Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মঙ্গলবারও তীব্র যানজটে দুর্ভোগ নগরবাসীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর নর্দ্দা ফুটওভার ব্রিজের নিচে সাড়ি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি বাস। এগুলো যাত্রীর অপেক্ষায় রয়েছে। সড়কের অনেকটা জায়গাও দখল করে বাসগুলো সড়কের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। যদিও বাসে তখনও যাত্রী ভরা ছিল, তারপরও যাত্রী তুলতে সময়ক্ষেপণ করছেন বাসচালক ও হেলপার। সড়কের মাঝে বাসগুলো দাঁড়ানোর কারণে পেছনে সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের জটলা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরা, হাউজবিল্ডিং, বিমানবন্দর হয়ে খিলক্ষেত বিশ্বরোড হয়ে রেডিসনের সামনে দিয়ে বনানী মহাখালী পর্যন্ত সড়কে, এদিকে মহাখালী থেকে সাতরাস্তা, মগবাজার হয়ে রমনা, মৎসভবন এবং মহাখালী থেকে জাহাঙ্গীর গেট হয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার হয়ে বাংলামোটর-শাহবাগ হয়ে মৎসভবন প্রেসক্লাব পর্যন্ত যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ দেখা গেছে। অপরদিকে, খিলক্ষেত থেকে কুড়িল হয়ে নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

মতিঝিলের একটি আইটি ফার্মে চাকরি করেন হাসিবুল ইসলাম। সকালে ৬০ ফিট পাকা মসজিদ এলাকার বাসা থেকে বের হয়েই রিকশায় ওঠেন। কিন্তু যানজট যেন তার ঘরের পাশেই। রিকশার চাকা স্থবির হয়ে গেলে সামনের সিগন্যালে। সেখান থেকে কোনও রকমে আগারগাঁও এসে বাসে উঠে উড়োজাহাজ সিগন্যাল পর্যন্ত আসতেই আধা ঘণ্টা লেগে গেল।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় বিজয় সরণি সিগন্যালের উড়োজাহাজ মোড়ে কথা হয় হাসিবুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথম রমজান ছিল শুক্রবার। এরপর শনিবার, তারপর দিন তো ২৬ মার্চের ছুটি গেল। গতকাল বের হয়ে এলো যানজটের আসল চিত্র। যানজট নাকাল অস্থায় পড়েছে রাজধানীবাসী। আজ সকালে আগারগাঁও থেকে শুরু যানজট। এখনো বিজয় সরণি পৌঁছাতে পারিনি। পৌনে এক ঘণ্টা সময় পার। মতিঝিল তো আরও বহুদূর।

এই ভোগান্তি শুধু হাসিবুলের একার নয় কিংবা এই যানজটের চিত্র শুধু আগারগাঁও-বিজয় সরণির নয়, রাজধানীর অনেক স্থানেরই চিত্র। সরেজমিনে, প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী অফিসগামী যাত্রীদের মুখে উঠে এসেছে অসহনীয় যানজটের তথ্য। তবে কোথাও কোথাও সিগন্যালিংয়ের কারণে রাস্তা ফাঁকাও দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেখা যায়, যানজটে গাড়িতে বসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন যানজটের মাত্রাও বাড়ছিল।

সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর শেরে বাংলা নগর, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, বনানী, মহাখালী-গুলশান-১ সড়ক, বাড্ডা প্রগতি সরণির দুই লেন, রামপুরা এলাকায় তীব্র যানজট। রমনার সার্কিট হাউজ রোড, কাকরাইলের সড়কে বাড়তি যানবাহনের চাপ। যে চাপ সামলাতে অনেকক্ষণ একেকটি সিগন্যাল বন্ধ রাখতে হচ্ছে ট্র্যাফিক কর্মকর্তাদের।

dhakapost

রাজধানী জুড়ে যানজটের বিষয়ে ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগের দাবি, এবার রোজায় অফিসের সময় বদলেছে, রাস্তায় চাপও বেড়েছে। যে কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে, তবে গত রমজানের তুলনায় এবার সড়কে চাপ কমই।

সবুজ নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, রাজধানীর আগারগাঁও এলাকা থেকে কারওয়ান বাজার আসতে দূরত্ব মাত্র আড়াই কি.মি.। কিন্তু আজ সময় লাগছে ৪৫ মিনিট। তাও মোটরসাইকেলে। অন্য পরিবহন বাস বা প্রাইভেটকারের অবস্থাটা ভাবুন।

গুলজার হোসেন নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক বলেন, যেন অনেক কসরত করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পার হয়েছি, ভাবলাম হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু মগবাজার ফ্লাইওভার উঠে মালিবাগ নামতে পারছিলাম না যানজটে।

