Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে শেষমেশ তিনি এমপি পদ হারালেন। মহুয়ার এমপি পদ খারিজ করে দেওয়ার পর লোকসভায় মহুয়াকে তার নিজের বক্তব্য পেশ করারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রশ্নঘুষ’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। সেই কমিটি আজ ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। এ ছাড়া কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্ত লোকসভার স্পিকার সময় দেননি।

এর আগে মহুয়া মৈত্রর সংসদ সদস্যপদ খারিজের সুপারিশ করে ‘এথিকস কমিটি’। তার বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার যে অভিযোগ শাসক দল বিজেপি করেছিল, তার ‘তদন্ত’ শেষ করে এথিকস কমিটি ওই সুপারিশ চূড়ান্ত করে।

এথিকস কমিটির ওই সুপারিশ গত ১০ নভেম্বর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে পেশ করা হয়। স্পিকার এ বিষয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রস্তাব পাশ করান লোকসভায়। এরপর আজ তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ করা হয়।

এদিকে লোকসভায় মহুয়াকে বলতে না দেওয়ার বিষয়ে স্পিকার বলেছেন, মহুয়া আগে নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। তাই আবার তাকে সুযোগ দেওয়া হবে না। পুরোনো উদাহরণ টেনে এই যুক্তি দেন স্পিকার। মহুয়া বলার জন্য একাধিক বার উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়।

বিজেপির পক্ষে সংসদ সদস্য অপরাজিতা সরঙ্গি বলেন, মহুয়াকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সুযোগ পেলেও তখন কিছু বলেননি। ওয়াকআউট করে গিয়েছিলেন।

লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদের বাইরে এসে গর্জে উঠেন মহুয়া মৈত্র। তিনি জানান, এ ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। এমনকি আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভেতরে ও বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই এমপি।

মহুয়া বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হলো, যা লোকসভার সব সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনো উপহার নিয়েছি, তার কোনো প্রমাণ নেই।

তিনি আরও বলেন, মোদি সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস যাবৎ আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসা–বাণিজ্য নিয়ে মহুয়া বেশ কিছু প্রশ্ন করছিলেন। ঝাড়খন্ড জেলার গোড্ডা (ওখানে আদানির প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি হয়) কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিজেপির নিশিকান্ত দুবে স্পিকারকে চিঠি লিখে মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অনৈতিকতার’ অভিযোগ আনেন।

তার অভিযোগ, শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নানাবিধ ‘সুবিধা’ নিয়ে তার ব্যবসায়িক স্বার্থে মহুয়া প্রশ্নই শুধু করেননি, ই-মেইলের লগইন পাসওয়ার্ড পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীকে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি সরাসরি প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। দুবের অভিযোগ, দুবাইয়ে বসে হিরানন্দানি সেই কাজ করেছেন, যা ‘দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার

প্রকাশের সময় : ০৬:৩১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে শেষমেশ তিনি এমপি পদ হারালেন। মহুয়ার এমপি পদ খারিজ করে দেওয়ার পর লোকসভায় মহুয়াকে তার নিজের বক্তব্য পেশ করারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রশ্নঘুষ’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। সেই কমিটি আজ ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। এ ছাড়া কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও স্পিকারের কাছে সময়ের জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্ত লোকসভার স্পিকার সময় দেননি।

এর আগে মহুয়া মৈত্রর সংসদ সদস্যপদ খারিজের সুপারিশ করে ‘এথিকস কমিটি’। তার বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার যে অভিযোগ শাসক দল বিজেপি করেছিল, তার ‘তদন্ত’ শেষ করে এথিকস কমিটি ওই সুপারিশ চূড়ান্ত করে।

এথিকস কমিটির ওই সুপারিশ গত ১০ নভেম্বর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে পেশ করা হয়। স্পিকার এ বিষয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রস্তাব পাশ করান লোকসভায়। এরপর আজ তার সংসদ সদস্য পদ খারিজ করা হয়।

এদিকে লোকসভায় মহুয়াকে বলতে না দেওয়ার বিষয়ে স্পিকার বলেছেন, মহুয়া আগে নিজের বক্তব্য জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। তাই আবার তাকে সুযোগ দেওয়া হবে না। পুরোনো উদাহরণ টেনে এই যুক্তি দেন স্পিকার। মহুয়া বলার জন্য একাধিক বার উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়।

বিজেপির পক্ষে সংসদ সদস্য অপরাজিতা সরঙ্গি বলেন, মহুয়াকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সুযোগ পেলেও তখন কিছু বলেননি। ওয়াকআউট করে গিয়েছিলেন।

লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদের বাইরে এসে গর্জে উঠেন মহুয়া মৈত্র। তিনি জানান, এ ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। এমনকি আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভেতরে ও বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত এই এমপি।

মহুয়া বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিতে ‘এথিক্স’ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। তারা সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হলো, যা লোকসভার সব সদস্যের মধ্যে প্রচলিত একটি অভ্যাস। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছি বা কোনো উপহার নিয়েছি, তার কোনো প্রমাণ নেই।

তিনি আরও বলেন, মোদি সরকার যদি ভেবে থাকে, আমাকে এভাবে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা মুক্তি পাবে, তবে ভুল ভাবছে।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস যাবৎ আদানি গোষ্ঠীর ব্যবসা–বাণিজ্য নিয়ে মহুয়া বেশ কিছু প্রশ্ন করছিলেন। ঝাড়খন্ড জেলার গোড্ডা (ওখানে আদানির প্রকল্প থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি হয়) কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিজেপির নিশিকান্ত দুবে স্পিকারকে চিঠি লিখে মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অনৈতিকতার’ অভিযোগ আনেন।

তার অভিযোগ, শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নানাবিধ ‘সুবিধা’ নিয়ে তার ব্যবসায়িক স্বার্থে মহুয়া প্রশ্নই শুধু করেননি, ই-মেইলের লগইন পাসওয়ার্ড পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীকে দিয়েছিলেন, যাতে তিনি সরাসরি প্রশ্ন পাঠাতে পারেন। দুবের অভিযোগ, দুবাইয়ে বসে হিরানন্দানি সেই কাজ করেছেন, যা ‘দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক’।