গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সদ্য উদ্বোধন হওয়া মওলানা ভাসানী সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বৈদ্যুতিক কেবল চুরির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সেতুর সিকিউরিটি ইনচার্জ নুরে আলম বাদী হয়ে শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে সুন্দরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার টাকার কেবল চুরির উল্লেখ আছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সেতুর দক্ষিণ পাশের সংযোগ সড়কের উভয় পাশে থাকা ৮টি ল্যাম্পপোস্টের প্রায় ৩১০ মিটার কেবল মাটি খুঁড়ে কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গত ১৩ জুন পরীক্ষামূলকভাবে সব লাইট জ্বালানো হলেও পরে আর আলো জ্বলেনি। উদ্বোধনের রাতেও লাইট জ্বলতে ব্যর্থ হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে চায়না সাসেক প্রকল্পের কর্মীরা মাটি খুঁড়ে কেবল কাটা ও চুরির ঘটনা শনাক্ত করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, সিকিউরিটি ইনচার্জ নুরে আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। চুরি যাওয়া কেবল উদ্ধারে অভিযান চলছে এবং চক্র শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যানজট নিরসন ও সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারেও পুলিশ কাজ করছে।
এলজিইডি গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, চুরির ঘটনায় মামলা হয়েছে। দ্রুত নতুন কেবল সংযোগ করে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদার ও স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুর হরিপুর পয়েন্ট থেকে মাটি খুঁড়ে কেবল কেটে নিয়ে গেছে চোরচক্র। এর ফলে উদ্বোধনের দিন থেকেই সেতুতে আলো না থাকায় হাজারো মানুষ চরম বিড়ম্বনায় পড়েন। অন্ধকারে ডুবে যাওয়া সেতু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকে। স্থানীয়রা এ ঘটনায় এলজিইডির গাফিলতি ও অবহেলাকেই দায়ী করছেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সেতুটি উদ্বোধন করেন। ৯২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের মওলানা ভাসানী সেতুটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশ সরকার, সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওফিড) অর্থায়নে এলজিইডির বাস্তবায়নে নির্মিত এই সেতুতে রয়েছে মোট ৩১টি স্প্যান। প্রকল্পে সংযোগ সড়ক ও নদীশাসনসহ প্রায় ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।