Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করাই বিএনপি লক্ষ্য : তারেক রহমান

যশোর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির মূল লক্ষ্য ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করা বলে মন্তব্য করেছেন দলটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যশোর ঈদগাহ ময়দানে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, গত ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিএনপিসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দলের নেতাকর্মীদের খুন, গুম ও লুটতরাজ করে। তখন নানা ধরনের নির্যাতনের মুখে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল রাজপথে থেকে লড়াই করেছে। এখন যারা বড় বড় কথা বলছে তারা তখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে ছিল না।

তিনি বলেন, বিএনপির মূল লক্ষ্য ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করা। কৃষকের উৎপাদন, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করা। জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব করবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির কোনো কোনো নেতাকর্মী হয়ত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। আমরা জানার সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণ করেছি।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের সমর্থনে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে মাতৃভূমিকে পুনর্গঠন, রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামত করাই হবে বিএনপির প্রধান কাজ। আর এখনকার প্রধান কাজ হলো দল পুনর্গঠন করা, শক্তিশালী করা। ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া।

তারেক রহমান আরো বলেন, জনগণ সমর্থন করে না— বিএনপি এমন কাজ না করার নীতিতে চলে। তা সত্ত্বেও লাখ লাখ নেতাকর্মীর মধ্যে কিছু লোক হয়তো এমন কিছু কাজ করছে, যা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য না। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিএনপিই একমাত্র দল, যারা এই অন্যায়কারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। যে কাজ সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দয়া করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। অন্যায়ের ব্যাপারে বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে।

তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ হলো একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেওয়া। আমরা প্রত্যাশা করি, যত দ্রুত সম্ভব তারা সেটা করবেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, স্বৈরাচারী সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এখন আমরা সংস্কার প্রস্তাবের নামে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভিন্ন কথা বলতে শুনছি। অবশ্যই যে যার মত প্রকাশ করতে পারেন। এখন ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা শুনছি। অনেকে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের কথা বলছেন। এগুলো হয়তো প্রয়োজন। কিন্তু যখন স্বৈরাচারী শাসক দীর্ঘসময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতা জোর করে দখল করে ছিল, তখন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিএনপি ৩১ দফা প্রস্তাব এনেছে। তখন কিন্তু এসব সুন্দর সুন্দর কথা আমরা শুনিনি।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা। এই সম্মেলনে আগত প্রায় সব কাউন্সিলরের নামে বহু মিথ্যা মামলা রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিএনপি ও আরো কিছু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে লড়াই চালিয়ে গেছে। অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। বিএনপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করত, স্বৈরাচারের পতন হবে, তারা বিতাড়িত হবে।

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধন করেন বিএনপি চেরায়পারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমন উল্লাহ আমান।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী টি এস আইয়ূব, আবুল হোসেন আজাদ, সাবিরা নাজমুল মুন্নী, কেশবপুর পৌর বিএনপি সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, যশোর নগর সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু এবং সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বিমানের ফ্লাইটে ফের ত্রুটি, শারজাহ না গিয়ে ফিরে এলো ঢাকায়

ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করাই বিএনপি লক্ষ্য : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৪:০৫:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যশোর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির মূল লক্ষ্য ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করা বলে মন্তব্য করেছেন দলটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যশোর ঈদগাহ ময়দানে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, গত ১৬ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিএনপিসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দলের নেতাকর্মীদের খুন, গুম ও লুটতরাজ করে। তখন নানা ধরনের নির্যাতনের মুখে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল রাজপথে থেকে লড়াই করেছে। এখন যারা বড় বড় কথা বলছে তারা তখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে ছিল না।

তিনি বলেন, বিএনপির মূল লক্ষ্য ভেঙে পড়া রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করা। কৃষকের উৎপাদন, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করা। জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব করবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপির কোনো কোনো নেতাকর্মী হয়ত অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। আমরা জানার সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণ করেছি।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের সমর্থনে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে মাতৃভূমিকে পুনর্গঠন, রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামত করাই হবে বিএনপির প্রধান কাজ। আর এখনকার প্রধান কাজ হলো দল পুনর্গঠন করা, শক্তিশালী করা। ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া।

তারেক রহমান আরো বলেন, জনগণ সমর্থন করে না— বিএনপি এমন কাজ না করার নীতিতে চলে। তা সত্ত্বেও লাখ লাখ নেতাকর্মীর মধ্যে কিছু লোক হয়তো এমন কিছু কাজ করছে, যা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য না। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিএনপিই একমাত্র দল, যারা এই অন্যায়কারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। যে কাজ সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দয়া করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। অন্যায়ের ব্যাপারে বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে।

তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ হলো একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেওয়া। আমরা প্রত্যাশা করি, যত দ্রুত সম্ভব তারা সেটা করবেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, স্বৈরাচারী সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এখন আমরা সংস্কার প্রস্তাবের নামে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভিন্ন কথা বলতে শুনছি। অবশ্যই যে যার মত প্রকাশ করতে পারেন। এখন ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা শুনছি। অনেকে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের কথা বলছেন। এগুলো হয়তো প্রয়োজন। কিন্তু যখন স্বৈরাচারী শাসক দীর্ঘসময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতা জোর করে দখল করে ছিল, তখন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিএনপি ৩১ দফা প্রস্তাব এনেছে। তখন কিন্তু এসব সুন্দর সুন্দর কথা আমরা শুনিনি।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা। এই সম্মেলনে আগত প্রায় সব কাউন্সিলরের নামে বহু মিথ্যা মামলা রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিএনপি ও আরো কিছু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে লড়াই চালিয়ে গেছে। অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। বিএনপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করত, স্বৈরাচারের পতন হবে, তারা বিতাড়িত হবে।

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধন করেন বিএনপি চেরায়পারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমন উল্লাহ আমান।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী টি এস আইয়ূব, আবুল হোসেন আজাদ, সাবিরা নাজমুল মুন্নী, কেশবপুর পৌর বিএনপি সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, যশোর নগর সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু এবং সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন।