নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, তিন বোর্ডে দশ দিন দেরিতে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হলেও একসঙ্গে ফল প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তিন বোর্ডে দেরিতে পরীক্ষা শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা চেষ্টা করবো ৬০ দিনের মধ্যে একসঙ্গে রেজাল্ট প্রকাশ করতে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে ডেঙ্গু মহামারি বাড়লেও ডেঙ্গু আক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। সব পরীক্ষা কেন্দ্রেই ডেঙ্গু আক্রান্ত পরীক্ষার্থীর জন্য চিকিৎসাসহ বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
এইচএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণে পরীক্ষাদের আসতে ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সময়টা সমন্বয় করলে ভালো হতো। কিন্তু দুইবেলা পরীক্ষা থাকলে পরীক্ষার সময় পরিবর্তনে ঝামেলা হয়ে যায়। এসএসসি পরীক্ষায় সময় পরিবর্তন করে দেখেছি৷ তখন এ সমস্যাটা দেখা গেছে।
বিভিন্ন কেন্দ্রে অবব্যস্থাপনা ও কেন্দ্রের সামনে সিট প্লান না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সাধারণত দেখে থাকি কেন্দ্রের গেটেই অভিবাকরা ভিড় জমান, তারা পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে সঙ্গে সঙ্গে যদি একটু দূরে থাকেন তাহলে এ সমস্যা হতো না। দেখা যায়, একটু পরে যেসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন তাদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে খুব কষ্ট হয়। আমি অভিবাবকদের কাছে অনুরোধ করবো আপনারা আপনার সন্তানকে কেন্দ্রে নামিয়ে একটু দূরে চলে যান। সেখানে বসে দোয়া করতে থাকুন।
ডা. দীপু মনি বলেন, দেশের কোনো পাবলিক পরীক্ষায় গত পাঁচ বছরে কোনো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। যা ছড়িয়েছে সেগুলো সবই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এগুলোর সবই গুজব।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে আমরা প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থেকেছি। এজন্য কোনো প্রশ্নফাঁসের ঘটনাও ঘটেনি। আশা করি এবারের এইচএসসি পরীক্ষাতেও এ ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না। যদি কেউ গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থেকে ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে এবং এইচএসসি এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত দুই-তিন বছর আমাদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার একটু এলোমেলো হয়েছে। আগামী বছর থেকে এটা ঠিক হয়ে যাবে আশা করি। আগামী বছর আমরা চেষ্টা করবো এইচএসসি পরীক্ষায় এপ্রিলে এবং এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে নেওয়ার। সে অনুযায়ী ক্লাসে পাঠদান করানো হবে।
শুরু হয়েছে দেশের ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা। প্রথম দিনে বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা চলছে। এ পরীক্ষা শেষ হবে দুপুর ১টায়। ৮টি বোর্ডের ১ হাজার ৩৮৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী।
এ বছর একটি বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণসময়ে পরীক্ষা হবে। শুধুমাত্র আইসিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী- এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা সচিব সোলেমান খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমদ, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকারসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।