Dhaka রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদারীপুরে দুটি গ্রামীণ সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বৃষ্টি হলেই মাদারীপুরের দুটি গ্রামীণ সড়ক যেন হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ! রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্ত, পুরোপথ কাঁদায় ঢাকা। ফলে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা থাকায় চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসীর মধ্যে।

জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন টুকু মোল্লার বাড়ি থেকে সরদারকান্দি পর্যন্ত সড়কের দুরত্ব চার কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। অথচ ইটভাটার কাজে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত মাহিন্দ্র ও ট্রাক-পিকআপভ্যানের কারণে সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে মৃত্যুফাঁদ। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কোথাও আবার ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। হেঁটে চলাচল করাও এখন অস্বস্তিকর হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েছে চরম বিপাকে।

এদিকে পখিরা বাজার থেকে শুরু হয়ে আজিজুল মহাজনের বাড়ি পর্যন্ত আরও সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কেরও একই অবস্থা। বৃষ্টির পানিতে পুরো সড়ক এখন হাঁটু কাঁদায় ভরা। জীবিকার তাগিয়ে চলাচল করছে তিন চাকার যানবাহন। তাও পুরো রাস্তা ঠেলে নিতে হয়। মাঝে মাঝে কাঁদায় আটকে যায় গাড়ি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই পথ দিয়ে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতেও ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও নেওয়া কোনো হয়নি ব্যবস্থা। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

পখিরা গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, যেখানে পাকা সড়ক আছে, সেখানে পুনরায় আবার সড়কে কাজ হচ্ছে। আমাদের এলাকায় এতো ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক, তারপরও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা দ্রুত এই সড়কটি পাকাকরণ চাই। তাহলে এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হবে।
ভ্যানচালক জালাল মৃধা বলেন, একসঙ্গে দুই থেকে তিনজন মানুষ লাগে ভ্যান ঠেলে আনতে। এলাকার মানুষ কৃষিকাজও করতে পারছে না ঠিকমতো। কৃষিপণ্য আনা-নেয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

জাজিরা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার বলেন, আমরা শহরের খুব কাছাকাছি থেকেও পাকা সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে আছি। এলাকার সবাই কষ্টে আছে। কবে এখানে উন্নতমানের সড়ক হবে সেই অপেক্ষায় এলাকাবাসী।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে পখিরার সড়কটি খোঁয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইটের সোলিং-এর রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে অসমাপ্তই রাখা হয়। আর পাঁচখোলার সড়কটি কবে সংস্কার করা হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই কারও কাছে।

এদিকে সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশ্য, চলতি অর্থবছরেই সড়ক দুটি সংস্কারের আশ্বাস দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, সদর উপজেলার বেশকিছু গ্রামীণ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। সরেজমিন পরির্দশন করে গুরুত্ব বিবেচনায় সড়কগুলো মেরামত বা সংস্কার করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে নির্মাণও করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গম আমদানির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

মাদারীপুরে দুটি গ্রামীণ সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

প্রকাশের সময় : ০২:৫৩:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বৃষ্টি হলেই মাদারীপুরের দুটি গ্রামীণ সড়ক যেন হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ! রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্ত, পুরোপথ কাঁদায় ঢাকা। ফলে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা থাকায় চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসীর মধ্যে।

জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন টুকু মোল্লার বাড়ি থেকে সরদারকান্দি পর্যন্ত সড়কের দুরত্ব চার কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। অথচ ইটভাটার কাজে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত মাহিন্দ্র ও ট্রাক-পিকআপভ্যানের কারণে সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে মৃত্যুফাঁদ। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কোথাও আবার ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল। হেঁটে চলাচল করাও এখন অস্বস্তিকর হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও পড়েছে চরম বিপাকে।

এদিকে পখিরা বাজার থেকে শুরু হয়ে আজিজুল মহাজনের বাড়ি পর্যন্ত আরও সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কেরও একই অবস্থা। বৃষ্টির পানিতে পুরো সড়ক এখন হাঁটু কাঁদায় ভরা। জীবিকার তাগিয়ে চলাচল করছে তিন চাকার যানবাহন। তাও পুরো রাস্তা ঠেলে নিতে হয়। মাঝে মাঝে কাঁদায় আটকে যায় গাড়ি। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই পথ দিয়ে রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতেও ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও নেওয়া কোনো হয়নি ব্যবস্থা। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

পখিরা গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, যেখানে পাকা সড়ক আছে, সেখানে পুনরায় আবার সড়কে কাজ হচ্ছে। আমাদের এলাকায় এতো ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক, তারপরও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা দ্রুত এই সড়কটি পাকাকরণ চাই। তাহলে এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হবে।
ভ্যানচালক জালাল মৃধা বলেন, একসঙ্গে দুই থেকে তিনজন মানুষ লাগে ভ্যান ঠেলে আনতে। এলাকার মানুষ কৃষিকাজও করতে পারছে না ঠিকমতো। কৃষিপণ্য আনা-নেয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

জাজিরা গ্রামের বাসিন্দা আবুল বাশার বলেন, আমরা শহরের খুব কাছাকাছি থেকেও পাকা সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে আছি। এলাকার সবাই কষ্টে আছে। কবে এখানে উন্নতমানের সড়ক হবে সেই অপেক্ষায় এলাকাবাসী।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে পখিরার সড়কটি খোঁয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইটের সোলিং-এর রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে অসমাপ্তই রাখা হয়। আর পাঁচখোলার সড়কটি কবে সংস্কার করা হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই কারও কাছে।

এদিকে সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অবশ্য, চলতি অর্থবছরেই সড়ক দুটি সংস্কারের আশ্বাস দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, সদর উপজেলার বেশকিছু গ্রামীণ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। সরেজমিন পরির্দশন করে গুরুত্ব বিবেচনায় সড়কগুলো মেরামত বা সংস্কার করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে নির্মাণও করা হবে।