মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় রিটার্নিং অফিসারের অফিসের বারান্দায় গড়াগড়ি দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আব্দুল আলী ব্যাপারী। এ সময় তিনি চিৎকার করে বলেন, চক্রান্ত করে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁর মনোনয়পত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাদ হওয়ার পর তিনি এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান।
আব্দুল আলী ব্যাপারী মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের তালিকা দিতে না পারায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়।
জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মো. আব্দুল আলী বেপারী মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বেড়াডাঙ্গা এলাকার কিয়ামুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের মাধ্যমে বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তার কাছে নগদ ২ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। শিক্ষাগত কোনো সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি সুশিক্ষিত।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো.আব্দুল আলী বেপারী ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল আলী বেপারী বলেন, আমি এখন আমার ভোটারদের মুখ দেখাবো কেমনে, আমি আর বাচুমনা। আমি ভোট দিতে না পারলে মরুম, আমার জীবন রাখুম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আবেদন, আমার ভোট আমাকে দিয়ে যেন মরতে পারি। আমার বিশ্বাস আছে, মানুষ আমাকে ভোট দিবে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবো। যেকোনো চক্রান্তের মাধ্যমে আমার নমিনেশন বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি এই চক্রান্ত বিশ্বাস করি না। আমাকে আমার ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।
মানিকগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার বলেন, মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের মনোনয়নপত্রের যাচাই-বাছাইয়ের দিন ধার্য ছিল আজ। আমাদের প্রাপ্ত মনোনয়নপত্র ছিল ৩৩টি। যাচাই-বাছাইয়ে ১২টি বাতিল হয়েছে এবং যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তাঁরা ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন। আপিল যৌক্তিক হলে এর সমাধান পাবেন প্রার্থী।
এর আগে ঘিওর উপজেলার সিংজুড়ি ইউনিয়নে তিন দফায় চেয়ারম্যান পদে অংশ নেন আব্দুল আলী ব্যাপারী। এর মধ্যে দুবার তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। আরেকবার আটজনের মধ্যে হন ষষ্ঠ। সহজ-সরল কিন্তু নির্বাচন করার একটা বাতিক আছে বলে এলাকায় তিনি সবার কাছে পরিচিত। এবার সংসদ সদস্য পদে তিনি মনোনয়ন দাখিল করার পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হন।