ডিএমপির ট্র্যাফিক তেজগাঁও বিভাগের শেরে বাংলা নগর এলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার তারেক সেকান্দার বলেন, আজ তুলনামূলক চিত্র ভালো। উড়োজাহাজ সিনগাল এলাকার মেট্রোরেলের স্টেশনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আগারগাঁও থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনগুলো ওখানে এসে চাপে পড়ছে। তাছাড়া বিজয় সরণির সিগন্যালের চাপ তো থাকেই। তবে আগারগাঁও থেকে নতুন বাইপাস সড়ক-জাহাঙ্গার গেট ক্লিয়ার। কোনও চাপ নেই।
ডিএমপির ট্র্যাফিক তেজগাঁওয়ে তেজগাঁও এলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার স্নেহাশিষ বলেন, সোমবার (২৭ মার্চ) বেশ ঝামেলাই ছিল। আজ সে তুলনায় বেশ ভাল। গাড়ি বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখছি না। সিগন্যাল মেইনটেইন করতে যতোটুকু লাগে। হাতিরঝিল থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত সড়কও আগের তুলনায় বেটার।

ডিএমপির ট্রাফিক গুলশানের মহাখালীর সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হোসেন বলেন, এ এলাকার স্কুলকলেজ সব বন্ধ থাকায় চাপ কমেছে। কিন্তু মহাখালী গাউসুল আজম মসজিদের ওখানে রাস্তা কাটা ছিল। যে কারণে কাল বেশ তালগোল পাকিয়েছিল। আজ সেটা ক্লিয়ার। আমরা সিটি কর্পোরেশনকে বলে ওটা ঠিক করে নিয়েছি। তবে লাভ রোডে চাপ আছে।

ডিএমপির ট্রাফিকের গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইমরান হোসেন বলেন, প্রগতি সরণি এলাকায় চাপ আছে। এই চাপ অফিসগামী যাত্রী, পরিবহনের। এটা থাকবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এরপর আবার শুরু হবে তিনটা থেকে। ইফতারের পূর্ব পর্যন্ত ব্যাপক চাপ তৈরি হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

মঙ্গলবারও তীব্র যানজটে দুর্ভোগ নগরবাসীর

প্রকাশের সময় : ১২:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর নর্দ্দা ফুটওভার ব্রিজের নিচে সাড়ি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি বাস। এগুলো যাত্রীর অপেক্ষায় রয়েছে। সড়কের অনেকটা জায়গাও দখল করে বাসগুলো সড়কের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। যদিও বাসে তখনও যাত্রী ভরা ছিল, তারপরও যাত্রী তুলতে সময়ক্ষেপণ করছেন বাসচালক ও হেলপার। সড়কের মাঝে বাসগুলো দাঁড়ানোর কারণে পেছনে সৃষ্টি হয়েছে যানবাহনের জটলা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারী।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরা, হাউজবিল্ডিং, বিমানবন্দর হয়ে খিলক্ষেত বিশ্বরোড হয়ে রেডিসনের সামনে দিয়ে বনানী মহাখালী পর্যন্ত সড়কে, এদিকে মহাখালী থেকে সাতরাস্তা, মগবাজার হয়ে রমনা, মৎসভবন এবং মহাখালী থেকে জাহাঙ্গীর গেট হয়ে ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার হয়ে বাংলামোটর-শাহবাগ হয়ে মৎসভবন প্রেসক্লাব পর্যন্ত যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ দেখা গেছে। অপরদিকে, খিলক্ষেত থেকে কুড়িল হয়ে নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

মতিঝিলের একটি আইটি ফার্মে চাকরি করেন হাসিবুল ইসলাম। সকালে ৬০ ফিট পাকা মসজিদ এলাকার বাসা থেকে বের হয়েই রিকশায় ওঠেন। কিন্তু যানজট যেন তার ঘরের পাশেই। রিকশার চাকা স্থবির হয়ে গেলে সামনের সিগন্যালে। সেখান থেকে কোনও রকমে আগারগাঁও এসে বাসে উঠে উড়োজাহাজ সিগন্যাল পর্যন্ত আসতেই আধা ঘণ্টা লেগে গেল।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় বিজয় সরণি সিগন্যালের উড়োজাহাজ মোড়ে কথা হয় হাসিবুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথম রমজান ছিল শুক্রবার। এরপর শনিবার, তারপর দিন তো ২৬ মার্চের ছুটি গেল। গতকাল বের হয়ে এলো যানজটের আসল চিত্র। যানজট নাকাল অস্থায় পড়েছে রাজধানীবাসী। আজ সকালে আগারগাঁও থেকে শুরু যানজট। এখনো বিজয় সরণি পৌঁছাতে পারিনি। পৌনে এক ঘণ্টা সময় পার। মতিঝিল তো আরও বহুদূর।

