Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভালো আছেন বেগম খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন।

বুধবার (১৪ জুন) তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আলহামদুলিল্লাহ ‘ভালো আছেন’। তার জ্বরও কমেছে। ইতোমধ্যে তার রক্ত, এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রামসহ কিছু রুটিন পরীক্ষা করানো হয়েছে। এসব পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।

অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ম্যাডাম মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আছেন। বোর্ডের সদস্যরা সার্বক্ষণিকভাবে উনার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় যেসব চিকিৎসা দরকার হচ্ছে, সেটা উনারা ব্যবস্থা করছেন টাইম-টু-টাইম উনার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে। উনার শারীরিক অবস্থা ভর্তি যেদিন হয়েছেন, ওই দিনের মতো এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে।

তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে সভায় লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান ও দেশের বাইরের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও পার্টিসিপেট করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমানের সহধর্মিণী শর্মিলা রহমান সিঁথি সার্বক্ষণিক ম্যাডামের স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখছেন বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।

চিকিৎসকরা জানান, তার অবস্থা স্থিতিশীল। মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাতে অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন এবং তার বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে আবারও বৈঠকে বসবে মেডিকেল বোর্ড।

চিকিৎসকরা আরও জানান, গতকাল রাতে মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্য মিটিং করে বিএনপি চেয়ারপারসনের রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্তমানে যে চিকিৎসা চলছে, সেটা চালাবে এবং কিছু নতুন ওষুধ যোগ করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, লিভারের রোগ, হৃদরোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গত সোমবার রাতে গুলশানের বাসা ফিরোজায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দুই মাস আগে গত ২৯ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। পাঁচ দিন পর তিনি মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বাসায় ফেরেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার অসুস্থতা নিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য। ওই বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন। প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে পরিবারের আবেদনে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

ভালো আছেন বেগম খালেদা জিয়া

প্রকাশের সময় : ০১:৪৪:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে ভালো আছেন।

বুধবার (১৪ জুন) তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আলহামদুলিল্লাহ ‘ভালো আছেন’। তার জ্বরও কমেছে। ইতোমধ্যে তার রক্ত, এক্স-রে, ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রামসহ কিছু রুটিন পরীক্ষা করানো হয়েছে। এসব পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।

অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ম্যাডাম মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আছেন। বোর্ডের সদস্যরা সার্বক্ষণিকভাবে উনার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় যেসব চিকিৎসা দরকার হচ্ছে, সেটা উনারা ব্যবস্থা করছেন টাইম-টু-টাইম উনার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে। উনার শারীরিক অবস্থা ভর্তি যেদিন হয়েছেন, ওই দিনের মতো এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে।

তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকে সভায় লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান ও দেশের বাইরের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও পার্টিসিপেট করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমানের সহধর্মিণী শর্মিলা রহমান সিঁথি সার্বক্ষণিক ম্যাডামের স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখছেন বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।

চিকিৎসকরা জানান, তার অবস্থা স্থিতিশীল। মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাতে অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন এবং তার বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে আবারও বৈঠকে বসবে মেডিকেল বোর্ড।

চিকিৎসকরা আরও জানান, গতকাল রাতে মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্য মিটিং করে বিএনপি চেয়ারপারসনের রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্তমানে যে চিকিৎসা চলছে, সেটা চালাবে এবং কিছু নতুন ওষুধ যোগ করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, লিভারের রোগ, হৃদরোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গত সোমবার রাতে গুলশানের বাসা ফিরোজায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দুই মাস আগে গত ২৯ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। পাঁচ দিন পর তিনি মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বাসায় ফেরেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কয়েকবার অসুস্থতা নিয়ে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। গত বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য। ওই বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন। প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে পরিবারের আবেদনে।