আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
আবারও জাতিগত সহিংসতায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। নতুন সহিংসতা শুরু হওয়ার পর গত ২৪ ঘণ্টায় একনারীসহ ৯ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর শিথিল করা কারফিউ ফের কড়াকড়ি করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মণিপুরে নতুন করে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যটিতে এক নারীসহ নয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খামেনলোক এলাকায় মঙ্গলবার (১৩ জুন) গভীর রাতে গুলির ঘটনায় হতাহত হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য ইম্ফলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সহিংসতায় নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে কাটা দাগ এবং একাধিক বুলেটের আঘাত রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ জন প্রাণ হারিয়েছে। আরও অনেক আহত হয়েছে। এছাড়া বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে।
এর আগে গত ২৭ মে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়। জানা গেছে শান্তি ফেরানোর জন্য চিরুনিতল্লাশি শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। এর জেরেই এ সংঘর্ষ শুরু হয়, বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।
গত কয়েক দিন ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই এবং সংখ্যালঘু কুকি-যোমি দুই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলে। সে কারণে উত্তপ্ত মণিপুর। মারা গেছে প্রায় ৭০ জন। গত ২৫ দিন ধরে সেখানে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ। বহু মানুষ ঘরছাড়া। তবে রোববার ভোরের সংঘর্ষ এই দুই জনজাতির মধ্যে হয়নি বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কুকি গোষ্ঠী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ওপর এম-১৬, একে-৪৭, স্নাইপার বন্দুক নিয়ে হামলাকারীরা আক্রমণ। অনেক গ্রামে ঢুকে বহু ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। সেনা এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের চারপাশে অন্তত ৫টি এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে।। সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং, সেরৌতে রোববার রাত ২টা থেকে চলে এ হামলা।
এদিকে, জাতিগত সহিংসতায় বিধ্বস্ত ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে মে মাসের শেষের দিকে সফরে গিয়েছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেসময় তিনি সহিংসতায় জড়িত মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের সদস্যদেরকে শান্তি বজায় রাখার এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। সূত্র : এনডিটিভি।