Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারের পণ্য আনতে সরকার ও আরাকান আর্মিকে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি : 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিয়ানমার থেকে পণ্য আনার সময় সিটওয়েতে মিয়ানমার সরকার ও পরে নাফ নদীর সীমান্ত অতিক্রমের সময় আরাকান আর্মিকে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। আর সীমান্ত উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে মিয়ানমার সরকারসহ উভয়পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। এটি একটি বড় সমস্যা এবং তা সমাধানে সরকার কাজ করছে।

শনিবার (১ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য রয়েছে। কিন্তু আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্য দখলে নেওয়ার পর থেকে সীমান্ত বাণিজ্যের জাহাজ আসা যাওয়ায় তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এরইমধ্যে অনেক জাহাজ তারা আটকে রেখেছিল। ধরে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশি অনেক জেলেকে। এসব ঘটনা স্বাভাবিক বাণিজ্য পরিস্থিতি ব্যাহত করছে। এ কারণে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের স্বার্থে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিংহভাগ দখল নেওয়া আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ঢাকা।

প্রশাসনের একটি রোগ জারি হয়ে আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, রোগটি হচ্ছে ক্ষমতায় কে আসতে পারে সেই সম্ভাব্যতা থেকে সে দলের নেতাকর্মীদের আগাম তেল দেওয়া। এখানে ঊর্ধ্বতন বা মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা থাকে না।’

দলীয় পরিচয়ে পর্যটন এলাকায় দখল-বেদখল, মারামারি ও ছিনতাই বাড়ছে, সাংবাদিকে এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা কোনো দলের বদান্যতায় কাজ করছি না। দেশের কল্যাণে যা যা করণীয় তাই করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাউকে কোনো দপ্তর থেকে বলে দেওয়া হয়নি, অমুখ দলের লোকজনকে সহানুভূতি দেখাতে। কোনো দলের নেতাকর্মীরা দখল বা অন্য কোনো অপরাধে জড়ালে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় নয়, অপরাধ বিবেচনায় ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন।’

উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজারে অপহরণ ও মাদকের বিস্তার বেড়েছে। প্রায়শ গণমাধ্যমে বিষয়টি আসছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) ও স্থানীয় সচেতনমহল জানেন কারা এসব করছে।’

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। কাগজে কলমে ১২ লাখ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। এরা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। এদের প্রত্যাবাসন ছাড়া সীমান্ত এলাকার অপরাধ কর্মকাণ্ড থামানো মুশকিল। আবার তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনও সম্ভব নয়। বলতে গেলে রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা শাঁখের করাতে রয়েছি।

সভায় সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার, কারা অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কক্সবাজার জেলার দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

মিয়ানমারের পণ্য আনতে সরকার ও আরাকান আর্মিকে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি : 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিয়ানমার থেকে পণ্য আনার সময় সিটওয়েতে মিয়ানমার সরকার ও পরে নাফ নদীর সীমান্ত অতিক্রমের সময় আরাকান আর্মিকে ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। আর সীমান্ত উদ্ভুদ পরিস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে মিয়ানমার সরকারসহ উভয়পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। এটি একটি বড় সমস্যা এবং তা সমাধানে সরকার কাজ করছে।

শনিবার (১ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য রয়েছে। কিন্তু আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্য দখলে নেওয়ার পর থেকে সীমান্ত বাণিজ্যের জাহাজ আসা যাওয়ায় তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এরইমধ্যে অনেক জাহাজ তারা আটকে রেখেছিল। ধরে নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশি অনেক জেলেকে। এসব ঘটনা স্বাভাবিক বাণিজ্য পরিস্থিতি ব্যাহত করছে। এ কারণে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের স্বার্থে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিংহভাগ দখল নেওয়া আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ঢাকা।

প্রশাসনের একটি রোগ জারি হয়ে আছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, রোগটি হচ্ছে ক্ষমতায় কে আসতে পারে সেই সম্ভাব্যতা থেকে সে দলের নেতাকর্মীদের আগাম তেল দেওয়া। এখানে ঊর্ধ্বতন বা মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা থাকে না।’

দলীয় পরিচয়ে পর্যটন এলাকায় দখল-বেদখল, মারামারি ও ছিনতাই বাড়ছে, সাংবাদিকে এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা কোনো দলের বদান্যতায় কাজ করছি না। দেশের কল্যাণে যা যা করণীয় তাই করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাউকে কোনো দপ্তর থেকে বলে দেওয়া হয়নি, অমুখ দলের লোকজনকে সহানুভূতি দেখাতে। কোনো দলের নেতাকর্মীরা দখল বা অন্য কোনো অপরাধে জড়ালে প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় নয়, অপরাধ বিবেচনায় ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন।’

উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজারে অপহরণ ও মাদকের বিস্তার বেড়েছে। প্রায়শ গণমাধ্যমে বিষয়টি আসছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) ও স্থানীয় সচেতনমহল জানেন কারা এসব করছে।’

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। কাগজে কলমে ১২ লাখ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। এরা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে। এদের প্রত্যাবাসন ছাড়া সীমান্ত এলাকার অপরাধ কর্মকাণ্ড থামানো মুশকিল। আবার তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনও সম্ভব নয়। বলতে গেলে রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা শাঁখের করাতে রয়েছি।

সভায় সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার, কারা অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কক্সবাজার জেলার দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।