওয়া ইন্টার এরপর আক্রমণে গেছে আরও বেশ কয়েক বার। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৩১ মিনিটে ইন্টারের লাউতারো মার্টিনেজ মিলানের বক্সে পড়ে যাওয়ায় রেফারি পেনাল্টিও দিয়েছিলেন। তবে ভিএআর এর মাধ্যমে অবশ্য সে সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। প্রথমার্ধে আর গোল না হলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইন্টার।

এদিকে দুই গোল হজম করে মিলান ভুগতে থাকে ছন্দহীনতায়। ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ড রাফায়েল লেওয়া এ ম্যাচে খেলতে পারেনি চোটের কারণে যার প্রভাব পড়ে মাঠের খেলায়। প্রথমার্ধে মিলানের নেয়া পাঁচ শটের একটিও লক্ষ্যে ছিল না। একই সময়ে ইন্টারের নেয়া ১১ শটের তিনটিই ছিলো লক্ষ্যে।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয় এসি মিলান। ৫০তম মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে ব্রাহিম দিয়াসের শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর আরেকটি ভালো সুযোগ পায় তারা, শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জুনিয়র মেসিয়াস।

খানিক পর ব্যবধান বাড়ানোর বড় সুযোগ আসে ইন্টারের সামনে। জেকোর সামনে একমাত্র বাধা ছিল গোলরক্ষক। তার প্রচেষ্টা এগিয়ে এসে পা দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মিয়াঁ।

৬৪তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি মিলান। অলিভিয়ে জিরুদের পাস থেকে সান্দ্রো তনালির শট পোস্টে লাগে। একেবারে শেষ দিকে আরেকটি সুযোগ পায় তারা। কিন্তু তোমাসো পবেগা শট মারেন গোলরক্ষক বরাবর।

২০১০ সালের পর এখনও পর্যন্ত ইতালিয়ান কোনো ক্লাব চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয় করতে পারেনি। সর্বশেষ ২০১০ সালে জিতেছিলো ইন্টারমিলান। এবারও নিশ্চিত ইতালির একটি দল ফাইনাল খেলবে এবং শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।

ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখলে মনে হবে পুরো মাঠজুড়ে খেলেছে কেবল এসি মিলানই। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিলো মিলানই। তাদের ছিল ৫৭ ভাগ বল দখলে। ইন্টারের ৪৩ ভাগ। যদিও গোললক্ষ্যে বেশি শট নিয়েছিলো ইন্টারই। ১৬টি। যার মধ্যে ৫টি ছিল একেবারে পোস্ট বরাবর। অন্যদিকে এসি মিলানের শট ছিল ১৩টি। পোস্ট লক্ষ্যে ছিল কেবল ২টি।

প্রথমার্ধে ২ গোল হজম করার পর দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মিলান। কিন্তু গোলের পর্যাপ্ত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। উল্টো নিজেদের দুই গোল ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে ইন্টার মিলান।

ম্যাচ শেষে বিটি স্পোর্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গোলদাতা এডিন জেকো বলেন, আমি অসাধারণ অনুভব করছি। বিশেষ করে এটা ডার্বি (মিলান) হওয়ার কারণে। কাগজ-কলমে আমরা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছি। সুতরাং, এই জয় আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু।

সান সিরোয় এ ম্যাচটি ছিলো মিলানের হোম ম্যাচ। দ্বিতীয় ধাপের ম্যাচটি তাই ইন্টারের হোম হওয়ায় তাদের দর্শকও থাকবে বেশি। সব মিলিয়ে ফাইনালে যাওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ইন্টার। এদিকে দুই গোলের ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় মিলানের জন্য কঠিনই হবে ফাইনালে খেলা। ১৭ই মে দ্বিতীয় লেগে একই মাঠে মুখোমুখি হবে দুই দল।