এই ভোগান্তি শুধু হাসিবুলের একার নয় কিংবা এই যানজটের চিত্র শুধু আগারগাঁও-বিজয় সরণির নয়, রাজধানীর অনেক স্থানেরই চিত্র। সরেজমিনে, প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী অফিসগামী যাত্রীদের মুখে উঠে এসেছে অসহনীয় যানজটের তথ্য। তবে কোথাও কোথাও সিগন্যালিংয়ের কারণে রাস্তা ফাঁকাও দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেখা যায়, যানজটে গাড়িতে বসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন যানজটের মাত্রাও বাড়ছিল।

সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর শেরে বাংলা নগর, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, বনানী, মহাখালী-গুলশান-১ সড়ক, বাড্ডা প্রগতি সরণির দুই লেন, রামপুরা এলাকায় তীব্র যানজট। রমনার সার্কিট হাউজ রোড, কাকরাইলের সড়কে বাড়তি যানবাহনের চাপ। যে চাপ সামলাতে অনেকক্ষণ একেকটি সিগন্যাল বন্ধ রাখতে হচ্ছে ট্র্যাফিক কর্মকর্তাদের।

dhakapost

রাজধানী জুড়ে যানজটের বিষয়ে ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগের দাবি, এবার রোজায় অফিসের সময় বদলেছে, রাস্তায় চাপও বেড়েছে। যে কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে, তবে গত রমজানের তুলনায় এবার সড়কে চাপ কমই।

সবুজ নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, রাজধানীর আগারগাঁও এলাকা থেকে কারওয়ান বাজার আসতে দূরত্ব মাত্র আড়াই কি.মি.। কিন্তু আজ সময় লাগছে ৪৫ মিনিট। তাও মোটরসাইকেলে। অন্য পরিবহন বাস বা প্রাইভেটকারের অবস্থাটা ভাবুন।

গুলজার হোসেন নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক বলেন, যেন অনেক কসরত করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পার হয়েছি, ভাবলাম হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু মগবাজার ফ্লাইওভার উঠে মালিবাগ নামতে পারছিলাম না যানজটে।

ডিএমপির ট্র্যাফিক তেজগাঁও বিভাগের শেরে বাংলা নগর এলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার তারেক সেকান্দার বলেন, আজ তুলনামূলক চিত্র ভালো। উড়োজাহাজ সিনগাল এলাকার মেট্রোরেলের স্টেশনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। আগারগাঁও থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনগুলো ওখানে এসে চাপে পড়ছে। তাছাড়া বিজয় সরণির সিগন্যালের চাপ তো থাকেই। তবে আগারগাঁও থেকে নতুন বাইপাস সড়ক-জাহাঙ্গার গেট ক্লিয়ার। কোনও চাপ নেই।
ডিএমপির ট্র্যাফিক তেজগাঁওয়ে তেজগাঁও এলাকার সহকারী পুলিশ কমিশনার স্নেহাশিষ বলেন, সোমবার (২৭ মার্চ) বেশ ঝামেলাই ছিল। আজ সে তুলনায় বেশ ভাল। গাড়ি বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখছি না। সিগন্যাল মেইনটেইন করতে যতোটুকু লাগে। হাতিরঝিল থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত সড়কও আগের তুলনায় বেটার।

ডিএমপির ট্রাফিক গুলশানের মহাখালীর সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হোসেন বলেন, এ এলাকার স্কুলকলেজ সব বন্ধ থাকায় চাপ কমেছে। কিন্তু মহাখালী গাউসুল আজম মসজিদের ওখানে রাস্তা কাটা ছিল। যে কারণে কাল বেশ তালগোল পাকিয়েছিল। আজ সেটা ক্লিয়ার। আমরা সিটি কর্পোরেশনকে বলে ওটা ঠিক করে নিয়েছি। তবে লাভ রোডে চাপ আছে।

ডিএমপির ট্রাফিকের গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ইমরান হোসেন বলেন, প্রগতি সরণি এলাকায় চাপ আছে। এই চাপ অফিসগামী যাত্রী, পরিবহনের। এটা থাকবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এরপর আবার শুরু হবে তিনটা থেকে। ইফতারের পূর্ব পর্যন্ত ব্যাপক চাপ তৈরি হয়।