Dhaka সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিরপুরে সংঘর্ষে ২ পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • ২১২ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) মিরপুর-১৪ নম্বরের কাফরুল এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন- সেনটেক্স ফ্যাশন লিমিটেডের সুইং অপারেটর আল আমিন হোসেন ও ঝুমা আক্তার।

গুলিবিদ্ধ পোশাকশ্রমিক আল আমিনের বাড়ি খুলনায়। তিনি মিরপুর-১৪ নম্বরের বিআরপি এলাকায় থাকেন। সকালে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। তিনি বাসায় চলে যাচ্ছিলেন। তখন তার পিঠে গুলি লাগে বলে জানান সহকর্মী মো. কবির হোসেন।

আর গুলিবিদ্ধ ঝুমা সেনটেক্স ফ্যাশনে অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। তার ডান পায়ে গুলি লেগেছে বলে জানান বড় বোন মর্জিনা বেগম।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শ শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর-১৪ নম্বর কচুক্ষেত সড়কে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।

সংঘর্ষ মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মিরপুর ১৪ নম্বর সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ পোশাকশ্রমিকদের লাঠিপেটা করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ও পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

পুলিশ একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি চালায়। এতে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। আল আমিনের দুই কাঁধে ও ঝুমার ডান পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে গুলিবিদ্ধ আল-আমিনের বাবা আব্দুর রহমান বলেন, আমার ছেলে মিরপুর-১৪ এলাকার ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার গার্মেন্টসে পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। সকাল ৯টার দিকে তারা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় পোশাক শ্রমিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে ও গুলিতে আমার ছেলে এবং রুমা নামে আরো এক পোশাক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।

কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছে। একপর্যায়ে পোশাকশ্রমিকেরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা লিমা খানম বলেন, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়িতে লাগা আগুন নিভিয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, মিরপুরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আল-আমিন ও রুমা নামের দুই পোশাক শ্রমিককে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট-হরিরামপুর সড়কটি যেন মরণফাঁদ

মিরপুরে সংঘর্ষে ২ পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ

প্রকাশের সময় : ০৩:০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের সংঘর্ষে নারীসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) মিরপুর-১৪ নম্বরের কাফরুল এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন- সেনটেক্স ফ্যাশন লিমিটেডের সুইং অপারেটর আল আমিন হোসেন ও ঝুমা আক্তার।

গুলিবিদ্ধ পোশাকশ্রমিক আল আমিনের বাড়ি খুলনায়। তিনি মিরপুর-১৪ নম্বরের বিআরপি এলাকায় থাকেন। সকালে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। তিনি বাসায় চলে যাচ্ছিলেন। তখন তার পিঠে গুলি লাগে বলে জানান সহকর্মী মো. কবির হোসেন।

আর গুলিবিদ্ধ ঝুমা সেনটেক্স ফ্যাশনে অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। তার ডান পায়ে গুলি লেগেছে বলে জানান বড় বোন মর্জিনা বেগম।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শ শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর-১৪ নম্বর কচুক্ষেত সড়কে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।

সংঘর্ষ মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মিরপুর ১৪ নম্বর সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ পোশাকশ্রমিকদের লাঠিপেটা করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ও পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

পুলিশ একপর্যায়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি চালায়। এতে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। আল আমিনের দুই কাঁধে ও ঝুমার ডান পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে গুলিবিদ্ধ আল-আমিনের বাবা আব্দুর রহমান বলেন, আমার ছেলে মিরপুর-১৪ এলাকার ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার গার্মেন্টসে পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। সকাল ৯টার দিকে তারা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় পোশাক শ্রমিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে ও গুলিতে আমার ছেলে এবং রুমা নামে আরো এক পোশাক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে।

কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছে। একপর্যায়ে পোশাকশ্রমিকেরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা লিমা খানম বলেন, ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়িতে লাগা আগুন নিভিয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, মিরপুরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আল-আমিন ও রুমা নামের দুই পোশাক শ্রমিককে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।