Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের বিহারে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের বিহারে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনাকবলিত এই ট্রেনটি দিল্লি থেকে আসামে যাচ্ছিল।

স্থানীয় সময় বুধবার (১১ অক্টোবর) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে বিহারের বক্সার জেলার রঘুনাথপুর স্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত হয় ৬টি বগি। ট্রেনটি দিল্লির আনন্দ বিহার টার্মিনাল থেকে অসমের কামাখ্যার দিকে যাচ্ছিল।

শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বগিগুলো লাইনের ওপরে উল্টে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ট্রেন দুর্ঘটনার পরেই ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইন, ইলেকট্রিক পোল, সিগনাল পোস্ট।

দানাপুরের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জয়ন্তকুমার চৌধুরী জানান, দুর্ঘটনায় বৈদ্যুতিক খুঁটি, সিগন্যাল পোস্ট এবং আপ-ডাউন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি-হাওড়া প্রধান লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ এবং পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

বক্সারের জেলাশাসক অংশুল আগরওয়াল চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাইনচ্যুত বগিগুলোর মধ্যে কোন যাত্রী আটকে পড়েছে কিনা তার সন্ধান চলছে।

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, উল্টে যাওয়া বগিগুলোর মধ্যে একটি জেনারেল কোচ এবং বাকি গুলো এসি কোচ।

দুর্ঘটনার পরই দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং বক্সার ও ভোজপুর জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। দ্রুততার সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ চালানোর পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তেজস্বী।

ঘটনা স্থলে পৌঁছেছে রেল পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকরা।

পাটনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, নালন্দা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস এবং ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস- পার্টনার এই তিনটি হাসপাতালকে জরুরী ভিত্তিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দপ্তর থেকেও টুইট করে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির ওপর সরকার নজর রাখছে। বক্সার জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে বলেন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আহত ব্যক্তিদের পাটনার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বক্সার এবং ভোজপুরের জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে গতি আনতে বলা হয়েছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কার্যালয় বলেছে, আমরা রঘুনাথপুরে লাইনচ্যুতের ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছি। বক্সারের জেলা কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে একটি হলো ভারতে এবং দেশটিতে বিগত বছরগুলোতে বেশ কয়েকটি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮১ সালে, যখন একটি ট্রেন বিহার রাজ্যে একটি সেতু পার হওয়ার সময় লাইনচ্যুত হয় এবং একটি নদীতে পড়ে গেলে এতে ৮শ’ জন মারা যায়।

এদিকে, জুন মাসে ওড়িশা রাজ্যে একটি ট্রিপল-ট্রেন সংঘর্ষে প্রায় ৩শ’ জন প্রাণ হারিয়েছিল। আগস্টে দক্ষিণ ভারতে এক যাত্রী চা বানানোর চেষ্টা করার সময় পার্ক করা একটি কোচে আগুন লেগে অন্তত ৯জন নিহত হন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

ভারতের বিহারে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৪

প্রকাশের সময় : ০১:২৮:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভারতের বিহারে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনাকবলিত এই ট্রেনটি দিল্লি থেকে আসামে যাচ্ছিল।

স্থানীয় সময় বুধবার (১১ অক্টোবর) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে বিহারের বক্সার জেলার রঘুনাথপুর স্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত হয় ৬টি বগি। ট্রেনটি দিল্লির আনন্দ বিহার টার্মিনাল থেকে অসমের কামাখ্যার দিকে যাচ্ছিল।

শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বগিগুলো লাইনের ওপরে উল্টে ৪ জনের মৃত্যু হয়। ট্রেন দুর্ঘটনার পরেই ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইন, ইলেকট্রিক পোল, সিগনাল পোস্ট।

দানাপুরের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার জয়ন্তকুমার চৌধুরী জানান, দুর্ঘটনায় বৈদ্যুতিক খুঁটি, সিগন্যাল পোস্ট এবং আপ-ডাউন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি-হাওড়া প্রধান লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ এবং পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

বক্সারের জেলাশাসক অংশুল আগরওয়াল চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাইনচ্যুত বগিগুলোর মধ্যে কোন যাত্রী আটকে পড়েছে কিনা তার সন্ধান চলছে।

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, উল্টে যাওয়া বগিগুলোর মধ্যে একটি জেনারেল কোচ এবং বাকি গুলো এসি কোচ।

দুর্ঘটনার পরই দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং বক্সার ও ভোজপুর জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। দ্রুততার সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ চালানোর পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তেজস্বী।

ঘটনা স্থলে পৌঁছেছে রেল পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকরা।

পাটনা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, নালন্দা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস এবং ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস- পার্টনার এই তিনটি হাসপাতালকে জরুরী ভিত্তিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার দপ্তর থেকেও টুইট করে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির ওপর সরকার নজর রাখছে। বক্সার জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে বলেন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আহত ব্যক্তিদের পাটনার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বক্সার এবং ভোজপুরের জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে গতি আনতে বলা হয়েছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কার্যালয় বলেছে, আমরা রঘুনাথপুরে লাইনচ্যুতের ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছি। বক্সারের জেলা কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

বিশ্বের বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে একটি হলো ভারতে এবং দেশটিতে বিগত বছরগুলোতে বেশ কয়েকটি রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটে ১৯৮১ সালে, যখন একটি ট্রেন বিহার রাজ্যে একটি সেতু পার হওয়ার সময় লাইনচ্যুত হয় এবং একটি নদীতে পড়ে গেলে এতে ৮শ’ জন মারা যায়।

এদিকে, জুন মাসে ওড়িশা রাজ্যে একটি ট্রিপল-ট্রেন সংঘর্ষে প্রায় ৩শ’ জন প্রাণ হারিয়েছিল। আগস্টে দক্ষিণ ভারতে এক যাত্রী চা বানানোর চেষ্টা করার সময় পার্ক করা একটি কোচে আগুন লেগে অন্তত ৯জন নিহত হন।