নিজস্ব প্রতিবেদক :
উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে রির্টানিং অফিসারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল।
মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে। আগে কখনও একই জেলায় ধাপ ভিত্তিক নির্বাচন হয়নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচনের ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয় সে ব্যাপারে কমিশনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সিইসি বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের দলীয় সিদ্ধান্ত না মানার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো দায় নেই। এর পুরোটাই রাজনৈতিক নৈতিকতার বিষয়।
তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন মোটেই নিয়ম রক্ষার ভোট না। নির্বাচন অনিবার্যভাবে প্রয়োজন। কোনো একটা দেশের শাসনব্যবস্থাকে চালু রাখতে হলে নির্বাচন প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে কে এলো, কে এলো না এটা নির্বাচন কমিশনের দেখার বিষয় না। নির্বাচনের কমিশনের কাজ হলো নির্বাচন আয়োজন করা।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, শাসনব্যবস্থা চালু রাখতে গেলে নির্বাচন চালাতে হবে। কে কীভাবে নির্বাচন দেখবে তা আমাদের বিষয় না। নির্বাচন আয়োজন করা কমিশনের কাজ। কে কোন দল থেকে দাঁড়ালো সেটি তাদের বিষয় না।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি পদে ৪ জন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, সে কথা বলা যাবে না। কমিশনের দায়িত্ব প্রার্থী আছে কিনা, সুষ্ঠুভাবে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হচ্ছে কিনা সেটি দেখা। দলীয় বিষয়গুলো দেখা আমাদের দায়িত্ব না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের অংশগ্রহণের কারণে কমিশন বেকায়দায় নেই। প্রথম দফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে, মেনে নেয়া হবে না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, প্রভাব বিস্তার রোধে কাজ করছে কমিশন। কেন্দ্রীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন মনিটর করা হবে। প্রভাব বিস্তারের সমস্যাটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রথম দফায় আগামীকাল বুধবার (৮ মে) ১৪০টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন উপলক্ষে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে মেনে নেয়া হবে না। প্রভাব বিস্তার রোধে কাজ করছে কমিশন। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, সেই বার্তা দেয়া হয়েছে।
সিইসি বলেন, প্রার্থী-সমথর্ক সবাই ভোটের দিন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করবেন সেটাই প্রত্যাশা, পাশাপাশি নজরদারি করবে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও গণমাধ্যম। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেটাই চায় কমিশন।
সিইসি বলেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে সেটাই বড় কথা। কোনো দল এলো কি এলো না, সেটা বড় কথা নয়। জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে এ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয় সে ব্যাপারে কমিশন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ভোটে কেউ যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে ব্যাপারে ইসির অবস্থান স্পষ্ট। প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা। ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ইসি কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা থেকে ভোটের মাঠে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশনা রয়েছে কমিশনের।
তিনি বলেন, ১৪০ উপজেলায় ভোট হবে। ২২ উপজেলায় ইভিএমে ভোট হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭-১৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন। পার্বত্য এলাকায় ১৯-২১ জন থাকবেন। আশা করি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সহজ হবে। যারা প্রার্থী ও তাদের কর্মী উশৃঙ্খল আচরণ করে তা দূরহ হয়ে পড়ে। টোটাল ভোট স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন উৎসাহ উদ্দীপনায় হয়। জাতীয় নির্বাচন থেকে স্থানীয় নির্বাচন বেশি জমজমাট হবে।